বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের প্রকাশিত একটি জরিপ এবং আইএমএফ-এর উন্নত প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাস অনুযায়ী যুক্তরাজ্য বিনিয়োগের জন্য দ্বিতীয় সর্বাধিক আকর্ষণীয় দেশ হিসেবে উঠে এসেছে। যা যুক্তরাষ্ট্রের পরেই অবস্থান করছে।
পিডব্লিউসি (PwC) কর্তৃক পরিচালিত বার্ষিক জরিপে ১০৯টি দেশের প্রায় ৫,০০০ প্রধান নির্বাহীর মতামত সংগ্রহ করা হয়। সুইজারল্যান্ডের দাভোসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (WEF) শুরুতে প্রকাশিত এই জরিপে যুক্তরাজ্য দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। যা চীন, জার্মানি এবং ভারতকে পেছনে ফেলেছে।
এটি জরিপের ২৮ বছরের ইতিহাসে যুক্তরাজ্যের জন্য সর্বোচ্চ স্থান। ২০২৪ সালের চতুর্থ স্থান থেকে উন্নীত হয়ে ২০২৫ সালে দ্বিতীয় স্থানে পৌঁছেছে দেশটি। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অর্থনীতির উপর ঘনিয়ে থাকা নেতিবাচক ধরণ থেকে এই জরিপ ভিন্ন এক চিত্র ফুটিয়ে তুলেছে যুক্তরাজ্যের।
জরিপের ফলাফল সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভস বলেন, “এই জরিপের ফলাফলগুলো দেখায় যে বৈশ্বিক সিইওরা যুক্তরাজ্যের প্রতি আস্থা রাখছেন। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের জন্য যুক্তরাজ্য অন্যতম আকর্ষণীয় গন্তব্য এবং এই বিনিয়োগই যুক্তরাজ্যের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সহায়তা করবে।”
রিভস নিজেই দাভোস সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং বুধবার ও বৃহস্পতিবার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন, যেখানে যুক্তরাজ্যের বিনিয়োগ অংশীদারিত্বের দিক তুলে ধরা হবে। যুক্তরাজ্য লেবার সরকারের ব্যবসা সচিব জোনাথন রেনল্ডসও উপস্থিত থাকবেন সম্মেলনে বলে তথ্যমতে জানা যায়।
PwC-এর জরিপে ১৪% প্রধান নির্বাহী যুক্তরাজ্যকে ভবিষ্যতের মূল পুঁজি বিনিয়োগের জন্য গন্তব্য হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এর উপরে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র (৩০%)।
পরবর্তী স্থানে রয়েছে জার্মানি (১২%) এবং চীন (৯%)। তবে জার্মানি মন্দার সাথে লড়াই করছে এবং চীনের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত, বিশেষত ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন আমদানি শুল্কের পরিকল্পনার কারণে।
PwC ইউকের সিনিয়র পার্টনার মার্কো আমিত্রানো এই ফলাফলকে “যুক্তরাজ্যের প্রতি ব্যবসা ও বিনিয়োগের আস্থার প্রতিফলন” হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি আরও যোগ করেন, “ এই সময়ে যুক্তরাজ্যের আপেক্ষিক স্থিতিশীলতা এবং প্রযুক্তি দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খাত। তাই দেশটির শক্তি ছোট করে দেখার মতো নয়। তবে আত্মতুষ্টির কোনো জায়গা নেই।”
গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) যুক্তরাজ্যের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ১.৫% থেকে বাড়িয়ে ১.৬% করেছে। এর পেছনে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে শ্রম নীতির উন্নতি, পরিবারের আর্থিক অবস্থার উন্নতি। তাছাড়া ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের সুদের হার কমানোকেও একটি উল্লেখযোগ্য কারণ বলে ধারণা করেন বিশেষজ্ঞরা।
উল্লেখ্য যুক্তরাজ্যের অক্টোবর মাসের বাজেটে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উপর ন্যাশনাল ইন্সুরেন্স রেইট বৃদ্ধির কারণে চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভস কিছু ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
২১ জানুয়ারি ২০২৫