3.6 C
London
November 19, 2024
TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

আবাসনে সংকটে আয়ারল্যান্ড, ক্ষোভ বাড়ছে অভিবাসীদের প্রতি

এ বছরের শুরু থেকে আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিন এবং এমারল্ড আইলের ছোট শহরগুলোতে অভিবাসী বিরোধী ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে আইরিশ সরকার জানিয়েছে, আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য নির্ধারিত কেন্দ্রগুলো কানায় কানায় পূর্ণ। ফলে তৈরি হয়েছে গুরুতর আবাসন সংকট। নতুন করে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের জায়গা দেয়া অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ‘আইরিশ লাইফ ম্যাটার’ এবং ‘আয়ারল্যান্ড ইজ ফুল’-এর মতো হ্যাশট্যাগগুলো ভাইরাল হয়েছে।

২০২৩ সালের শুরু থেকে আয়ারল্যান্ডের অন্যান্য শহরের মতো রাজধানী ডাবলিনেও শরণার্থীদের প্রতি বিরূপ মনোভাব বেড়ে চলেছে।

সবশেষ ২৪ মার্চ কলম্বো ব্যারাক নামক একটি অভিবাসী অভ্যর্থনা কেন্দ্রের প্রবেশপথে একটি অভিবাসীবাহী একটি বাসকে আটকে দেয় স্থানীয়রা। মূলত এই অভ্যর্থনা কেন্দ্রটি ছিল পরিত্যক্ত সেনা ব্যারাক। ২০১২ সাল থেকে বন্ধ রয়েছে এটি। ডাবলিন থেকে কেন্দ্রটি ৮০ কিলোমিটার দূরের শহর মুলিঙ্গায় অবস্থিত।

 

 

 

 

 

 

আইরিশ ইন্টিগ্রেশন বিষয়ক মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছিল, এই কেন্দ্রে ১২০জন আশ্রয়প্রার্থীকে রাখার ব্যবস্থা করা হবে।

ওইদিন আশ্রয়প্রার্থীদের নিয়ে আসা বাস আটকে দিয়ে সেখানে সমাবেশে করেন বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা। এ সময় তারা, ‘আমাদের শহর থেকে বের হও’, ‘তোমরা এখানে ঢুকবে না’ বলে স্লোগান দিতে থাকে।

তবে ক্ষোভকে আরো নাড়িয়ে দিয়েছে টুইটারে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতিতে দেখা যায়, বাসে আটকে থাকা একজন আশ্রয়প্রার্থী অভিবাসীবিরোধী বিক্ষোভকারীদের হুমকি দিচ্ছেন।

বিক্ষোভের কয়েক ঘণ্টা পর আশ্রয়প্রার্থীদের বহনকারী বাসটি ভেতেরে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়। একইদিন সন্ধ্যায়, কলম্বো ব্যারাকে আসা খাবার সরবরাহকারী ট্রাকগুলোকে নিরাপত্তা দিয়ে পৌঁছে দেয় পুলিশ।

আয়ারল্যান্ডে বিক্ষোভের এই দৃশ্যটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এই ঘটনার ঠিক দুই দিন পরে, অভিবাসন বিরোধী একদল কর্মী বিভিন্ন ব্যানার ও প্লাকার্ড নিয়ে ডাবলিন বিমানবন্দরের প্রবেশ পথ বন্ধ করে দেয়।

আন্তজার্তিক গণমাধ্যমের মতে, আয়ারল্যান্ডে এই ধরনের বিক্ষোভের ঘটনা বাড়ছে। ২০২৩ সালের শুরু থেকে ইতিমধ্যেই ৬০টিরও বেশি অভিবাসী বিরোধী সমাবেশ হয়েছে৷

তবে পুরো বিষয়টিকে আরও উসকে দিতে কট্টরপন্থিরা গুজব ছড়াচ্ছে। অভিবাসীরা সহিংসতা এবং যৌন নির্যাতনের মতো অপরাধ করেছে বলে আইরিশ জনগণের কাছে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।

৭ ফেব্রুয়ারি, ডাবলিনে আয়োজিত একটি বিক্ষোভে দুই হাজারেরও বেশি মানুষ অভিবাসন বিরোধী নানা স্লোগানে রাস্তায় নেমেছিল।

 

 

 

 

 

 

আয়ারল্যান্ডের আশ্রয় কাঠামো বেশ কয়েক বছর ধরে আবাসন সমস্যায় জর্জরিত। তারপরেও ২০২২ সালে ইউক্রেনীয়দের জন্য দরজা খুলে দিয়েছিল দেশটির সরকার।

প্রায় ৭০ হাজারেরও বেশি ইউক্রেনীয় আইরিশ ভূখণ্ডে আশ্রয় পেয়েছিল। মাত্র ৫০ লাখ বাসিন্দার একটি দেশের জন্য এটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যা।

অনেক আইরিশ পরিবার ইউক্রেনীয়দের সাহায্য করার জন্য বাসার গেস্ট রুম বা এমনকি পুরো বাড়িও খুলে দিয়েছিল।

গত বছর দেশটি ইউক্রেন থেকে আসা শরণার্থীর পাশাপাশি মোট ১৩ হাজারেরও বেশি আশ্রয়ের আবেদন পেয়েছিল। যেটি ২০২১ সালে ছিল মাত্র দুই হাজার ১০০টি।

ডাবলিনসহ বিভিন্ন শহরে ক্রমশ বাড়ছে বাসা ভাড়া। একইসঙ্গে অভিবাসীদের আগমন বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয়রা আর সহজভাবে বিষয়গুলো গ্রহণ করছেন না।

গত গ্রীষ্মে আইরিশ সংসদ সদস্যরা উদ্বাস্তু ও শরণার্থীদের এই আবাসন সংকটের পরিণতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছিলেন।

এ বছরের জানুয়ারিতে আইরিশ সরকার ঘোষণা দেয়, দেশের অভ্যর্থনা কেন্দ্রগুলো পরিপূর্ন হয়ে গেছে। নতুন আশ্রয়প্রার্থীদের বিভিন্ন বাড়িতে অথবা রাস্তায় তাঁবুতে রাখা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।

আরো পড়ুন

নাগরিকদের লেবানন ছাড়ার আহ্বান যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের

ব্রিকসের মিটিংয়ে যাচ্ছেন না পুতিন

নাইজারে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল