ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে আশ্রয়প্রার্থীদের যুক্তরাজ্যে আসার রাশ টেনে ধরতে কনজারভেটিভ সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সাগরে জেটস্কি দিয়ে পাহারা দেয়া কিংবা রুয়ান্ডাস্কিম কোন কিছুই আশ্রয়প্রার্থীদের আটকাতে পারছে না।
যুক্তরাজ্যের সাবেক অর্থমন্ত্রী সাজিদ জাভিদ ইংলিশ চ্যানেলে টহল দেওয়ার জন্য দুটি অতিরিক্ত বর্ডার ফোর্স টহলকারী টিম নিযুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তিনি অবৈধভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশকারীদের ঠেকাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাবেন বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু কোন কিছুই অবৈধ আশ্রয়প্রার্থীদের ঠেকাতে সফল হয় নাই।
যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স দুই দেশই আশ্রয়প্রার্থীদের আটকাতে একযোগে কাজ করতে ইচ্ছুক। উভয় দেশ নিজেদের অংশের চ্যানেলে অতিরিক্ত বর্ডার ফোর্স টহলকারী টিম নিযুক্ত করতে সম্মত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব প্রীতি প্যাটেল ফ্রান্সের সাথে আলোচনা করে আশ্রয়প্রার্থীদের ঠেকাতে একটি যৌথ ফোর্স গঠন করার আলোচনা করেছিলেন। ব্রেক্সিট ঘোষণার আগে ফ্রান্স ও ইংল্যান্ড যৌথভাবে সীমান্তে £৭০৫ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা ঘোষণা করা হয়েছিল যা ব্রেক্সিটের পরে অনেকটা থমকে যায়।
স্থানীয় সাংসদ ড্যামিয়ান কলিন্স বলেন, বর্ডার বা চ্যানেল ক্রশ করে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের কেন্টের ফোকস্টোনের কাছে প্রাক্তন ব্যারাকগুলিতে রাখা হবে। তাছাড়া তিনি জানান হোম অফিস চ্যানেল টহল দেয়ার জন্য ইতিমধ্যে দুটি জেট স্কি কেনার পরিকল্পনা করেছে। যদিও প্রাক্তন বর্ডার ফোর্সের প্রধান টনি স্মিথ এই জাতীয় পরিকল্পনাগুলিকে “অত্যন্ত বিপজ্জনক” বলে আখ্যায়িত করেন।
বৃটিশ গণমাধ্যমের এক প্রতিবেদনে জানা যায় যুক্তরাজ্য তৃতীয় কোন নিরপেক্ষ দেশে আশ্রয়প্রার্থীদের রাখার যে পরিকল্পনা করেছিল সেখানে মালদোভা, মরক্কো ও পাপুয়ানিউগিনির কথা ভাবা হয়েছিল। যদিও পরে সেটা পরিবর্তন হয়ে রুয়ান্ডার নাম সামনে আসে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এই সিদ্ধান্ত নিয়েও টিকে থাকতে পারেন নাই। রুয়ান্ডা যাওয়া নিয়ে রাজনৈতিক বিরোধিতার সম্মুখীন হোন তিনি। পরবর্তীতে তার প্রধানমন্ত্রীত্ব চলে যায়। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন চাপে আছেন। তিনি ইতিমধ্যে অবৈধভাবে কেউ চ্যানেল দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করলে সে এসাইলাম আবেদন করতে পারবে না বলেও নতুন আইনের কথা ভাবছেন।
সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব প্রীতি প্যাটেল বলেন যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্স একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। যাতে ফ্রান্স উপকূলরেখায় ফরাসী পুলিশ টহল দ্বিগুণ করতে সম্মত হয়। তিনি বলেন বৈধভাবে দেশে প্রবেশ করে যে সুবিধা একজন লোক পায় একই সুবিধা একজন অবৈধভাবে প্রবেশ করা লোক পাওয়া উচিত নয়।
প্রীতি প্যাটেল বলেন সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু প্রতিষ্ঠান এই চ্যানেলের প্রবেশের বিভিন্ন দিক নিয়ে ছবি,ভিডিও বা ফুটেজ দিয়ে আশ্রয়প্রার্থীদের অনেক সময় অবৈধভাবে সহযোগিতা করে আসছে। তারা যদি এই চ্যানেলকে আশ্রয়কারীদের জন্য গ্ল্যামারাইজ করে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হতে সেই ক্লিপগুলি অপসারণ না করে তবে তারা ভারী জরিমানার মুখোমুখি হবে। যদিও কোনও জরিমানা এখনও আদায় হয়েছে বলে খবর পাওয়া যায় নাই।
এদিকে, ফ্রান্স সতর্ক করে দিয়েছে যে অবৈধ আশ্রয়প্রার্থী ইস্যুকে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদেরা যেনো “পাঞ্চব্যাগ” হিসেবে ব্যবহার না করে। তবে ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্য ১০০% বর্ডার ক্রসিং প্রতিরোধ” করার জন্য সর্বোচ্চ কৌশল প্রয়োগ করতে সম্মত হয়েছে।
এম.কে
০৮ মার্চ ২০২৩