ইংল্যান্ডে গৃহহীন মানুষের প্রকৃত সংখ্যা সরকারের হিসাবের তুলনায় অনেক বেশি বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা ক্রাইসিস (Crisis)। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, প্রায় ১ লাখ ৮৯ হাজার পরিবার ও ব্যক্তি বর্তমানে এমন পরিস্থিতিতে আছেন যা সরকারি তথ্যের অন্তর্ভুক্ত নয়—এদের কেউ রাস্তায় ঘুমান, কেউ অন্যের বাড়িতে অস্থায়ীভাবে থাকেন, আবার কেউ তাঁবু বা গাড়িতে রাত কাটান।
সরকারি পরিসংখ্যান কেবল সেইসব মানুষকে গণনা করে যারা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহহীন হিসেবে নিবন্ধিত। তবে ক্রাইসিসের মতে, বাস্তবে অনেক গৃহহীন ব্যক্তি নানা কারণে আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধন করতে পারেন না বা করতে চান না, ফলে তাদের জীবনযাত্রা সরকারের নজরেই আসে না।
ক্রাইসিস ও হারিয়ট-ওয়াট বিশ্ববিদ্যালয় (Heriot-Watt University) যৌথভাবে পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২২ সালের পর থেকে ইংল্যান্ডে চরম গৃহহীনতা ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে, এবং বর্তমানে এই সংখ্যা প্রায় ৩ লাখে পৌঁছেছে। সংস্থাটির দাবি, এই হার বর্তমান সরকারি অনুমানকেও ছাড়িয়ে গেছে।
গবেষণায় আরও উল্লেখ করা হয়, গৃহহীনতার অন্যতম বড় কারণ হলো “অনুপযুক্ত অস্থায়ী আবাসন”—যেখানে মানুষের বসবাসের মান ন্যূনতম নিরাপত্তা ও স্বাস্থ্যবিধি থেকেও বঞ্চিত। ২০২০ সালে ১৯,২০০ পরিবার এমন পরিবেশে বাস করলেও, ২০২৪ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৬,৭০০ পরিবারে। এসব আবাসনের মধ্যে রয়েছে অনিরাপদ বি অ্যান্ড বি (B&B) হোটেল, দূরবর্তী অস্থায়ী ঘরবাড়ি এবং অপর্যাপ্ত স্থানবিশিষ্ট শেয়ার করা ঘর।
অতিরিক্তভাবে, গবেষণায় বলা হয়েছে যে, প্রায় ১৮,৬০০ পরিবার “অপ্রচলিত আবাসনে”, যেমন গাড়ি, শেড বা তাঁবুতে বসবাস করছে—যা মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ।
এদিকে, যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছে, তারা ২০২৫-২৬ অর্থবছরে গৃহহীনতা মোকাবিলায় ১ বিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩১৬ মিলিয়ন পাউন্ড বেশি। তবে ক্রাইসিসের মতে, শুধুমাত্র অর্থ বরাদ্দ নয়—বাস্তবসম্মত নীতি, দ্রুত পদক্ষেপ এবং আবাসনসংকট নিরসনই হতে পারে গৃহহীনতা কমানোর কার্যকর পথ।
সূত্রঃ দ্য ক্রাইসিস
এম.কে

