ওয়েলফেয়ার সংক্রান্ত প্রতারণা ধরার জন্য কয়েক মিলিয়ন ব্যাংক অ্যাকাউন্টকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নজরদারি করার পরিকল্পনা বাতিল করা উচিত বলে মনে করে যুক্তরাজ্যের একদল ক্যাম্পেইনার গ্রুপ। তারা মনে করেন অতিরিক্ত নজরদারিতে পোস্ট অফিস হরিজন কেলেঙ্কারির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।
ওয়েলফেয়ার ফ্রডের কারণে বাৎসরিক ৮ বিলিয়ন পাউন্ডের মতো ফ্রডের ঘটনা সংগঠিত হচ্ছে। ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশন বিভাগ তাই অতিরিক্ত ক্ষমতা চায় যাতে বিভিন্ন ব্যাংক একাউন্টের উপর নজরদারি করা যায়। তাই ব্যাংক একাউন্ট নজরদারিতে এই আইন পাস করার পরিকল্পনা করছে কনজারভেটিভ সরকার। ডিডাব্লুপি বিভাগ ব্যাংক একাউন্ট নজরদারিতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করতে পারে বলেও খবরে জানা যায়।
ডিডাব্লুপি’র এক মুখপাত্র বলেছেন, ” মেম্বার অব স্টাফদের যে কোন বেনিফিট হিসাব স্থগিত করার ক্ষমতা থাকবে। তবে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সেই একাউন্ট ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। করদাতাদের অর্থের দায়িত্ব নিতে আমাদের দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। যার জন্য জালিয়াতির বিরুদ্ধে আমাদের এই কড়া নজরদারি। ”
তবে ওয়েলফেয়ার বেনিফিট দাবিদারদের মধ্যে যারা ডিসেবল বা প্রতিবন্ধী ব্যক্তি , চাকুরীহীন অবস্থায় আছেন তারা যাতে কোনো ধরনের সমস্যার মধ্যে না পড়েন তা নিয়ে সোচ্চার রয়েছে মানবাধিকার বিভিন্ন সংস্থা।
৪২ টি মানবিক সংগঠনের বিভিন্ন দায়িত্বশীল ব্যক্তি
ওয়ার্ক এণ্ড পেনশন সেক্রেটারি মেল স্ট্রাইডের উদ্দেশ্যে একটি চিঠিতে লিখেছেন, “ কল্যাণ ব্যবস্থায় প্রায় ২২.৬ মিলিয়ন ব্যক্তি রয়েছেন। যারা প্রতিবন্ধী, অসুস্থ, চাকুরীর সন্ধানকারী এবং পেনশনার। তাদের সাথে সন্দেহের বশবর্তী হয়ে অপরাধীদের মতো আচরণ করা উচিত নয়। হরিজন কেলেঙ্কারীতে শত শত লোকের উপর ত্রুটিযুক্ত সফ্টওয়্যার থেকে তথ্য নিয়ে ভুলভাবে মামলা করা হয়েছিল। সরকারকে অবশ্যই এই ভুল থেকে শিখতে হবে। ”
গবেষকরা জানিয়েছেন গত বছর প্রতিদিন প্রায় ৩৫০ জন স্বল্প বেতনের শ্রমিক ওয়েলফেয়ার সিস্টেম নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ উত্থাপিত করেন। যাতে দেখা যায় সেইসব কম আয়ের পরিবারের সদস্যদের বেনিফিট জালিয়াতির দোহাই দিয়ে অনেকের বেনিফিট স্থগিত করা হয়েছে। যা হতে সেইসব পরিবারের উপর আর্থিক কষ্ট এবং মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। ২০২২ সালে, জাতীয় নিরীক্ষা অফিস সতর্ক করে যে ইউনিভার্সাল ক্রেডিট সিস্টেমে জালিয়াতি সনাক্ত করতে ব্যবহৃত একটি ডিডাব্লুপি অ্যালগরিদম পক্ষপাতদুষ্ট ফলাফল উৎপন্ন করছে। যা অজান্তেই অনেক অভাবী লোকেদের বেনিফিট সুবিধা প্রাপ্ত হতে বঞ্চিত করেছে।
উল্লেখ্য যে, ত্রুটিযুক্ত কম্পিউটার সিস্টেমের তথ্য হতে কয়েকশো পোস্ট অফিস অপারেটরকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। যাদের অনেকের জেল ও জরিমানা প্রদান করা হয়। ভুলভাবে হিসাব প্রদর্শন করার কারণে অনেক পোস্ট অফিসের শাখা হতে অর্থ চুরি হয়েছিল বলে অভিযোগ করে এই শাস্তি প্রদান করা হয়। যা ইংল্যান্ডের ইতিহাসে এক বড় কেলেঙ্কারি বলে জানা যায়। নতুনভাবে এই ধরনের কেলেঙ্কারি যাতে আর না ঘটে সেই ব্যাপারে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০৫ মার্চ ২০২৪