ভূমধ্যসাগরের বুকে ছোট্ট এক দ্বীপ পিয়ানোসা। সেখানেই অপরাধীদের সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে বাস করছেন এক ‘রহস্যময়ী‘ নারী!
ইতালীয় ঐ মহিলার নাম জিউলিয়া মানকার। একটা সময় ছুটি কাটাতে দ্বীপে বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার আর বাড়ি ফেরা হয়নি।
২০১১ সালে পিয়ানোসা দ্বীপে বেড়াতে যান জিউলিয়া। উঠেন সেখানকার একটি হোটেলে। নাম ‘মিলেনা‘।
কিন্তু অচিরেই তিনি জানতে পারেন, হোটেলের সমস্ত কর্মীই জেলখাটা কুখ্যাত অপরাধী। তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে হোটেলের কাজে বহাল করেছে জেল কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি জানতে পেরে কৌতুহলী হয়ে পড়েন জিউলিয়া। হোটেলে কর্মরত দাগী আসামিদের সম্পর্কে আরও জানতে সেখানকার ম্যানেজারের সঙ্গে আলাপ জমান তিনি।
হোটেলের ম্যানেজার তাকে জানান আর্থিক সংকটে ভুগছেন তারা। হোটেল বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনাও করা হচ্ছে। হোটেল বন্ধ হয়ে গেলে সেখানকার কর্মীদের ফের জেলে নিয়ে যাওয়া হবে বলে জানতে পারেন জিউলিয়া।
স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে চাওয়া ওই মানুষগুলিকে ফের জেলের কাল–কুঠুরিতে ফিরতে হবে জানতে পেরে তৎপর হন ইতালীয় তরুণী। প্রায় একক চেষ্টাতেই হোটেলের আর্থিক সংকট মিটিয়ে দেন তিনি।
তবে ওই ঘটনার পর থেকে মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে পড়েন জিউলিয়া। পিয়ানোসা দ্বীপ আর হোটেল মিলেনা ছেড়ে আর আসতে পারেননি তিনি।
বর্তমানে ওই হোটেলে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করছেন জিউলিয়া। মোট ১০ জন কুখ্যাত জেলখাটা আসামিকে নিয়ে দিব্যি চলছে হোটেলটি।
সম্প্রতি ইতালীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জিউলিয়া জানিয়েছেন, “হোটেলে কর্মরত আসামিরা রান্না ঘরের কাজ থেকে শুরু করে বাগান করাসহ সব ধরনের কাজই করে থাকেন। বিকেলে বা সন্ধ্যায় খাবার পরিবেশন করার দায়িত্বও তাদেরও দেওয়া হয়েছে। এর জন্য পারিশ্রমিক পান তারা।”
পিয়ানোসা দ্বীপের হোটেল মিলেনাতে মোট ঘরের সংখ্যা ১১। হোটেলটিতে আলাদ করে রেস্তোরাঁ ও একটি পানশানা রয়েছে। পানশালা চালানোর দায়িত্বও কুখ্যাত অপরাধীদের দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জিউলিয়া।
ইতালীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় বাসিন্দা আর হোটেলের কর্মীরা নতুন নাম দিয়েছে জিউলিয়ার। সকলে আদর করে তাকে ‘পিয়ানোসার রানি‘ বলে ডাকেন।
এম.কে
০৬ মার্চ ২০২৩