লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ চীনের বিতর্কিত নতুন “সুপার দূতাবাস” নির্মাণের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছে। যার কারণে যুক্তরাজ্য সরকারের মন্ত্রীরা পুনরায় নির্মাণ পরিকল্পনা বিবেচনার জন্য কর্তৃপক্ষকে ডেকেছেন।
টাওয়ার ব্রিজের বিপরীতে বিশাল প্রস্তাবিত কনস্যুলেটটি ডিসেম্বরে ২০২২ সালে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল এবং ধারণা করা হয়েছিল যে চীন এই পরিকল্পনা পরিত্যাগ করতে যাচ্ছে।
তবে নতুন করে এই পরিকল্পনাটি এই বছরের শুরুতে পুনরায় জমা দেওয়া হয় এবং তথ্যমতে জানা যায় এখন একটি জন শুনানির পর মন্ত্রীরা তা বিবেচনা করবেন নির্মাণের পরিকল্পনার ব্যাপারে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম টাইমস জানায়, মেট্রোপলিটন পুলিশ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে এই স্থানটিতে নির্মাণ পরিকল্পনা নিয়ে বড় ধরনের প্রতিবাদ সমাবেশ গড়ে উঠতে পারে।
মেট্রোপলিটন পুলিশের সন্ত্রাসবিরোধী ইউনিটের জন স্যাভেল বলেছেন, প্রস্তাবিত সাইটের আশেপাশে এমন কোনো স্থান নেই যেখানে ১০০ জনের বেশি প্রতিবাদকারীকে সামলানো সম্ভব হবে।
ডিএসি স্যাভেল আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে এই দূতাবাসটি বিক্ষোভ আয়োজন হলে তা টাওয়ার অফ হ্যামলেটসের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
তিনি সতর্ক করেন আরো বলেন, প্রতিবাদ বা সমাবেশ সামলাতে ফ্রন্টলাইন অফিসারদের দায়িত্ব নিতে হতে পারে তবে প্রস্তাবিত সাইটটি অন্যান্য দূতাবাসের কাছাকাছি না হওয়ায় জরুরি পরিস্থিতিতে ফ্রন্টলাইন অফিসারদের পাওয়া কঠিন হতে পারে।
টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল পরিকল্পনা কর্মকর্তারা এটিকে “ভালভাবে ডিজাইন করা” বলে অভিহিত করে অনুমোদনের সুপারিশ করলেও পরবর্তীতে কাউন্সিল প্রকল্পটি প্রত্যাখ্যান করে।
তারা উল্লেখ করেন যে এটি আশেপাশের ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোর, যেমন টাওয়ার অফ লন্ডনের সম্ভাব্য ক্ষতি এবং পার্শ্ববর্তী রয়্যাল মিন্ট এস্টেটের বাসিন্দাদের উপর প্রভাব ফেলবে।
চীনা সরকার ছয় বছর আগে পুরোনো রয়্যাল মিন্ট কিনে নেয়, যা বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম দূতাবাস নির্মাণের পরিকল্পনার অংশ।
এই পরিকল্পনাটি কিছু প্রচারক ও স্থানীয় রাজনীতিবিদদের বিরোধিতার মুখে পড়েছে, এর প্রধান কারণ চীনের মুসলিম উইঘুর জনগণের প্রতি চীনা সরকারের দমননীতি।
টাওয়ার হ্যামলেটস যুক্তরাজ্যের মুসলিম জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশের বসবাস।
লন্ডনের চীনা দূতাবাসের এক মুখপাত্র পূর্বে বলেছিলেন:“পুনরায় জমা দেওয়া পরিকল্পনা যুক্তরাজ্যের পরিকল্পনা নীতি এবং দিকনির্দেশনা পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মতামত পুরোপুরি বিবেচনা করেছে। এটি একটি উচ্চ-মানের উন্নয়ন প্রকল্প। কূটনৈতিক মিশনের জন্য ভবন নির্মাণে সহায়তা প্রদান করা স্বাগতিক দেশের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা। চীন এবং যুক্তরাজ্যের উভয়েরই একে অপরের রাজধানীতে নতুন দূতাবাস নির্মাণের প্রয়োজন রয়েছে এবং উভয় পক্ষকে একে অপরকে সহযোগিতা প্রদান করা উচিত।”
সূত্রঃ দ্য স্ট্যান্ডার্ড
এম.কে
২৭ নভেম্বর ২০২৪