ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক দাবি করেছেন, তার সরকারের নেয়া উদ্যোগের কারণে সমুদ্রপথে অভিবাসীদের আগমন কমছে৷ নিজের পরিকল্পনা কাজে লাগছে উল্লেখ করে নতুন ‘অবৈধ অভিবাসন বিরোধী আইন’ পাসের সমর্থন চেয়েছেন তিনি৷
ক্ষমতায় আসার পর থেকে ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে অভিবাসীদের আগমন থামাতে নানা ব্যবস্থা নিচ্ছে ঋষি সুনাকের প্রশাসন৷ গত অক্টোবরে ক্ষমতায় আসার আগে তার ৫টি প্রধান প্রতিশ্রুতির একটি ছিল এটি৷
সোমবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে ঋষি সুনাক বলেন, ‘‘পরিকল্পনা বাস্তবায়নের পর থেকে গত পাঁচ মাসে ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে পারাপার গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ কমেছে৷ আমাদের পরিকল্পনা কার্যকর হয়েছে৷’’
তবে বিরোধী দল লেবার পার্টি দাবি করেছে সুনাক কয়েক লাখ আশ্রয় আবেদন আটকে থাকার বিষয়টি সুরাহা করতে ব্যর্থ হয়েছেন৷ চলতি বছর সাত হাজার ৬০০ আশ্রয়প্রার্থী এরইমধ্যে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে দেশটিতে প্রবেশ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তারা৷
সুনাক তার সরকারের সাফল্য তুলে ধরতে গিয়ে আলবেনিয়ার সঙ্গে করা অভিবাসী প্রত্যাবর্তন চুক্তির উদাহরণ তুলে ধরেন৷ জানান এর ফলে ‘‘ছোট নৌকায় করে আলবেনিয়ানদের আসা ৯০ শতাংশ কমেছে৷’’
সাংবাদিক সম্মেলনে নতুন অবৈধ অভিবাসন বিরোধী আইনের পক্ষে সমর্থন পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি৷ আইনটি পাস হলে ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে নৌকায় করে আসা অভিবাসীদের আটক করবে যুক্তরাজ্য৷ এরপর তাদেরকে নিজ দেশে অথবা রুয়ান্ডার মতো তৃতীয় নিরাপদ বিবেচিত কোনো দেশে পাঠিয়ে দেয়া হবে৷
উল্লেখ্য, গত বছর ৪৫ হাজার ৭০০ অভিবাসী এই পথে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমান৷ তাদের এক চতুর্থাংশ ছিলেন আলবেনিয়ান৷
অভিবাসীদের বাঁধা দিতে ফ্রান্সের সঙ্গে গত নভেম্বরে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করে যুক্তরাজ্য৷ এর অংশ হিসেবে ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলের সৈকতে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্য ৪০ শতাংশ বাড়ানো হবে৷৷ বিনিময়ে দুই বছরে প্যারিসকে সাত কোটি ২০ লাখ ডলার দিবে লন্ডন৷ সেই সঙ্গে নৌকা শনাক্তকরণ বা বাঁধা দিতে প্রযুক্তি ব্যবহারও জোরদার করা হবে৷
এদিকে যুক্তরাজ্যের অভিবাসন বিষয়ক মন্ত্রী রবার্ট জেনরিক ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন নতুন অভিবাসন আইন কার্যকর হলে তা বাস্তবায়নে দুই বছরে খরচ হবে সাতশো কোটি ইউরোর বেশি৷ আশ্রয়প্রার্থীদের থাকার ব্যবস্থা ও প্রত্যাবাসনে এই অর্থ ব্যয় করা হবে৷
বিপুল অভিবাসীর জায়গা দিতে হিমশিম খেয়ে যুক্তরাজ্য সরকার তাদেরকে হোটেলে রাখার ব্যবস্থা করে৷ গত সপ্তাহে মধ্য লন্ডনে সেন্ট্রাল হোটেলে এক রুমে তিনজনের থাকার ব্যবস্থা নিয়ে ৪০ জন আশ্রয়প্রার্থীর একটি দল প্রতিবাদে অংশ নেয়৷
বর্তমানে পাঁচ হাজারের বেশি আশ্রয়প্রার্থীকে হোটেলে রেখেছে সরকার৷ এজন্য প্রতিদিন সরকারের খরচ ৬৯ লাখ ইউরো৷ এর মধ্যে এক হাজার জনকে স্থানান্তরে দুইটি মালবাহী নৌযান কিনবে সরকার৷
এম.কে
০৮ জুন ২০২৩