লেবার পার্টি যদি জনগণের প্রত্যাশিত পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা আগামী নির্বাচনে জয়ের যোগ্য নয় বলে স্পষ্ট মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভস। এডিনবরার আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “মানুষ পরিবর্তনের জন্য লেবারকে ভোট দিয়েছে। আমরা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি উত্তরাধিকারসূত্রে পেয়েছি, কিন্তু মানুষ অধীর হয়ে আছে। পরিবর্তন না আনতে পারলে জয় প্রাপ্য হবে না।”
তিনি স্বীকার করেছেন, শীতকালীন জ্বালানি ভাতা ও কল্যাণ নীতিতে ইউ-টার্ন নেওয়ায় সরকারে অসন্তোষ বাড়ছে। রিভস দাবি করেন, কনজারভেটিভদের রেখে যাওয়া আর্থিক সংকট সামলাতে গিয়ে এবং জনসেবায় বিনিয়োগ বাড়াতে গিয়ে বাজেটের সীমাবদ্ধতার মুখে পড়তে হচ্ছে।
করনীতি নিয়ে তিনি বলেন, “কেউ বেশি কর দিতে চায় না, সবাই বেশি সরকারি ব্যয় চায়। কিন্তু ঋণ নেওয়া কোনো বিনামূল্যের বিকল্প নয়।” সম্পদ করের দাবিতে লেবারের ভেতরে চাপ বাড়লেও তিনি বর্তমান কর কাঠামোকে “যথাযথ” মনে করছেন।
স্কটল্যান্ডে লেবারের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক জরিপে দলটি তৃতীয় স্থানে, এসএনপি ও রিফর্ম ইউকের পিছনে রয়েছে। গ্র্যাংমাউথ তেল শোধনাগার বন্ধ হয়ে ৪০০ চাকরি হারানো এবং নর্থ সি-তে নতুন খনন নিষিদ্ধের মতো সিদ্ধান্তগুলো দলের জনপ্রিয়তায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। যদিও জুনে একটি উপনির্বাচনে জয় লেবারের জন্য ইতিবাচক সংকেত দেয়।
এডিনবরার সভায় রিভস জানান, সরকার স্কটল্যান্ডে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে। অ্যাবারডিনশায়ারে ২০০ মিলিয়ন পাউন্ডের কার্বন ক্যাপচার প্রকল্প শিল্পখাতে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে। তিনি স্বীকার করেন, তেল ও গ্যাস খাতে উইন্ডফল ট্যাক্স অজনপ্রিয় হলেও বিনিয়োগ ও উন্নয়নের জন্য তা প্রয়োজনীয়।
প্রশ্নোত্তরে রিভস সাবেক লেবার নেতা জেরেমি করবিনের নতুন রাজনৈতিক দলকে তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “করবিন প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দুটি সুযোগ পেয়েছিলেন, দেশ দু’বার তাকে প্রত্যাখ্যান করেছে। আবার চেষ্টা করতে পারেন, কিন্তু ফল একই হবে।”
করবিনের দাবি, এক সপ্তাহের মধ্যে ৫ লাখের বেশি মানুষ তাদের নতুন আন্দোলনে সাইন আপ করেছে। তবে রিভস এই সংখ্যা উড়িয়ে দিয়ে বলেন, “আমার বোন এলি রিভস ইমেইল পেয়েছে যে সে নাকি এই দলে যোগ দিয়েছে।”
রিভসের এই মন্তব্যে সভাস্থলে উপস্থিত দর্শকরা জোরালো করতালি দেন, যা তার বক্তব্যের সমর্থনকেই প্রতিফলিত করে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০৩ আগস্ট ২০২৫