দেশের ডলার সংকট নিরসনের লক্ষ্যে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বিদেশে আটকে থাকা সাড়ে ১০ বিলিয়ন ডলার আনার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সম্প্রতি দেশে ডলার সংকট তৈরি হয়েছে। মার্কেট স্বাভাবিক রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলার সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে ব্যাংকগুলোকে। এখনো প্রায় দেড় বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স বিদেশে আটকে আছে। এছাড়া ব্যাংকগুলোর নষ্ট একাউন্টে প্রায় ৯ বিলিয়ন ডলার এক্সপোর্ট রিকনসলেশন হিসাবে আটকে আছে। সবমিলিয়ে ব্যাংকগুলোকে এই সাড়ে ১০ বিলিয়ন ডলার আনার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সোমবার (২৫ জুলাই) ব্যাংকগুলোর এমডিদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ-এর সঙ্গে বৈঠকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ নির্দেশ দেয়। বৈঠক শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম এ তথ্য জানান।
বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ব্যাংকগুলো যদি এই সময়ে এসব ডলার বিদেশ থেকে না নিয়ে আসে তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আর ডলার সাপোর্ট দেওয়া হবে না। ব্যাংকগুলোর সাপোর্টের ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আয়নার মতো। এ রিজার্ভকে একেবারে কমিয়ে ফেলা সম্ভব না। রেমিটেন্স আনার ক্ষেত্রে আপনারা যেভাবে সহযোগিতা করবেন, একইভাবে এক্সপোর্টের টাকা ফেরত আনার জন্য আপনাদের একই রকম সহযোগিতা কামনা করি। নিয়মের মধ্য থেকে যেকোনো ধরনের ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত বাংলাদেশ ব্যাংক, তবে নিয়মের মধ্যে না থাকলে কিছু করার থাকবে না।
ঋণ পুঃতফসিলের মাস্টার্স সার্কুলার নিয়ে মুখপাত্র বলেন, কোন কোন গ্রাহককে পুনঃতফসিল সুবিধা দেওয়া হবে এবং কাকে দেওয়া হবে না এটার পুরো দায়ভার এখন ব্যাংকগুলোর ওপর। এ দায়িত্ব এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিতে চায় না। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে যদি অনিয়ম ধরা পড়ে তাহলে ছাড় দেওয়া হবে না। কারণ অনিয়মের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছে। ঋণ পুনঃতফসিল সার্কুলারের ফলে এখন থেকে ঋণ বিতরণের সময় সবাই সতর্ক হয়ে যাবে।
বৈঠক শেষে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবং অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ লিমিটেডের (এবিবি) চেয়ারম্যান সেলিম আর এফ হোসেন বলেন, সংস্কারের মাত্র শুরু। এই সার্কুলারের মাধ্যমে পুনঃতফসিল প্রক্রিয়া এখন থেকে আরও সুষ্ঠু হবে। আগের পদ্ধতির চেয়েও পুনঃতফসিলের নতুন নীতিমালা অনেক ভালো। কারণ এ মুহূর্তে তফসিল এবং খেলাপি ঋণের পুরো দায়ভার ব্যাংকগুলোর ওপরেই।
২৭ জুলাই ২০২২
সূত্র: জাগো নিউজ