14.4 C
London
September 20, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো যাবে না কোয়েলোকেঃ যুক্তরাজ্য আদালত

যুক্তরাজ্যের হাইকোর্ট ঝুঁকিপূর্ণ এক অটিজম আক্রান্ত ব্যক্তিকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের স্বরাষ্ট্র দফতরের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে। সাইবার অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত পর্তুগিজ নাগরিক ডিয়োগো সান্তোস কোয়েলোর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে সর্বোচ্চ ৫২ বছরের কারাদণ্ডের শাস্তির সম্ভাবনা ছিল।

২৫ বছর বয়সী কোয়েলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ‘রেইডফোরামস’ নামের একটি হ্যাকিং ফোরাম পরিচালনা করতেন, যেখানে তথ্য ফাঁস করে প্রতারণা সহজতর করা হতো। যুক্তরাজ্য সরকারও স্বীকার করেছে যে কিশোর বয়সেই তিনি অনলাইনে প্রাপ্তবয়স্কদের প্রলোভন ও শোষণের শিকার হয়েছিলেন, যা তাকে অপরাধে জড়িয়ে ফেলে।

কোয়েলোর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও পর্তুগাল উভয় দেশই প্রত্যর্পণের আবেদন করেছে। তবে তিনি আত্মহত্যার অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন বলে চিকিৎসা মূল্যায়নে জানা গেছে। কোয়েলো আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে কারাগারে গেলে কোনো পারিবারিক সহায়তা ছাড়া তিনি বাঁচতে পারবেন না।

হাইকোর্টের বিচারপতি লিন্ডেন রায়ে বলেছেন, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র সচিব জেমস ক্লেভারলি সিদ্ধান্ত দেওয়ার সময় অভিযুক্তের পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের নিকটতা, সংশ্লিষ্ট বিচারব্যবস্থার সঙ্গে সম্পর্ক, সম্ভাব্য ফলাফল, মানসিক স্বাস্থ্য ও আধুনিক দাসত্বের শিকার হওয়ার বিষয়গুলো যথাযথভাবে বিবেচনা করেননি।

কোয়েলো আদালতের রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করে বলেছেন, এটি তার জন্য নতুন আশার আলো। তিনি জানান, তিনি নিজ দেশ পর্তুগালে প্রত্যর্পণে রাজি এবং সেখানে বিচার প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হতে প্রস্তুত। তবে তিনি কেবল ন্যায্যতা ও মানবিক আচরণ চান।

আদালত আরও উল্লেখ করেছে, কোয়েলো ও সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে স্বরাষ্ট্র সচিবের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে নিজেদের বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল। এর ফলে বর্তমান স্বরাষ্ট্র সচিব শাবানা মাহমুদ নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় কোয়েলো কেন পর্তুগালে পাঠানো উচিত সে যুক্তি শুনবেন।

আইনজীবী বেন কুপার বলেন, পর্তুগাল তার নাগরিকের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মোকাবিলায় যথেষ্ট সক্ষম। তার মক্কেল ইতোমধ্যেই নিজ দেশে প্রত্যর্পণে সম্মতি দিয়েছেন। আদালতের এই রায়ে প্রমাণিত হয়েছে, এমন গুরুতর সিদ্ধান্তের আগে সঠিক তথ্য ও প্রমাণের যথাযথ গুরুত্ব দিতে হবে।

এ মামলার সাদৃশ্য রয়েছে গ্যারি ম্যাককিননের সঙ্গে, যিনি পেন্টাগনে হ্যাকিংয়ের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে এক দশক লড়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে মানবাধিকার ও আত্মহত্যার ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে তার প্রত্যর্পণ আটকে দেন।

হোম অফিস জানিয়েছে, তারা কোনো মামলার বিষয়ে মন্তব্য করে না।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আরো পড়ুন

চলতি বছর যুক্তরাজ্যের মূল্যস্ফীতি কমার প্রত্যাশা

হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন ব্রিটিশ রাজনীতিকরা

অপরাধ কমাতে বন্দির সংখ্যা কমাতে চান স্টারমার