ভারত যদি পাকিস্তানের দিকে প্রবাহিত নদীগুলোর পানি আটকে দেয়, তাহলে চীনও ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ভারতে সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে—এমন কৌশলগত হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকেরা বলছেন, পানিকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করলে এর বহুমাত্রিক জবাব মিলবে, যার একটি চীনকেও জড়াতে পারে।
গত শনিবার (২৪ মে) করাচিভিত্তিক থিংক ট্যাংক ‘পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স’ (PIIA) আয়োজিত ‘পাকিস্তান-ভারত সংঘাত’ শীর্ষক আলোচনাসভায় এই মন্তব্য উঠে আসে। পাকিস্তানের সাবেক কূটনীতিক ও সামরিক বিশ্লেষকেরা আলোচনায় অংশ নেন এবং ভারত-পাকিস্তান জলসীমান্ত ইস্যুতে ভারতের অবস্থানকে “আক্রমণাত্মক এবং একতরফা” বলে অভিহিত করেন।
সভায় বক্তারা দাবি করেন, ভারত যদি ইন্দাস পানিচুক্তির আওতাভুক্ত নদীগুলোর প্রবাহ পাকিস্তানের দিকে সীমিত বা বন্ধ করার চেষ্টা করে, তবে পাকিস্তান কেবল কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়াই নয়, কৌশলগত মিত্র চীনের সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগেও যেতে পারে। ব্রহ্মপুত্র নদ, যা তিব্বতের যারলুং ৎসাংপো হিসেবে উৎপন্ন হয়ে ভারত ও বাংলাদেশ হয়ে বঙ্গোপসাগরে মিশেছে, সেটির ওপর চীনের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, চীন চাইলে এই নদীর পানি সীমিত করতে পারে, যা উত্তর-পূর্ব ভারতের জন্য চরম ক্ষতির কারণ হবে।
একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা বলেন, “যদি পানি অস্ত্র হয়, তবে এটি কেবল ভারতের হাতেই থাকবে না। পাকিস্তানেরও বন্ধুরা আছে—বিশেষ করে এমন এক বন্ধু যার ওপর ব্রহ্মপুত্র নির্ভর করে।”
ভারত-পাকিস্তান পানি সংকট নতুন নয়। ১৯৬০ সালের ইন্দাস পানি চুক্তি অনুযায়ী, ছয়টি নদীর পানি বণ্টনে আন্তর্জাতিক সম্মতিতে পৌঁছায় দুই দেশ। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতের কিছু পানি প্রকল্প নিয়ে পাকিস্তান বারবার আপত্তি জানিয়ে আসছে। ভারত বলছে, চুক্তির সীমার মধ্যেই তারা কাজ করছে।
বিশ্লেষকরা সতর্ক করে বলেন, জলসম্পদকে যুদ্ধের হাতিয়ার বানানো হলে তা শুধু পরিবেশগত বিপর্যয়ই ডেকে আনবে না, বরং এই অঞ্চলকে আরও অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেবে।
সূত্রঃ ডন
এম.কে
২৬ মে ২০২৫