পুলিশি হেফাজতে ২২ বছর বয়সী মাহশা আমিনির মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে ইরানে। টানা ১১ দিনের মতো এই বিক্ষোভে ইরানি বাহিনীর অভিযানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৭৫ জনে দাঁড়িয়েছে। সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এক মানবাধিকার সংস্থা এই তথ্য জানিয়েছে।
এ ছাড়া ইরানের এ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে লন্ডনেও। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) শহরের রাস্তায় বিক্ষোভে নামেন কয়েকশ‘ বিক্ষোভকারী। পরে লন্ডনে অবস্থিত ইরানের দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভকারীরা সড়ক অবরোধ করলে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন তারা। বিক্ষোভ ঠেকাতে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে নিরাপত্তা বাহিনী। একপর্যায়ে দুই পক্ষের ব্যাপক সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় ওই এলাকা। এদিন অন্তত ১২ বিক্ষোভকারীকে আটক করে পুলিশ।
একজন বিক্ষোভকারী বলেন, ‘আমি এখানে এসে চুল কাটছি। কারণ, ইরানে হিজাবের কারণে আজ না হয় কাল আমাদের অনেক বোন মরতে যাচ্ছে। আমি এটা চাই না। আমি এটি ঘৃণা করি। এখানে এসে আমি তাদের সমর্থন জানাতে চাই–যাদের প্রতিবাদের কোনো ভাষা নেই।’
ইরানের বিক্ষোভের এ আগুন ছড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্র, গ্রিস, জার্মানি ও ফ্রান্সসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। রাস্তায় নেমে নিজের চুল কাটার পাশাপাশি প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিয়ে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এ ঘটনার।
এছাড়া ইরানের কর্তৃপক্ষ সোমবার বলেছে, তারা দেশজুড়ে এখন পর্যন্ত এক হাজার ২০০ এর বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে।
গার্ডিয়ান বলছে, বিক্ষোভ শুরুর পর থেকে শতশত বিক্ষোভকারী, অ্যাক্টিভিস্ট ও সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে ইরানের বাহিনী। তবে এরপরেও ইরানজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত আছে।
অনেক নারী বিক্ষোভকারী বিক্ষোভের সময় তাদের হিজাব খুলে পুড়িয়ে ফেলেন এবং তাদের চুলও কাটছেন। অনেকে আবার নারী, জীবন, মুক্তি বলে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
হিজাব ঠিকমতো না পরার অভিযোগে ইরানের নৈতিক পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন মাহশা আমিনি। এরপর ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশি হেফাজতে তার মৃত্যু হয়। পরিবার ও বহু ইরানির দাবি, পুলিশের নির্যাতনে আমিনির মৃত্যু হয়েছে। যদিও পুলিশ এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে আমিনির মৃত্যুর পরেই হাজার হাজার মানুষ ইরানজুড়ে বিক্ষোভে নামে। দেশটির ৮০টির বেশি শহরে ছড়িয়ে পড়ে এই বিক্ষোভ।
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
এনএইচ