16.4 C
London
May 29, 2025
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

অস্থায়ী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিদেশ সফরঃ জনবিচ্ছিন্নতা নাকি ব্যক্তিগত ব্র‍্যান্ডিং!

বাংলাদেশ জুড়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা, বিক্ষোভ আর অনিশ্চয়তার মধ্যে যখন সাধারণ মানুষ উদ্বিগ্ন, তখন অস্থায়ী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনুসের একের পর এক বিদেশ সফর নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। আগামী বুধবার তিনি চার দিনের সফরে জাপান যাচ্ছেন। এই সফরটি এমন এক সময়ে হচ্ছে, যখন দেশের ভেতরে অস্থিরতা ক্রমেই বাড়ছে এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি দিন দিন আরও ঘোলাটে হয়ে উঠছে।

প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ড. ইউনুস যতবার বিদেশ সফরে গেছেন, তার সংখ্যা নির্বাচিত পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের থেকেও বেশি। এই সময়ে কেবল ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার চেয়ে বেশি বিদেশ সফর করেছেন।

ড. ইউনুসের অধিকাংশ বিদেশ সফরকে ঘিরে বিতর্কের মূল কারণ হলো—সফরের উদ্দেশ্য ও উপযোগিতা নিয়ে প্রশ্ন। তার প্রায় প্রতিটি সফরেই একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য রয়েছে: বিদেশি সম্মেলনে তার ‘Three Zeroes’ ধারণা নিয়ে বক্তব্য, যা রাষ্ট্রায়ত্ত টিভি চ্যানেল বিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। তবে এসব সফরের বাস্তবিক ফলাফল কী—তা এখনো স্পষ্ট নয়।

সম্প্রতি দোহায় তার একটি সফর ছিল যেখানে তিনি একটি ছোটখাটো সম্মেলনে অংশ নেন, যাতে কোনো সরকারপ্রধান উপস্থিত ছিলেন না। এরপর তিনি যান ভ্যাটিকানে, প্রয়াত পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায়, যেখানে দক্ষিণ এশিয়ার কোনো রাষ্ট্রপ্রধান যাননি। এমনকি কম্বোডিয়া ও ভিয়েতনামের মতো দেশ থেকেও কেউ অংশ নেননি।

এবারের জাপান সফরেও সেই পুরনো ধারা অব্যাহত। তিনি অংশ নিচ্ছেন ৩০তম নিক্কেই ফোরামে বক্তৃতা দিতে। এ উপলক্ষে তার প্রেস উইং জানিয়েছে, তিনি ‘বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক’ করবেন। তবে অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, এইসব ‘বৈঠক’ মূলত প্রচারমুখী এবং প্রভাবহীন।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই সফরের দশ দিনের মাথায় তিনি আবার বিদেশ সফরে যাচ্ছেন, এবার একটি পুরস্কার গ্রহণের জন্য। অর্থাৎ পরপর দুটি সফরই ব্যক্তিকেন্দ্রিক এবং একান্তভাবে তার ব্যক্তিগত ভাবমূর্তি নির্মাণে সহায়ক—যার ব্যয় বহন করছে বাংলাদেশ রাষ্ট্র।

এই প্রশ্ন এখন সরাসরি সামনে চলে এসেছে: একজন অস্থায়ী ও অনির্বাচিত সরকারপ্রধান বারবার রাষ্ট্রীয় খরচে বিদেশ সফরে যেতে পারেন কি না? এবং এই পরিস্থিতিতে জনগণের স্বার্থে তার অগ্রাধিকার কী হওয়া উচিত?

বিশ্লেষকদের মতে, রাজনৈতিক সংকটের এই সময়ে সরকারের প্রধানের উচিত হতো ঘরে থেকে সংকট নিরসনে নেতৃত্ব দেওয়া। কিন্তু ড. ইউনুসের আচরণে সেটির প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে না।

সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম ও সাধারণ নাগরিকদের অনেকেই বলছেন—একজন নির্বাচিত সরকার প্রধানের এমন সফর হলে যেভাবে প্রশ্ন তোলা হতো, ঠিক সেভাবেই এখন জবাবদিহি দাবি করা উচিত। কারণ, অস্থায়ী বলেই কারো হাতেই যেন সীমাহীন স্বাধীনতা চলে না যায়।

সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া

এম.কে
২৭ মে ২০২৫

আরো পড়ুন

নতুন আতঙ্কের নাম ‘ই-বর্জ্য’

যুক্তরাজ্যে টিউলিপের হতে পারে ১০ বছরের জেল

নিউজ ডেস্ক

টাকার নতুন নোটে ছবি থাকছে যাদের