ব্রিটিশ খাবারের পরম্পরায় ‘ফিশ অ্যান্ড চিপস’-এর আলাদা ঐতিহ্য রয়েছে। মাছ ও আলুর সহযোগে তৈরি হয় ব্যাপক জনপ্রিয় ফাস্টফুডটি। এতে ব্যবহার করা হয় কড ও হ্যাডক প্রজাতির কম গন্ধ ও সাদা রঙের মাছ। ময়দার ব্যাটারে মাছগুলোকে মাখিয়ে সোনালি রঙে মুচমুচে করে ভেজে নেয়া হয়।
অন্যদিকে মোটা করে কাটা আলু দিয়ে বানানো হয় ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, যাকে চিপস হিসেবে চেনেন ব্রিটিশরা। সঙ্গে সস, শসার আচার ও লেবু দিয়ে খাবারটি পরিবেশন করা হয়। কয়েক বছর আগেও বেশ সস্তায় পাওয়া যেত মুখরোচক খাবারটি। তবে যুক্তরাজ্যের পরিসংখ্যান অফিসের (ওএনএস) তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছরে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে ঐতিহ্যবাহী খাবারটির দাম। চলতি বছরের জুলাইয়ে ফিশ অ্যান্ড চিপসের দাম ছিল গড়ে ১০ পাউন্ড (১৩ ডলার), যা ২০১৯ সালের একই সময়ে ছিল ৬ দশমিক ৫ পাউন্ড। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে খাবারটির দাম প্রায় ৫২ শতাংশ বেড়েছে। পিৎজা, কাবাব, ভারতীয় ও চাইনিজ খাবারের তুলনায় এর দাম সবচেয়ে বেশি বেড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দাম এত বাড়ার পেছনে জ্বালানি ও শ্রম ব্যয়ের বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। খারাপ আবহাওয়ার কারণে আলুর ফলন ভালো হয়নি। যুক্তরাজ্যের পরিবেশ, খাদ্য ও পল্লীবিষয়ক বিভাগের তথ্যমতে, চলতি বছরের মে পর্যন্ত ১২ মাসে অন্যান্য কৃষিপণ্যের মধ্যে আলুর দাম সর্বোচ্চ ৪ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। অন্যদিকে ফিশ অ্যান্ড চিপসের জন্য প্রয়োজনীয় কড মাছ রফতানিতে রাশিয়া বিশ্বে শীর্ষ। কড মাছের এক-তৃতীয়াংশ জোগান আসে রাশিয়া থেকে।
কিন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে দেশটির উপর বেশ কয়েকটি নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। ২০২২ সালে সংঘাত শুরু হওয়ার পর পরই রাশিয়া থেকে আসা সামুদ্রিক খাবারের উপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে যুক্তরাজ্য। অন্যদিকে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা ও রাশিয়ার পাল্টা পদক্ষেপের কারণে জ্বালানি সরবরাহও প্রভাবিত হয়েছে। ফলে খাবারটির দাম ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত ১৯ শতাংশ বেড়ে যায়। বর্তমানে তা রীতিমতো আকাশ ছুঁয়েছে।
সূত্রঃ আরটি
এম.কে
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪