ক্রিপ্টোকারেন্সির জটিল দুনিয়ায় কেউ এর পক্ষে, আবার কেউ এর বিপক্ষে। রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান খুব পরিষ্কার। তিনি এর প্রতিযোগিতামূলক সুবধা নেওয়ার পক্ষে। এখন যেহেতু পশ্চিমাদের নানান নিষেধাজ্ঞায় রাশিয়ার অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত, সেহেতু এই ডিজিটাল মুদ্রার শরণাপন্ন হতে পারেন পুতিন। এমনটাই মনে করেন গার্ডিয়ানের গ্লোবাল টেকনলোজি এডিটর ড্যান মিলমো।
গত জানুয়ারিতে ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেন ও মাইনিং-এর উপর নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব এনেছিল রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি বিট কয়েনের ক্ষেত্রে মাইনিং হচ্ছে একধরনের উপার্জন কৌশল। এতে ভার্চুয়াল লেজার ব্লক চেইন ব্যবহার করে নতুন লেনদেন দেখানো হয় এবং উপহার হিসেবে নতুন বিট কয়েন সৃষ্টি হয়।
দ্য ব্যাংক অব রাশিয়া জানায়, ক্রিপ্টো কারেন্সি মাইনিং দেশের অর্থনীতি ও আর্থিক স্থিতিশীলতার জন্য উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি।
এক সপ্তাহ পরে এই প্রস্তাবে ভিন্নমত দেখান পুতিন। তার মতে, যেহেতু রাশিয়ার বিপুল পরিমাণ সম্পদ আছে এবং এই ক্ষেত্রটিতে তারা অভিজ্ঞ, তাই ক্রিপ্টোকারেন্সির বাজারে রাশিয়ার বেশ সুবিধা রয়েছে। বলা হচ্ছে, পশ্চিমাদের বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা পুতিনকে এই মনোভাগ পোষণের দিকে ধাবিত করতে পারে।
দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ৪৭৮ বিলিয়ন পাউন্ডকে টার্গেট করেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং কানাডা। একই গোষ্ঠী ঘোষণা করেছে, বিভিন্ন রাশিয়ান ব্যাংকগুলোকে প্রধান গ্লোবাল পেমেন্ট মেসেজিং সিস্টেম সুইফট থেকে বহিষ্কার করা হবে।
তাই রাশিয়া এবং এর ব্যাংকগুলো ক্রিপ্টোকারেন্সির অনুসন্ধান করতে পারে। কারণ এটি আন্তর্জাতিক লেনদেনে ডলারের একটি বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে। আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং সিস্টেমকেও পাশ কাঁটিয়ে যেতে পারে ক্রিপ্টোকারেন্সি। ফলে এটি নিষেধাজ্ঞাগুলোকেও পাশ কাঁটাতে পারবে। এরমাধ্যমে অন্যদেশের সাথে লেনদেন করতে পারবে তারা।
Yesterday, the U.S. Treasury Department announced extensive sanctions against Russian businesses and elites following the country’s invasion of Ukraine. This has prompted many to ask Chainalysis how Russia may attempt to use cryptocurrency to evade sanctions.
— Chainalysis (@chainalysis) February 25, 2022
ফলে পশ্চিমাদের এসব নিষেধাজ্ঞা আদৌ কার্যকর হবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন অনেক বিশ্লেষক। তাদের মতে, পশ্চিমা বিশ্বের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এখন আর সেভাবে কাজ করে না। এই নিষেধাজ্ঞা কাজ না করার পেছনে অনেক কারণের মধ্যে একটি বড় কারণ নিষেধাজ্ঞা এড়িয়েও অর্থনৈতিক লেনদেন চালিয়ে যাওয়ার অনেক সুযোগ আছে। তাছাড়া রয়েছে নিষেধাজ্ঞার প্রয়োগ এবং তদারকি ও কার্যকর বা এনফোর্স করার সীমাবদ্ধতা।
নিষেধাজ্ঞা আরোপের ক্ষেত্রে আরো একটি বড় সমস্যা হলো, যে দেশের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় সেই দেশকে নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গের দায়ে দায়ীও করা যায় না। কোনো রকম শাস্তিও দেওয়া যায় না। পক্ষান্তরে অনেক নিরীহ প্রতিষ্ঠান বা সংস্থা এই নিষেধাজ্ঞা ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত হয় এবং কঠোর শাস্তিও ভোগ করে
২ মার্চ ২০২২
এনএইচ