যুক্তরাজ্যের ভাসমান আশ্রয়কেন্দ্র বিবি স্টকহোম নামের বার্জটিতে রাখা আশ্রয়প্রার্থীদের আর দেশটিতে রাখা হবে কি-না, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত দেয়ার আগে সেখান থেকে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে তাদের৷
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, অন্তত তিনশ জন আশ্রয়প্রার্থীকে বিবি স্টকহোম থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে৷ তবে এখনও আরো একশ জন আশ্রয়প্রার্থীকে রাখা হয়েছে বার্জটিতে৷
আশ্রয়প্রার্থীদের অস্থায়ী বাসস্থানে নিয়ে যাওয়ার দুটি দিক নিয়ে আলোচনা হচ্ছে৷ একটি দিক হলো, যারা যুক্তরাজ্যে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন বা যাদের আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে তাদের অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে৷
আরেকটি দিক হলো, যাদের আশ্রয় আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে তাদের এক মাসের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হবে৷ এবং এই এক মাসের মধ্যে তাদের নিজেদের থাকার জায়গা নিজেদের ঠিক করতে বলা হবে৷
ডরসেটের পোর্টল্যান্ডে নোঙ্গর করা আছে বিবি স্টকহোম নামের বার্জটি৷ আগামী বছরের জানুয়ারিতে বার্জটির চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে৷ রক্ষণশীলেরা আশ্রয়প্রার্থীদের আবাসনের জন্য এই বার্জটি ঠিক করলেও চুক্তি নবায়ন করবে না বলে জানিয়ে রেখেছে বর্তমান ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি সরকার৷
বার্জটিতে শুধু পুরুষ আশ্রয়প্রার্থীদের রাখা হয়৷ ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বার্জ থেকে সরিয়ে নেয়ার পর আশ্রয়প্রার্থীদের কাউকেই পোর্টল্যান্ড, ওয়েমাউথ বা বৃহত্তর ডরসেট কাউন্সিল এলাকায় রাখা হবে না৷
তাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে রাখা হবে বলেও জানিয়েছে হোম অফিস৷ তবে অধিকার কর্মীরা বলছেন, আশ্রয়প্রার্থীদের কার্ডিফ, উলভারহ্যাম্পটন, ব্রিস্টল এবং ওয়ার্কসপসহ বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে দেখেছেন তারা৷
বিবি স্টকহোমে রাখা আশ্রয়প্রার্থীদের সহযোগিতা দিয়ে আসছে পোর্টল্যান্ড গ্লোবাল ফ্রেন্ডশিপ গ্রুপ৷ সংস্থাটির একজন জোভানা লুইস বলেন, ‘‘আশ্রয়প্রার্থীদের আলাদা আলাদা ট্যাক্সি করে নতুন আবাসনে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ এই অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রগুলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দেখভাল করে৷ আশ্রয়প্রার্থীদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার আগ পর্যন্ত অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে তাদের তিন থেকে চার সপ্তাহ রাখা হতে পারে৷’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘যদি তাদের (যুক্তরাজ্যে) থাকার অধিকার দেয়া হয়, তবে বিকল্প আবাসন খুঁজে বের করতে ৩০ দিন সময় পাবেন তারা৷ আর যদি তাদের প্রত্যাখ্যান করা হয়, তবে আপিলের সুযোগ থাকছে৷ আপিল চলাকালীন সহযোগিতাও পাবেন তারা৷’’
একটি বিবৃতিতে হোম অফিসের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘‘এই সরকার উত্তরাধিকারসূত্রে এমন একটি অবস্থায় রয়েছে, যেখানে হাজার হাজার আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন প্রক্রিয়াকরণের অপেক্ষায় রয়েছে৷’’
তিনি আরো জানিয়েছেন, ‘‘আশ্রয় আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তি করতে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে৷ এর মাধ্যমে আগামী দশ বছরে করদাতাদের সাতশ কোটি পাউন্ড অর্থ সাশ্রয় হবে৷ যুক্তরাজ্যে থাকার অধিকার নেই এমন ব্যক্তিদের ফেরত পাঠাতে বড় ধরনের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে৷ এতে দীর্ঘমেয়াদে হোটেলের উপর নির্ভরশীলতা এবং আবাসনখাতে ব্যয় কমবে৷’’
তিনি বিবৃতিতে আরো বলেছেন, ‘‘আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য হোটেলের ব্যবহার বন্ধে আমরা পুরোপুরি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ৷’’
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
৩১ অক্টোবর ২০২৪