যুক্তরাজ্যের হাইকোর্ট হোম অফিসের বিরুদ্ধে এক রুল জারি করেছে। হাইকোর্ট রুলে বলে,হোম অফিস আইন লংঘন করেছে অভিবাসীদের ভিসা এক্সটেনশন আবেদনে নথি প্রদান না করে। হোম অফিস নতুন উইন্ড্রুশ-স্টাইলের কেলেঙ্কারীতে ভিসা এক্সটেনশনের জন্য আবেদনকারীদের ডিজিটাল প্রমাণ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়।
হাইকোর্টের রায়ে জানা যায়, হোম অফিস একটি নতুন উইন্ড্রুশ-স্টাইলের কেলেঙ্কারির মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। যেখানে স্বরাষ্ট্রসচিবকে প্রশ্নের মুখে ফেলা হয়েছে কারণ হাজার হাজার অভিবাসীদের নথি সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয় হোম অফিস। যার ফলে অভিবাসীরা ভিসা এক্সটেনশনের আবেদন করার পরও বৈধভাবে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন এমন কোনো প্রমাণ তাদের দেয়া হয় নাই হোম অফিস কর্তৃক।
দাতব্য সংস্থা রামফেল হোম অফিসের বিরুদ্ধে অভিযোগটি উত্থাপন করে। তারা জানায়, ২০০০ সালে ঘানা থেকে ব্রিটেনে আসা ১৭ ও ১১ বছর বয়সী দুই সন্তানের মা স্বাস্থ্যকর্মী মা সিসিলিয়া অ্যাডজেইয়ের জন্য দাতব্য সংস্থা রামফেল হোম অফিসের সাথে আইনী চ্যালেঞ্জে যেতে বাধ্য হয়।
দাতব্য সংস্থা জানিয়েছে, কয়েক হাজার অভিবাসী একইভাবে হোম অফিস কর্তৃক ঝামেলার সম্মুখীন হয়। থ্রি-সি লিভ একটি বৈধ অবস্থাকে বোঝায় ইমিগ্রেশন আইনে যা অত্যন্ত জরুরি ভিসা বাড়ানোর আবেদন করার জন্য। কিন্তু যখন হোম অফিস কোনো ধরনের প্রমাণ অভিবাসীদের না দেয় পরবর্তীতে সেই সকল অভিবাসীরা অবৈধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়ে যায়। অভিবাসীদের ভিসা আবেদনের পর কোনো ধরনের রিসিট না দেওয়ায় তারা ইমিগ্রেশন স্থিতির জন্য কঠিন অবস্থার মুখে পতিত হন।
তথ্যমতে জানা যায়, কারও কারও চাকুরি ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে হোম অফিসের খামখেয়ালি আচরণে। তাছাড়া উচ্চতর শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা কিংবা বাড়ি ভাড়া নেওয়ার অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে থ্রি-সি লিভ অতীব জরুরি একটি প্রমাণ। যা না থাকলে অভিবাসীরা পরবর্তীতে সমস্যার মুখোমুখি হওয়া লাগবে বলে আইনে বলা আছে।
একজন ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞ মতামত জানাতে গিয়ে বলেন, এই কেইসটি উইন্ডরুশ প্রজন্মের যে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিল ঠিক তার প্রতিধ্বনি করছে। যারা ভিসা আবেদনের পর প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ তারা কোনো ধরনের মৌলিক অধিকার ভোগ তো করতেই পারবে না। বরং তারা অবৈধ অভিবাসী বলে চিহ্নিত হবে।
এই মামলার বিচারক, মিঃ জাস্টিস কাভানাগ শুক্রবার রায়ে বলেন, ” মামলার কাগজাদি স্পষ্টভাবে প্রমাণ করেছে যে থ্রি-সি লিভ দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় অভিবাসীরা স্পষ্টভাবে তাদের অধিকার আদায় করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাদের জীবন সংগ্রাম চালাতে কঠিন অবস্থায় পড়তে হয়েছে।”
বিচারক স্বরাষ্ট্রসচিবকে এই অভিবাসীদের কষ্ট এবং ধকল এড়াতে “সোজা পদক্ষেপ” নেওয়ার আহ্বান জানান।
দাতব্য সংস্থা রামফেলের প্রচার বিভাগের প্রধান নিক বেলস বলেন, “ বারবার সরকারের বৈরী পরিবেশের জঞ্জালে ভুক্তভোগী হচ্ছে অভিবাসীরা। যুক্তরাজ্যে আইনত থাকার বিষয়ে প্রত্যেক অভিবাসী সচেতন কিন্তু হোম অফিস ঠিক ততোটুক সচেতন নয়। ধারণা করা গিয়েছিল হোম অফিস উইন্ডরুশ কেলেঙ্কারী থেকে শিক্ষা নিয়েছে কিন্তু আসলে তারা অক্ষম সেটাই প্রমাণ হয়েছে।”
হোম অফিসের সাথে এই বিষয়ে দ্য গার্ডিয়ান কথা বলতে চাইলে তারা উক্ত কেইসের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা প্রকাশ করে বলে জানা যায়।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০৯ জুন ২০২৪