6.6 C
London
December 19, 2024
TV3 BANGLA
Uncategorizedফিচারশীর্ষ খবর

যুক্তরাজ্য ও ব্রিটেনের মধ্যে পার্থক্য: ইংল্যাংন্ড কী আলাদা দেশ?

আমরা অনেকেই যুক্তরাজ্য বা ইউনাইটেড কিংডম (ইউকে) এবং গ্রেট ব্রিটেনকে একই বলে মেনে নিই। কোথাও লেখা দেখি যুক্তরাজ্য, কোথাও ব্রিটেন। ফুটবল-ক্রিকেটের মাঠে আবার ইংল্যান্ড নামে ডাকা হয়। অনেকে অবাক হন এই ভেবে, একই দেশের আবার তিনটা নাম হয় কী করে? নাকি তিনটা দেশ আলাদা?

 

আসলে যুক্তরাজ্য, গ্রেট ব্রিটেন ও ইংল্যান্ডের মধ্যে রয়েছে তাৎপর্যপূর্ণ ভৌগলিক ও রাজনৈতিক পার্থক্য! আসুন পরিষ্কার হই বিষয়টি ।

 

গ্রেট ব্রিটেন নামটা এসেছে ভৌগলিক পরিপ্রেক্ষিতে। ওয়েলস, স্কটল্যান্ড ও ইংল্যান্ড – এই তিন ভূখন্ডকে একসঙ্গে বলে গ্রেট ব্রিটেন। এ তিনটি ছাড়াও এদের কাছাকাছি অবস্থাকারী অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দ্বীপ গ্রেট ব্রিটেনের অন্তর্গত; যেমন – আইল অব ওয়াইট। এ দ্বীপগুলো সব উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত।

 

মধ্যযুগে শুধু ব্রিটেন বলতে ফ্রান্স এর সর্ব উত্তরপশ্চিমের একটি অংশকে বোঝাতো, যা বর্তমানে ‘ব্রিটানি’ নামে পরিচিত। এ জন্য ইংল্যান্ড অংশের দ্বীপগুলো একত্রে শুধু ব্রিটেন হিসেবে সম্বোধিত না হয়ে বিশেষভাবে  ‘গ্রেট ব্রিটেন’ হিসেবে পরিচিত ।

 

অন্যদিকে যুক্তরাজ্য নামটি অনেকটাই রাজনৈতিক। ইউনাইটেড কিংডম বা যুক্তরাজ্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্রকে নির্দেশ করে। গ্রেট ব্রিটেনের সবটুকু (ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড) এবং তার সঙ্গে উত্তর আয়ারল্যান্ড মিলে গঠিত রাষ্ট্রই হচ্ছে যুক্তরাজ্য। অর্থাৎ গ্রেট ব্রিটেন দ্বীপে উত্তর আয়ারল্যান্ড না থাকলেও ইউনাইটেড কিংডমে রয়েছে।

ইংল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ছাড়াও আয়ারল্যান্ড নামক আরকটি ভূখণ্ড রয়েছে এর ঠিক পাশেই। আসলে আয়ারল্যান্ড নামে কোনো দেশ নেই। একটি দেশ আছে, নাম রিপাবলিক অফ আয়ারল্যান্ড। আরেকটি দেশের নাম নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড। এরা পাশাপাশি অবস্থিত।

 

ব্রিটেনের সবটুকু (ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড) এবং তার সঙ্গে উত্তর আয়ারল্যান্ড মিলে গঠিত রাষ্ট্রই হচ্ছে যুক্তরাজ্য। অর্থাৎ গ্রেট ব্রিটেন দ্বীপে উত্তর আয়ারল্যান্ড না থাকলেও ইউনাইটেড কিংডমে রয়েছে। এই রাষ্ট্রের সরকারী নাম হচ্ছে – ‘দ্য ইউনাইটেড কিংডম অব গ্রেট ব্রিটেন অ্যান্ড নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড’।

 

যুক্তরাজ্য একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র একথা ঠিক, কিন্তু যে যে দেশ মিলে যুক্তরাজ্য গঠিত (ইংল্যান্ড, ওয়েলস, স্কটল্যান্ড, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড) তারা নিজেরাও নিজেদের দেশের ব্যাপারে শতভাগ কর্তৃত্ব রাখে। তাদের জনগণরা চাইলে গণভোটের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য থেকে বেরিয়ে একক স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করতে পারে।

 

অনেকে ইংল্যান্ডকে যুক্তরাজ্য ভেবে ভুল করেন। কারণ যে চারটি দেশ নিয়ে যুক্তরাজ্য গঠিত, তার মধ্যে ইংল্যান্ড আয়তন এবং জনসংখ্যার দিক দিয়ে বাকি তিনটির চাইতে বড়। এর চাইতেও মজার ব্যাপার হচ্ছে, লন্ডন হলো যুক্তরাজ্যের রাজধানী, যা আবার ইংল্যান্ডেরও রাজধানী!

 

ইংল্যান্ডের উত্তর দিকে রয়েছে স্কটল্যান্ড, পশ্চিমে ওয়েলস এবং উত্তর-পশ্চিমে একটু দূরেই নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড। এই চারটি দেশেরই আলাদা আলাদা পতাকা, রাজধানী, সরকার ব্যবস্থা, নির্বাচনী ব্যবস্থা এবং সংসদীয় ব্যবস্থাও রয়েছে।

 

এই চারটি দেশের নাগরিকদের আবার আলাদা পাসপোর্ট নেই। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষিতে তারা সবাই ব্রিটিশ নাগরিক। বিদেশ ভ্রমণে ব্রিটিশ পাসপোর্ট ব্যবহার করেন।

 

সুতরাং অল্প কথায় বলা যায়:

ইংল্যান্ড নামক ভুখণ্ডটি একটি দেশ। এরই মতো স্কটল্যান্ড, ওয়েলস ও আশেপাশের দ্বীপগুলোকে বলা হয় গ্রেট ব্রিটেন। গ্রেট ব্রিটেন বলতে শুধুই একটি দ্বীপপুঞ্জকে বোঝায়, যা কোনো সার্বভৌম রাষ্ট্র নয়। আবার, যুক্তরাজ্য একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র যার একটি অংশ হলো গ্রেট ব্রিটেন।

 

আরো পড়ুন

ক্রিসমাসের আগেই ফিরছে লন্ডনের ওভারগ্রাউন্ড নাইট সার্ভিস

ভারতের কোভিশিল্ডের টিকায় ভ্রমণ পাস দেবে না ইউরোপ

ইংল্যান্ড সমর্থকদের হেনস্থার শিকার ড্যানিশরা

অনলাইন ডেস্ক