সোমবার রাত সোয়া তিনটার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়েতে উড্ডয়নের প্রস্তুতি নিচ্ছিল কুয়েত এয়ারলাইন্স। আনুষ্ঠানিক সব প্রস্তুতি শেষ করে যাত্রীদের উঠিয়েই আকাশে ওড়ার কথা ছিল প্লেনটির। তবে শেষ মুহূর্তে বাঁধে বিপত্তি, প্লেনের গেটে উঠে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় আনুমানিক ৮ থেকে ১০ বছর বয়সী এক শিশুকে। বিমানের ভেতরে ঢুকছিল না সে।
পরে সংশ্লিষ্ট কেবিন ক্রু ছাড়াও দায়িত্বে থাকা অন্যরা শিশুটিকে নিজের সিটে গিয়ে বসার অনুরোধ করেন। এরপর জুনায়েদ মোল্লা নামের সেই ছোট্ট শিশুটি সিটে গিয়ে বসলেও তার আচরণে কিছু একটা সন্দেহ হয় কেবিন ক্রুর। এরপর শিশুটিকে তার বাবা-মায়ের কাছে গিয়ে বসতে বলার পরপরই চোখ কপালে উঠে সেই কেবিন ক্রুর। শিশু জুনায়েদ জানায়, তার বাবা-মা কেউ সেখানে নেই!
৮-১০ বছর বয়সী শিশুটি কার সঙ্গে প্লেনে উঠেছে সেটাও বলতে পারছিল না। এমনকি তার সঙ্গে পাসপোর্ট, টিকিট কিংবা বোর্ডিং পাস কিছুই ছিল না। পরবর্তীতে শিশুটিকে বিমান থেকে নামিয়ে রানওয়েতে থাকা কর্মীদের কাছে হস্তান্তর করা হলে তারা শিশু জুনায়েদকে বিমানবন্দরের ভেতরে নিয়ে আসেন এবং দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করেন।
এমন ঘটনার পর প্রশ্ন উঠেছে, হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। তবে বিষয়টি নিয়ে কেউ মুখ খুলছেন না।
আকাশপথে বিদেশ যেতে চাইলে পাসপোর্ট, ভিসা ছাড়াও বিমানবন্দর অতিক্রমের জন্য বোডিং পাসের দরকার হয়। শিশু জুনায়েদের ক্ষেত্রে এসবের কিছুই ছিল না। এমনকি তার সঙ্গে কোনো অভিভাবকও ছিল না।
শিশু জুনায়েদ মোল্লাকে বিমানবন্দর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের পর জানা যায়, তার বাবার নাম ইমরান মোল্লা। গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বড়ইহাতি গ্রামে। তবে পুলিশ ও এভিয়েশন সিকিউরিটি কেউই শিশু জুনায়েদ কীভাবে ঢাকায় এলো তা জানতে পারেনি।
এ বিষয়ে কথা হলে বিমানবন্দর থানার ওসি আজিজুল হক মিয়া বলেন, শিশুটির বাবা একজন দিনমজুর। ঘটনার চারদিন আগে থেকে নিখোঁজ ছিল জুনায়েদ। এর দেড় মাস আগেও সে নিখোঁজ হয়েছিল। আমরা শিশুটিকে তার চাচার কাছে বুঝিয়ে দেব। তার চাচা থানায় আসবেন। এ জন্য গোপালগঞ্জ থেকে রওয়ানা হয়েছেন।
এম.কে
১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩