ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে অবৈধ বলে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রীর কাছে যে আইনি পরামর্শ পাঠানো হয়েছিল, সেটি তাকে পুড়িয়ে ফেলতে বলা হয়েছিল টনি ব্লেয়ারের দপ্তর থেকে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পরিচালিত বাহিনীর ইরাক আগ্রাসন শুরু হয়েছিল ২০০৩ সালের ২০ মার্চ। তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ ও কোয়ালিশন বাহিনী যে কারণ দেখিয়েছিল তা হলো : ইরাক ১৯৯১ সালের চুক্তি অমান্য করে গণবিধ্বংসী অস্ত্র নির্মাণ করছে এবং তাদের কাছে এ ধরনের অস্ত্রের মজুদও আছে। কিন্তু আগ্রাসনের পর পরিদর্শকরা ইরাকে গিয়ে কোনো ধরনের গণবিধ্বংসী অস্ত্র খুঁজে পায়নি।
আলোচিত ওই ইরাক আক্রমণ ‘অবৈধ প্রমাণিত হতে পারে’ এমন এক নথি নিজের প্রতিরক্ষা সচিবকে পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী (১৯৯৭-২০০৭) টনি ব্লেয়ার।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি মেইলের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তৎকালীন দেশটির প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত সচিব জিওফ্রে উইলিয়াম হুন নিজেই এ কথা জানিয়েছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ব্লেয়ারকে নতুন বছরে যুক্তরাজ্যের অন্যতম সর্বোচ্চ সম্মানজনক ‘নাইটহুড’ উপাধিতে ভূষিত করেন ব্রিটেনের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। গত শুক্রবার তাকে ‘ব্রিটিশ অর্ডার অব শিভালরি’-এর ‘মোস্ট নোবেল অর্ডার অব দ্য গার্টার’-এর নাইট কম্প্যানিয়ন নিযুক্ত করেন দেশটির রানী। এটি ব্রিটেনের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাচীনতম সম্মাননা।
তবে, ব্লেয়ারকে এ সম্মাননা দেওয়ার ব্যাপারটি মেনে নিতে পারছেন না অনেকেই। দেশটির জনসাধরণের এক অংশের দাবি, সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী যুদ্ধাপরাধী। ইরাক যুদ্ধে সরাসরি জড়িত থাকার কারণে তাকে যেকোনো সার্বজনীন সম্মাননা পাওয়ার ক্ষেত্রে ‘সর্বনিম্ন যোগ্য ব্যক্তি’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন তার নিজের দেশেরই সাধারণ মানুষ। এমনি নাইট উপাধি ফিরিয়ে নিতে পিটিশন স্বাক্ষরেরও আয়োজন করা হয়েছে।
গত তিন দিনে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৬ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ স্বাক্ষর করেছেন ওই পিটিশনে। সাধারণ মানুষের এ দাবিতে আরও গতি এনে দিয়েছে সাবেক প্রতিরক্ষা সচিব জিওফ্রে হুনের গোপন নথি পুড়িয়ে ফেলার চাঞ্চল্যকর তথ্য।
৭ জানুয়ারি ২০২২
এনএইচ