তাপমাত্রা হঠাৎ কমে যাওয়ার পর যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে যখন বরফ ও ঠাণ্ডা বাতাসের দাপট দেখা দিয়েছে, তখন লিঙ্কনশায়ারের স্পাল্ডিংয়ের কাছে অবস্থিত মল্টন মেডিকেল সেন্টার রোগীদের জন্য কিছু বাস্তবধর্মী শীতকালীন পরামর্শ দিয়েছে। কেন্দ্রটি বলছে, শীতের মাসগুলোতে ঘরে বসে থাকলে পা স্টুলে তুলে রাখা এবং যতক্ষণ সম্ভব পা উষ্ণ রাখা প্রয়োজন, কারণ গরম বাতাস উপরের দিকে চলে যায় এবং ঘরের মেঝে সবচেয়ে বেশি ঠাণ্ডা থাকে।
এনএইচএস ক্লিনিকটি রোগীদের সতর্ক করে বলেছে, খালি পায়ে হাঁটা এড়িয়ে চলতে হবে। তাদের ভাষায়, “কারও খালি পায়ে চলাফেরা করা ভালো না, এবং তা স্বাস্থ্যের জন্যও ভালো নয়।” শীতকালে ঘরে মোজা, স্যান্ডেল বা জুতা পরে চলাফেরা করতে বলা হয়েছে। রাতে পা ঠাণ্ডা হলে সেক্ষেত্রেও মোজা পরে শুতে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
পরামর্শে আরও বলা হয়েছে, ভেজা মোজা বা ভেজা জুতা দ্রুত পায়ের তাপমাত্রা কমিয়ে দেয়। তাই বাইরে গেলে জলরোধী ও উষ্ণ জুতা ব্যবহার করা জরুরি। একই সঙ্গে আঙুলের চারপাশে সামান্য উষ্ণ বাতাস রাখার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, গ্লাভস যেন খুব টাইট না হয় এবং আঙুলগুলি স্বচ্ছন্দে নাড়ানো যায়; এটি রক্তসঞ্চালন বাড়িয়ে হাতকে উষ্ণ রাখে।
আর্কটিক অঞ্চলের হিমেল বায়ু দক্ষিণমুখী হওয়ায় কুম্ব্রিয়ায় মৌসুমের প্রথম তুষারপাত রেকর্ড হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে যুক্তরাজ্য হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি ইয়র্কশায়ার অ্যান্ড দ্য হাম্বার, নর্থ ওয়েস্ট এবং নর্থ ইস্টে অ্যাম্বার শীত স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছে। ইংল্যান্ডের অন্যান্য সব অঞ্চলও নিম্ন তাপমাত্রার কারণে ইয়েলো সতর্কতার আওতায় রয়েছে।
আবহাওয়া পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে বলে মেট অফিস জানিয়েছে। সংস্থাটি বরফ ও বরফাচ্ছন্ন রাস্তার সম্ভাবনায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত একাধিক ইয়েলো আবহাওয়া সতর্কতা দেয়। তাদের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আর্কটিক বায়ুর প্রভাবে দিন যত যাবে তাপমাত্রা আরও কমবে। ডেপুটি চিফ ফোরকাস্টার টম ক্র্যাবট্রি জানিয়েছেন, গভীর রাতে তাপমাত্রা -১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত নামার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে বরফ জমে যাওয়া সড়কগুলো নিরাপদ রাখতে লন্ডনের বিভিন্ন কাউন্সিল বাসিন্দাদের নিজ নিজ রাস্তায় লবণ ছিটানোর আহ্বান জানিয়েছে। যেখানে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ পৌঁছাতে পারছে না, সেখানে বাসিন্দাদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে লবণের ব্যাগ, কোদাল ও হাই-ভিজ ভেস্ট। কাউন্সিলগুলোর দাবি, গোটা বরো জুড়ে লবণ ছিটানো একটি কঠিন ও শ্রমসাধ্য কাজ, তাই জনগণের সহায়তা প্রয়োজন।
তবে এই উদ্যোগ সমালোচনার মুখে পড়েছে। ট্যাক্সপেয়ারস’ অ্যালায়েন্স একে “অবিশ্বাস্য” মন্তব্য করে বলেছে, এটি স্থানীয় প্রশাসনের দায়িত্বহীনতার প্রমাণ। তারা অভিযোগ করে যে, কর্তৃপক্ষ
সেবা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় এখন সাধারণ মানুষকে কর্মীর জায়গায় দাঁড়াতে হচ্ছে।
সূত্রঃ দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট
এম.কে

