TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

‘বরিসওয়েভ’–এর আর্থিক চাপ ঠেকাতে অভিবাসন নীতি কড়া হচ্ছে যুক্তরাজ্যে, বলছেন বিশ্লেষকরা

ব্রিটেনে অভিবাসন এবং কল্যাণ ব্যবস্থা পুনর্গঠনে হোম সেক্রেটারি শাবানা মাহমুদের প্রস্তাবিত কঠোর সংস্কারকে ঘিরে ব্যাপক রাজনৈতিক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে নাগরিকত্ব না পাওয়া পর্যন্ত নতুন আগত অভিবাসীদের বেনিফিটের যোগ্যতা বন্ধ করার সিদ্ধান্তকে সমর্থন ও সমালোচনা—দুই দিক থেকেই প্রবল প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালের পর থেকে বিদেশি নাগরিকদের বেনিফিট গ্রহণের হার ৫০ শতাংশ বেড়েছে, যা নিয়ে সরকারের অভিমত—এটি “দীর্ঘদিনের অনিয়ন্ত্রিত এক কেলেঙ্কারি”, এবং এর সংশোধন জরুরি হয়ে পড়েছে। তাই কল্যাণব্যবস্থার ওপর চাপ কমাতে নাগরিকত্বের আগে সুবিধা বন্ধ রাখাকে সরকার যৌক্তিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে।

স্থায়ী বসবাসের যোগ্যতার নিয়মেও বড় পরিবর্তন আনতে চাইছে সরকার। এতদিন নিম্ন আয়ের পাঁচ বছরের চাকরিই ছিল ILR পাওয়ার মূল যোগ্যতা, যা অনেকের মতে অতিরিক্ত সহজ মানদণ্ড। মাহমুদের নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, এই সময়সীমা ১০ বছরে উন্নীত করা হবে। উচ্চআয়কারীরা আগের মতোই দ্রুত ILR–এর সুযোগ পাবেন, তবে নিম্ন আয়, বেনিফিট গ্রহণকারী বা অবৈধভাবে আগতদের ক্ষেত্রে হবে আরও কঠোরতা।

সরকারের শীর্ষ মহল মনে করছে, বোরিস জনসন ও ঋষি সুনাকের আমলে মহামারীর পর যে অভিবাসন উল্লম্ফন—“বরিসওয়েভ”—শুরু হয়েছিল, তার বড় একটি অংশ অদূর ভবিষ্যতে ILR ও বেনিফিটের জন্য যোগ্য হয়ে যাবে। এটি রাষ্ট্রের জন্য “সম্ভাব্য বিপর্যয়কর আর্থিক চাপ” সৃষ্টি করতে পারে বলে সরকার মনে করছে।

সমালোচকরা যুক্তি দিচ্ছেন, প্রস্তাবিত ব্যবস্থা যথেষ্ট কঠোর নয়, কারণ নির্দিষ্ট শ্রেণির অভিবাসীদের ILR-এর পথ পুরোপুরি বন্ধ না করে কেবল বিলম্ব করা হচ্ছে। পাশাপাশি ব্রিটেনের দুর্বল অভিবাসন আইন প্রয়োগ ব্যবস্থা এসব নতুন নিয়ম কার্যকরভাবে প্রয়োগ করতে পারবে কি না, সেখানেও প্রশ্ন উঠছে।

এদিকে বামপন্থী মহল ইতোমধ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যে নিম্ন আয়ের নতুন অভিবাসীরা দীর্ঘ সময় বেনিফিটের বাইরে থাকবে। অবৈধভাবে আগতদের ওপর অতিরিক্ত শাস্তি আরোপ করাও মানবাধিকার নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে তাদের দাবি।

রাজনৈতিক চাপের মুখে থাকা প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমারের জন্য এটি একটি বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলীয় এমপিদের সম্ভাব্য বিদ্রোহ সরকারের পরিকল্পনাকে দুর্বল করতে পারে। বিশ্লেষকদের মতে, এখন সরকারের সবচেয়ে জরুরি কাজ—এই নীতি বাস্তবায়নে দৃঢ় থাকা এবং অনমনীয় অবস্থান নিশ্চিত করা।

সূত্রঃ দ্য টেলিগ্রাফ

এম.কে

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে বন্ধ হচ্ছে নেসলে, চাকরি হারাচ্ছেন ৬০০ কর্মী

রাজা চার্লসের কয়েক দশকের প্রেম, কে এই ক্যামিলা

নিউজ ডেস্ক

স্কটিশ পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থী ফয়ছল চৌধুরী