নথিপত্রবিহীন পুরুষ অভিবাসীদের ব্রিটেনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি তুলেছেন রিফর্ম পার্টির নেতা নাইজেল ফারাজ। তিনি স্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, ফ্রান্সের সঙ্গে যেকোনো নতুন চুক্তিতে এই শর্ত অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর তিন দিনের সফর ঘিরে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার একটি নতুন চুক্তির চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যার লক্ষ্য নৌপথে অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করা।
ফারাজ সংসদে বলেন, জনগণ ২০১৬ সালের ভোটে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ ফেরত চেয়েছিল। এখন সেই দাবি আরও জোরালো। তার ভাষায়, “নথিপত্র ছাড়া পুরুষদের আর গ্রহণ করা যাবে না।”
প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার এই বক্তব্যের কড়া জবাবে বলেন, “আমরা সমস্যার বাস্তবসম্মত সমাধান চাইছি, ধ্বংসাত্মক রাজনীতি নয়।”
স্টারমার আরও বলেন, আগের সরকার অভিবাসন সমস্যা অবহেলা করেছে। তিনি প্রতিবেশীদের সঙ্গে সমন্বয় করে দীর্ঘমেয়াদি সমাধানে বিশ্বাসী।
বৈঠকের পর জানা গেছে, দুই দেশ একটি নতুন নিরুৎসাহনমূলক ব্যবস্থার দিকে এগোচ্ছে, যাতে অবৈধ উপায়ে প্রবেশ বন্ধ করা যায়। তবে এখনো চূড়ান্ত কোনো চুক্তি হয়নি।
চলমান আলোচনায় “একজনের বদলে একজন” নীতি নিয়ে কথা হয়েছে। অর্থাৎ, যারা অবৈধভাবে প্রবেশ করেছে তাদের ফ্রান্সে ফেরত পাঠিয়ে, যুক্তরাজ্য কেবল সেই অভিবাসীদের নেবে যাদের পরিবারের কেউ আগে থেকেই এখানে আছে।
এদিকে পাঁচটি ইউরোপীয় দেশ উদ্বেগ জানিয়ে বলেছে, যুক্তরাজ্য ফেরত পাঠানো ব্যক্তিদের গ্রহণ করতে তাদের ওপর চাপ পড়ছে, যা অসহনীয়।
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ফরাসি সরকারকে অনুরোধ করেছেন যেন আইন পরিবর্তন করে নৌকা পানিতে থাকতেই পুলিশ যেন হস্তক্ষেপ করতে পারে।
সম্প্রতি দেখা গেছে, ফরাসি পুলিশ পানিতে থাকা একটি রাবার নৌকা ছুরি দিয়ে ফুটো করে দিচ্ছে, যা নীতিগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত।
বিরোধী দল লিবারেল নেতারা ফ্রান্সকে স্পষ্ট বার্তা দিতে বলেছে—যদি অভিবাসী ফেরত না নেওয়া হয়, তাহলে আর্থিক সহায়তাও বন্ধ করে দিতে হবে।
২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে প্রায় ২০ হাজার মানুষ নৌপথে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছে, যা এক রেকর্ড সংখ্যা। অথচ ফ্রান্সকে ইতোমধ্যে সাতশো কোটি টাকার বেশি সহায়তা দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরে থাকা আকর্ষণীয় সুবিধাগুলোই মূলত অভিবাসীদের টানে। এসব বন্ধ না করলে সমস্যা থেকেই যাবে।
স্টারমারের দপ্তর জানিয়েছে, পুরো ব্যবস্থা এখন আরও কঠোর করা হচ্ছে। অবৈধ কাজ, মজুরি চাপে ফেলা ও নিয়ম ভাঙার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সরকার জানিয়েছে, নীতিমালা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানের সংখ্যা ও গ্রেপ্তার অনেক গুণ বাড়ানো হয়েছে। জনগণ আর অবৈধ প্রবেশ ও কাজকে মেনে নেবে না বলেও সাফ জানানো হয়েছে।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
১০ জুলাই ২০২৫