অভিবাসীদের যুক্তরাজ্যে আসা ঠেকাতে তুরস্কের সীমান্তরক্ষা বাহিনীকে তিন মিলিয়ন পাউন্ড বা প্রায় ৪০ কোটি টাকারও বেশি দিয়েছে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ব্রিটিশ গণমাধ্যমের এক অনুসন্ধানে জানা গেছে এ তথ্য।
এর আগেও তুর্কি সীমান্তরক্ষীদের অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে যুক্তরাজ্য। কিন্তু গত কয়েক বছরে এই বরাদ্দ কয়েক গুণ বেড়েছে। তথ্য অধিকারের আওতায় জমা দেয়া আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত কয়েক বছরের বরাদ্দের পরিসংখ্যান এসেছে সংবাদমাধ্যমের কাছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ২০১৯ সালে তুর্কি পুলিশ এবং কোস্ট গার্ডকে নৌ সীমান্তে নিরাপত্তা বিষয়ক প্রশিক্ষণের জন্য মাত্র ১৪ হাজার পাউন্ড দিয়েছিল যুক্তরাজ্য। ২০২১-২২ সালে প্রশিক্ষণ এবং যন্ত্রপাতি কেনার জন্য বরাদ্দ বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় সাড়ে চার লাখ পাউন্ডে।
২০২৩ সালে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ আরো বেড়েছে। প্রশিক্ষণ এবং অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো এবং সীমান্তরক্ষীদের প্রশিক্ষণের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে প্রায় ৩০ লাখ পাউন্ড বা ৪০ কোটি টাকা।
খবরে জানা যায়, অফিশিয়াল ডেভেলপমেন্ট বাজেট- ওডিএ এর আওতায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক অপারেশন বিভাগের মাধ্যমে এই বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এই বরাদ্দের পাশাপাশি যুক্তরাজ্য তুর্কি সীমান্তরক্ষী, পুলিশ এবং কোস্টগার্ডকে প্রশিক্ষণ এবং যন্ত্রপাতিও সরবরাহ করেছে। ২০২২ সালের জুনে ইরান সীমান্তে অবস্থিত তুর্কি পুলিশ বিভাগের কাছে নয়টি যান তুলে দেন তুরস্কে যুক্তরাজ্যের ডেপুটি হাইকমিশনার।
সংবাদমাধ্যমকে ইরান সীমান্ত থেকে গত বছর সোয়া দুই লাখেরও বেশি অভিবাসীকে ফেরত পাঠানোর তথ্য জানিয়েছে তুরস্ক। ইরান সীমান্ত পাড়ি দিয়ে তুরস্কে ঢোকার চেষ্টা করার সময় অনেক আফগান অভিবাসীর ওপর নির্যাতন ও সহিংসতার ভিডিও ফুটেজও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের কাছে রয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে সংবাদে।
সংবাদমাধ্যমের দাবি, অভিবাসীদের আবার ইরানে ফেরত পাঠাতে তুর্কি বাহিনী গুলি চালানো, রাইফেল দিয়ে আঘাত করা, অভিবাসীদের অর্থ লুট করার মতো ঘটনাও ঘটিয়েছে।
মানবাধিকার এবং শরণার্থী বিষয়ে কাজ করা তুর্কি আইনজীবী মাহমুত কাচান জানিয়েছেন, বছর দুয়েক আগে থেকে ইরান সীমান্তে মৃত্যু এবং পুশব্যাকের ঘটনা অনেক বেড়ে গেছে। তিনি বলেন, ‘‘ইউএনএইচসিআর (জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা) কখনই সীমান্তের এসব ঘটনা নিয়ে তুরস্ককে কিছু বলে না। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য যেসব দেশ তুরস্ককে সীমান্তে নিরাপত্তার জন্য অর্থ দেয়, তারাও এইসব মৃত্যুর জন্য দায়ী।’’
এম.কে
১২ জুন ২০২৩