ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম The Mirror-এর পরিচিত কলামিস্ট ফ্লিট স্ট্রিট ফক্স যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে আলোচিত নেতা নাইজেল ফারাজকে সরাসরি আক্রমণ করে বলেছেন, “ফারাজ ব্রিটেনকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করছেন, এখনই সময় তাকে দেশ থেকে বহিষ্কার করার।”
তার ব্যঙ্গাত্মক ও প্রখর রাজনৈতিক কলামটি সোমবার প্রকাশিত হয়, যেখানে তিনি ফারাজকে “রাজনৈতিক ব্ল্যাক হোল” হিসেবে আখ্যা দেন — নাইজাল ফারাজ এমন এক চরিত্র যিনি ব্রিটিশ রাজনীতির প্রতিটি নেতিবাচকতা নিজের চারপাশে ঘনীভূত করেছেন।
ফ্লিট স্ট্রিট ফক্স লেখেন, ফারাজ এমন এক রাজনীতিবিদ, যিনি দেশপ্রেমের মুখোশ পরে জাতিকে বিভক্ত করেছেন। ব্রেক্সিট থেকে শুরু করে অভিবাসনবিরোধী প্রচার — প্রতিটি ইস্যুতেই তিনি জনমনে বিভাজন সৃষ্টি করেছেন এবং এ থেকেই রাজনৈতিক সুবিধা নিয়েছেন। লেখকের মতে, “ফারাজ দেশপ্রেম নয়, বিভাজন বিক্রি করেন।”
কলামে বলা হয়, নাইজাল ফারাজ -এর উগ্র অবস্থান শুধু তার দল রিফর্ম ইউ-কে নয়, মূলধারার দল কনজারভেটিভ ও লেবারকেও প্রভাবিত করছে। অভিবাসনবিরোধী বক্তব্য এবং জনমোহিনী নীতির কারণে উভয় দলই নিজেদের ঐতিহ্যবাহী অবস্থান থেকে সরে এসে আরও ডানপন্থী নীতি গ্রহণ করছে। ফ্লিট স্ট্রিট ফক্স এই পরিস্থিতিকে “রাজনীতির মরণ ফাঁদ” বলে বর্ণনা করেন — যেখানে সবাই ফারাজের কণ্ঠে কথা বলছে, অথচ সমাধান কেউ দিচ্ছে না।
নাইজেল ফারাজের ভণ্ডামি নিয়েও তিনি তীব্র মন্তব্য করেন। তার অভিযোগ, ফারাজ সংসদ সদস্য থাকাকালীন জনগণের করের অর্থে জীবনযাপন করলেও, দেশের জন্য বাস্তব কোনো অবদান রাখেননি। বরং ইউরোপীয় পার্লামেন্টে তার উপস্থিতি ছিল অতি নগণ্য, এবং তার নীতিগুলো ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে ব্রিটেনের অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক অবস্থানকে দুর্বল করেছে।
ফ্লিট স্ট্রিট ফক্স তার লেখায় বলেন, “ফারাজের রাজনৈতিক উপস্থিতি ব্রিটিশ সমাজের সহনশীলতা, যুক্তিবাদ ও রসবোধকে ক্ষয় করছে।” তিনি আরও যুক্ত করেন, “যদি ফারাজ মানুষ না হয়ে বিস্কুট হতেন, তবে তার স্বাদ হতো ডাস্টবিনের রস ও ধুলোর মতো।”
শেষাংশে লেখক মন্তব্য করেন, ব্রিটেনের আজকের রাজনীতি ফারাজ-প্রভাবিত। তার জনপ্রিয়তা যতই ‘জনগণের কণ্ঠস্বর’ হিসেবে উপস্থাপন করা হোক না কেন, বাস্তবে এটি একটি বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত — যেখানে ভয়ের রাজনীতি ও ঘৃণার ভাষা দেশের নীতি নির্ধারণে প্রভাব ফেলছে।
ফ্লিট স্ট্রিট ফক্স-এর এই কলাম প্রকাশের পর থেকেই ব্রিটিশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। কেউ লেখকের বক্তব্যের প্রশংসা করছেন, আবার কেউ একে ‘চরমপন্থী ও ব্যক্তিগত আক্রমণ’ বলে সমালোচনা করছেন। তবে, এক বিষয় নিয়ে সবাই একমত — নাইজাল ফারাজ আবারও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে।
সূত্রঃ দ্য মিরর
এম.কে
০৬ অক্টোবর ২০২৫