গত বছর ইসলামের প্রধান ধর্মগ্রন্থ কোরান পোড়ানোর ঘটনায় দায়ী দুই অভিবাসীর বিচার করবে বলে জানিয়েছে সুইডেন৷ ২৮ আগস্ট সুইডিশ প্রসিকিউটরেরা বলেছেন, গত বছর চারটি ঘটনায় কোরান পোড়ানোর অভিযোগে দুই জনকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে৷
২০২৩ সালে সুইডেনে কোরান পোড়ানোর ঘটনায় মুসলিম বিশ্বে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছিল৷ এমনকি সুইডেনে জিহাদি আক্রমণের শঙ্কা তৈরি হয়েছিল৷
সুইডিশ প্রসিকিউশন কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই দুই ব্যক্তি মসজিদের বাইরে এবং অন্যান্য পাবলিক স্থানে ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ পোড়ানোর চারটি ঘটনায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার অপরাধ করেছে৷
কোরান পোড়ানোর ফলে সুইডেনের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরিষেবা দেশজুড়ে সন্ত্রাসবাদের সতর্কতা জারি করেছিল৷ প্রতিবেশী ডেনমার্কেও কোরান পোড়ানোর ঘটনা ঘটেছিল৷ এমন কার্যকলাপ আইন বহির্ভূত হিসাবে চিহ্নিত করতে ডেনমার্ক তাদের আইনেও সংস্কার করেছে৷
সুইডেনের সিনিয়র প্রসিকিউটর আনা হাঙ্কিও এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘চারটি অনুষ্ঠানে বিবৃতি দেয়া এবং কোরান পোড়ানোর মাধ্যমে মুসলমানদের প্রতি অবমাননার অভিযোগে এই দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে৷’’
বিশ্ব মুসলিম সমাজ এ ঘটনাকে কোরানের অপবিত্রতা ও অবমাননা হিসাবে নিয়েছে৷ কারণ, তারা বিশ্বাস করেন এটি সৃষ্টিকর্তার মাধ্যমে পৃথিবীতে এসেছে৷
হাঙ্কিও বলেন, সালওয়ান মোমিকা এবং সালওয়ান নাজেম নামে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোরান পোড়ানোর অভিযোগের প্রমাণ হিসাবে ভিডিও রেকর্ডিং আছে৷
২৮ আগস্ট নাজেমের আইনজীবী মার্ক সাফারিয়ান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, নাজেম মনে করেন না তিনি কোনো অন্যায় করেছেন৷
মোমিকার আইনজীবীকে অনুরোধ করা হলেও তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি৷
ইরাক থেকে আসা শরণার্থী মোমিকা বলেছিলেন, তিনি ইসলামী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে এবং এর পবিত্র গ্রন্থ নিষিদ্ধ করতে চেয়েছিলেন৷
সুইডেনের মাইগ্রেশন এজেন্সি জানিয়েছে, তারা মোমিকাকে তার বসবাসের আবেদনে মিথ্যা তথ্য দেয়ার কারণে ডিপোর্ট করতে চেয়েছিল৷ কিন্তু ডিপোর্ট আদেশটি কার্যকর করা যায়নি, কারণ তার নিজ দেশে নির্যাতিত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে৷
সমালোচকরা বলছেন, সুইডেন এবং ডেনমার্ক হলো বিশ্বের সবচেয়ে উদারপন্থী দুটি দেশ৷ ফলে, কোরান পোড়ানোকে আইনের মাধ্যমে সুরক্ষিত বাকস্বাধীনতার একটি রূপ হিসাবে বিবেচনা করা উচিত৷
সূত্রঃ রয়টার্স
এম.কে
৩১ আগস্ট ২০২৪