6.3 C
London
December 23, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্য হতে রুয়ান্ডায় প্রেরিত শরনার্থীদের ভয়াবহ জীবন

গত বছরের কোনো এক সময়ে যুক্তরাজ্যের প্রত্যন্ত দ্বীপ থেকে রুয়ান্ডায় আশ্রয়প্রার্থীদের প্রেরণ করা হয়েছিল। এইসব শরণার্থীদের সাথে বিবিসি কথা বলে তাদের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে ভয়ংকর তথ্য পায়।

আজাগু এবং মায়ুর নামের দুইজন শরনার্থী ব্রিটিশ দ্বীপ দিয়েগো গার্সিয়া থেকে রুয়ান্ডায় পৌঁছেন। এক বছর আগে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক একদল অভিবাসীকে রুয়ান্ডায় স্থানান্তরিত করা হয় বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়। সেইসব শরনার্থীরা জানান তারা নিজেদের বিচ্ছিন্ন এবং অনিরাপদ মনে করেন রুয়ান্ডায়। তারা আফ্রিকার দেশটিকে একটি “উন্মুক্ত কারাগার” হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ব্রিটিশ রাজনৈতিক সরকারের রুয়ান্ডায় আশ্রয়প্রার্থীদের প্রেরণের বিতর্কিত পরিকল্পনার অংশ হিসাবে অনেক অভিবাসী বর্তমানে রুয়ান্ডায় অবস্থান করছেন। এইসব শরনার্থীরা জানান রুয়ান্ডায় তারা সবচেয়ে বড় সমস্যায় পড়েছেন চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে।
কিছু কিছু ক্ষেত্রে অতীতে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ফলে যে সমস্যা দেখা দিয়েছিল তার জন্য স্বাস্থ্যসেবা তারা পাচ্ছেন না।

শরনার্থীরা প্রত্যেকে খাদ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলির জন্য এক সপ্তাহে ৩৯ পাউন্ড বেনিফিট পেয়ে থাকেন। শরনার্থী হিসাবে যুক্তরাজ্য এবং রুয়ান্ডা সরকার দ্বারা সম্মত হয়ে এই বেনিফিট প্রদান করা হয়। তাছাড়া শরনার্থীদের কাজ করার অনুমতিও নেই। যার কারণে প্রতি সপ্তাহে প্রাপ্ত বেনিফিটের টাকা তাদের জন্য যথেষ্ট হয় না বলে বিবিসিকে নিশ্চিত করেন শরনার্থীরা।

শরনার্থীরা আরো জানান আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডার রাস্তায় বের হলে তারা নিজেদের নিরাপদ মনে করেন না। রাস্তায় যৌন হয়রানি ও নির্যাতন একটি নিত্তনৈমিত্তিক ঘটনা। তাই নিজেদের জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যেতে তারা অপেক্ষায় আছেন নতুন কোনো নিরাপদ দেশে যাওয়ার জন্য। রুয়ান্ডায় নির্বাসনে পাঠানো বেশিরভাগ শরনার্থীরাই শ্রীলঙ্কান তামিল। যাদেরকে রুয়ান্ডায় স্থানান্তরিত করা হয়েছিল এবং সাময়িক চিকিৎসা প্রদান করে কিগালির সামরিক হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেয়া হয়। বর্তমানে শরনার্থীরা রাজধানী কিগালিতে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্দিষ্ট কিছু ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন।

রুয়ান্ডায় শরনার্থীদের আইনজীবী জানান, শরনার্থীদের নেতিবাচক অভিজ্ঞতাগুলি গুরুতর উদ্বেগ উত্থাপন করেছে। নিরাপদ আশ্রয় দেওয়ার জন্য রুয়ান্ডার দক্ষতা যথেষ্ট নয় যার দরুন মানসিকভাবে চাপে আছে শরনার্থীরা।

যুক্তরাজ্যের ল’ফার্ম লে লেই ডে’র একজন আইনজীবী টম শর্ট বলেন, বিশেষজ্ঞদের মূল্যায়নে দেখা গিয়েছে যে “আমাদের প্রতিটি ক্লায়েন্টের জটিল চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে যা রুয়ান্ডায় পূরণ হচ্ছে না”। তাছাড়া অনেক ক্লায়েন্ট জানিয়েছেন তাদেরকে রুয়ান্ডার রাস্তায় যৌন সম্পর্ক স্থাপনের ইশারা করেছে অনেকে। তাছাড়া শারীরিকভাবে লাঞ্চিত হয়েও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিকট হতে কখনও সাহায্য পান নাই রুয়ান্ডায়। তাই রুয়ান্ডার পরিবেশ নিরাপদ এটা কখনও বলা যাবে না।

উল্লেখ্য যে, রুয়ান্ডায় বিবিসি কর্তৃক যেসব শরনার্থীদের সাথে আলোচনা করা হয় তারা সকলেই নিজ দেশে নির্যাতন ও যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু নিজেদের নিরাপত্তার জন্য তারা যুক্তরাজ্যের দ্বীপে আশ্রয় নিয়ে সেখানে থাকতে পারেন নাই। তাদেরকে রুয়ান্ডায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। রুয়ান্ডায় নিজেদের নিরাপদ ভাবছেন না সেইসব শরনার্থীরা তাই তারা পালিয়ে কানাডা চলে যাওয়ার কথা ভাবছেন বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে
০৭ জুন ২০২৪

আরো পড়ুন

ফের বাবা হতে চলেছেন বরিস জনসন

যুক্তরাজ্যে বাড়ছে অর্থ কেলেঙ্কারির ঘটনা,চক্রকে ধরতে চায় সরকার

মুদ্রাস্ফীতি ও শ্রমিক সংকটের জন্য ব্রেক্সিটকে দায়ী করেছেন একজন রাজনীতিবিদ