6.5 C
London
December 19, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

কনজারভেটিভ পার্টির ভুলের মাশুল দিতে হচ্ছে জনগণেরঃ প্রতিবেদন

যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, অভিবাসন প্রত্যাশীদের নিয়ে কনজারভেটিভ সরকারের ব্যর্থ পরিকল্পনার কথা। অভিবাসন প্রত্যাশীদের আশ্রয় কাজে ব্যবহারের লক্ষ্যে একটি দূষিত পুরোনো বাড়ি কারাগার হিসাবে ব্যবহার করার জন্য ক্রয় করতে ট্যাক্সপেয়ারদের লক্ষ লক্ষ পাউন্ড ব্যয় করেছিল কনজারভেটিভ সরকার।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, হোম অফিসের মধ্যে পর্যাপ্ত যাচাই-বাছাই এবং সঠিক তথ্য উপাত্তের অভাব ছিল, পাশাপাশি চুক্তি দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য রাজনৈতিক চাপও ছিল। তৎকালীন অভিবাসন মন্ত্রী রবার্ট জেনরিক – যিনি বর্তমানে কেমি ব্যাডনোচের শ্যাডো ক্যাবিনেটে আছেন – তাকে একজন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।

ন্যাশনাল অডিট অফিসের পর্যালোচনায় উঠে এসেছে কনজারভেটিভ সরকার থাকাকালীন হোম অফিস পূর্ববর্তী বছরে প্রায় £৬ মিলিয়ন পাউন্ডে কেনা একটি সাইট £১৫ মিলিয়নেরও বেশি অর্থে কিনে।

দুষিত পদার্থ অপসারণ এবং সাইট বসবাস উপযোগী করতে অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করার জন্য আনুমানিক ব্যয় ছিল £২০ মিলিয়ন পাউন্ডেরও বেশি।

একটি দাতব্য সংস্থার ক্যাম্পেইনাররা বলেছেন, লক্ষ লক্ষ পাবলিকের অর্থ “একটি দূষিত এবং বিপজ্জনক সাইটে নষ্ট করা হয়েছে, যা কখনই বিবেচনায় আসা উচিত ছিল না”, এবং এই ঘটনাকে “একটি ব্যর্থতা” বলে অভিহিত করা হয়েছে।

লেবার পার্টি অভিযোগ করেছে মি. জেনরিকের “পাবলিক অর্থের প্রতি কোনো গুরুত্ব আরোপ করেন নাই” এবং তার শ্যাডো ক্যাবিনেটে থাকা নিয়েও তাই এখন “প্রশ্ন” উঠতে পারে।

ন্যাশনাল অডিট অফিস জানিয়েছে, হোম অফিস তাড়াহুড়োর মধ্যে সাইটটি কিনতে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি অর্থ ব্যয় করেছে। সাইটটি ইস্ট সাসেক্সের বেক্সহিলে অবস্থিত, যা “দূষণের কারণে তার নির্ধারিত উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা অযোগ্য বলে বিবেচিত হয়েছে।”

নর্থআই সাইটটি কেনা হয়েছিল ঋষি সুনাক সরকারের “নৌকা থামানোর” পরিকল্পনার অধীনে এবং অভিবাসন প্রত্যাশীদের থাকার জন্য হোটেলের উপর নির্ভরতা কমানোর লক্ষ্যে।

২০২২ সালের ডিসেম্বরে এই সাইটটি অভিবাসন প্রত্যাশীদের জন্য সম্ভাব্য আশ্রয়স্থল হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। এরপরে জানুয়ারি ২০২৩-এ, হোম অফিস সাইটটির জন্য একটি প্রস্তাব দেয়।

এক মাস পরে, সাইটজুড়ে “উচ্চ-ঝুঁকিপূর্ণ” দূষণের বিষয়টি প্রকাশ পায়।

পরবর্তী পর্যালোচনায় জানা যায় যে দূষণের প্রধান ঝুঁকি ছিল বিদ্যমান ভবনগুলোতে অ্যাসবেস্টোস-যুক্ত সামগ্রী এবং দূষিত মাটি।

মার্চ ২০২৩-এ, সাইটটির “গুরুতর ঝুঁকির” কথা ক্যাবিনেট অফিসের পক্ষ থেকে মি. জেনরিককে জানানো হয়, যার মধ্যে কার্যকারিতা এবং সাইটটিকে ইউটিলিটির সঙ্গে সংযুক্ত করার অক্ষমতার বিষয়ও ছিল।

২৯ মার্চ ২০২৩-এ মি. জেনরিক ঘোষণা দেন যে তার সরকার নর্থআই সাইটটি উন্নত করবে এবং সেখানে ১,২০০ অভিবাসন প্রত্যাশীকে আশ্রয় দেবে।

সেপ্টেম্বর ২০২৩-এ হোম অফিস সাইটটি £১৫.৪ মিলিয়ন পাউন্ডে ক্রয় করে। তবে এই সাইটে এখনো কোনো কাজ শুরু হয়নি, এবং নতুন সরকার এখনো সাইটটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করেনি।

লেবার পার্টির একজন মুখপাত্র বলেন, “টোরিরা ১৪ বছর ধরে ট্যাক্সপেয়ারদের অর্থ নষ্ট করেছে, যার ফলে ব্রিটেনে £২২ বিলিয়ন পাউন্ডের বাজেট ঘাটতির সৃষ্টি হয়। কনজারভেটিভ পার্টির নেতা কেমি ব্যাডনোচের সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তোলা যায় কারণ তিনি এমন একজনকে তার শ্যাডো ক্যাবিনেটে নিয়োগ দিয়েছেন যার পাবলিক অর্থের প্রতি কোনো গুরুত্বই নেই।

এটি সেই পুরনো টোরি, তারা কিছুই শিখেনি। লেবার পার্টি পরিবর্তন আনতে এবং টোরিদের রেখে যাওয়া জঞ্জাল পরিষ্কার করতে কাজ করছে।”

কনজারভেটিভ এমপি এবং পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ার স্যার জিওফ্রে ক্লিফটন-ব্রাউন বলেন, “আমার কমিটি এই বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবে যাতে ভবিষ্যতে কোনো ধরনের অধিগ্রহণে আর ভুল না হয় এবং পাবলিক অর্থ নষ্ট না হয়।”

হোম অফিসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “এই প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু আগের সরকারের নর্থআই সাইট ক্রয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত।

অভিবাসন সিস্টেমের উপর অসাধারণ চাপ এবং হাজার হাজার মামলা জমে থাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য আমরা হোটেল ব্যবহারের পরিবর্তে আরও উপযুক্ত এবং সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসনে অভিবাসীদের স্থানান্তরিত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিলাম।

আমরা আবারও অভিবাসন সিস্টেমকে সক্রিয় করে তুলছি, যাদের এখানে থাকার অধিকার নেই তাদের ফেরত পাঠানোর সংখ্যা বাড়াচ্ছি। ২০২৪ সালের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত ৯,০০০ এর বেশি মানুষকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। আমরা এই সিস্টেমকে দ্রুত, দৃঢ় এবং ন্যায্যভাবে পরিচালনা করতে পারবো বলে আশা রাখি। ”

সূত্রঃ স্কাই নিউজ

এম.কে
১৬ নভেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

লন্ডনে তালা ভেঙে অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামালের জামাতার মরদেহ উদ্ধার

অনলাইন ডেস্ক

বাবার জন্মদিনের অনুষ্ঠানে দাওয়াত পেলেন না প্রিন্স হ্যারি

পদত্যাগ করছেন স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার হামজা ইউসুফ