মিসরের স্কুলগুলোতে ছাত্রীদের নেকাব পরা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হিজাব পরতেও কাউকে বাধ্য করা যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে দেশটির সরকার। মিসরের রাষ্ট্রায়াত্ত্ব সংবাদপত্রের বরাতে বুধবার এই তথ্য জানা যায়।
হিজাব-নেকাব বিষয়ে গত সোমবার একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন মিসরীয় শিক্ষামন্ত্রী রেদা হেগাজি। এতে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীরা স্কুলে তাদের চুল ঢাকবে কি না, সেটি তাদের একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়। তবে কোনোভাবেই মুখ ঢাকা যাবে না।
বিজ্ঞপ্তিতে সরাসরি নেকাব শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি। এতে বলা হয়েছে, মুখ দেখা যাবে না এমন কোনো আচ্ছাদন গ্রহণযোগ্য নয়। চুলের আচ্ছাদনটি অবশ্যই মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় শিক্ষা অধিদপ্তর নির্বাচিত রঙের হতে হবে। এই সিদ্ধান্ত আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া নতুন শিক্ষাবর্ষে কার্যকর হবে বলে খবরে জানা যায়।
সরকারের এই সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মিসরীয়রা। ব্যক্তিগত সুরক্ষার খাতিরে তাদের কেউই নামপ্রকাশে রাজি হননি।
আলেকজান্দ্রিয়া থেকে ৩৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি বলেছেন, তিনি স্কুলে নেকাব পরার বিপক্ষে। তার যুক্তি, শিক্ষার্থীদের সাহায্য করতে বা প্রয়োজনীয় মনোযোগ দেখানোর জন্য তাদের শারীরিক ভাষা ও মুখের অভিব্যক্তি বোঝা দরকার শিক্ষকদের। এতে বাধা সৃষ্টি করে স্কুলে এমন কোনো কিছুর অনুমতি দেওয়া উচিত নয়।
৩৮ বছর বয়সী আরেক ব্যক্তি জানান, নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় তিনিও সরকারের সিদ্ধান্তের পক্ষে। তার মতে, স্কুলে কে ঢুকছে কে বের হচ্ছে কর্তৃপক্ষের তা শনাক্ত করতে পারা জরুরি।
তবে এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছেন অনেকে। কায়রো থেকে ৪৫ বছর বয়সী এক লেখক বলেন, সবখানে নারীরাই যে ভুক্তভোগী হন, এটি তার আরেকটি নমুনা। ৩৩ বছর বয়সী এক প্রকৌশলী বলেন, নারীরা স্কুলে নিকাব পরবে কি পরবে না, এটি তাদের স্বাধীনতার অংশ।
উল্লেখ্য যে, মিশর এমন এক সময় হিজাব-নেকাব নিয়ে কথা বলল যখন ফ্রান্সে হিজাব নিষিদ্ধ নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। তাছাড়া ইতিমধ্যে হিজাব পড়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খেলায়ও অংশ নিয়েছে অনেক মুসলিম মহিলা খেলোয়াড়।
এম.কে
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩