লন্ডন শহর হতে হঠাৎ করে পুলিশ স্টেশন হারিয়ে যাচ্ছে যার অন্যতম কারণ অর্থনৈতিক দৈন্যদশা বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের এক প্রতিবেদন।
পনেরো বছর আগে, লন্ডনে ১৬০টির বেশি থানা ছিল যা বর্তমানে মাত্র ৩৬টিতে এসে ঠেকেছে। একটি গবেষণায় উঠে এসেছে হঠাৎ করে পুলিশ স্টেশনের সংখ্যা হ্রাস সহিংস অপরাধ উদ্বেগজনকহারে বাড়িয়ে দিতে পারে।
তথ্যমতে জানা যায়, ওয়ালথামস্টো হাই স্ট্রিটের একটি বন্ধ ভবনে পুলিশ স্টেশনের চিহ্ন পড়ে রয়েছে। আশেপাশের এলাকার কেউ পুলিশ বা প্রশাসন বিভাগের কারো সাথে কথা বলতে চাইলে প্রায় চার মাইল দূরে চিংফোর্ডের পুলিশ স্টেশনে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
স্থানীয় একজন দোকানদার বলেন, ২০১১ সালে ভবনে আগুন লাগার পর হতে পুলিশ স্টেশন বন্ধ রয়েছে। পুলিশ স্টেশন বন্ধ হবার কারণে জরুরি সেবার জন্য জনসাধারণকে ৯৯৯ নাম্বারে ফোন দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
একটি গবেষণায় দেখা যায়, ২০০৮ সালে লন্ডনে ১৬০ টি পুলিশ স্টেশন ছিল যা বর্তমানে ৩৬টিতে এসে ঠেকেছে। প্রায় ৭৫ শতাংশেরও বেশি পুলিশ স্টেশন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। একাডেমিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে বন্ধ হয়ে যাওয়া পুলিশ স্টেশনের কারণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বিভিন্ন এলাকায়। ইংল্যান্ডের ৯০০ টি পুলিশ স্টেশনের মধ্যে ৬০০ টিরও বেশি বন্ধ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রাজধানী লন্ডন।
পুলিশ স্টেশন বন্ধ হওয়া নিয়ে লেবার কনজারভেটিভ পার্টি একে অন্যকে দোষারোপ করেছেন। কনজারভেটিভ মেয়র প্রার্থী শন বেইলি এবং সুসান হল উভয়েই মেয়র সাদিক খানকে পুলিশ স্টেশন বন্ধ হওয়ার জন্য দায়ী করেছেন। যদিও মেয়র সাদিক খান বলেন, বরিস জনসন মেয়র থাকাকালীন সময়ে সবচেয়ে বেশি পুলিশ স্টেশন বন্ধ হয়েছিল।
মেয়রের এক মুখপাত্র বলেছেন, “ সরকার ২০১০ সাল থেকে মেট্রোপলিটন পুলিশকে ক্রমান্বয়ে আন্ডার ফান্ডেড করেছে, পুলিশ তহবিলের ১ বিলিয়ন পাউন্ডের বেশি ফান্ড কেটে দিয়েছে। যার কারণে মেয়রের হাত বাঁধা আছে এই ব্যাপারে।”
উল্লেখ্য যে, প্রকৃতপক্ষে পুলিশ স্টেশন বন্ধ হবার বেশিরভাগ সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক গৃহীত হয়েছে বলে তথ্যমতে জানা যায়। অর্থনৈতিক দৈন্যদশার কারণে ২০১০ সালের কোয়ালিশন ক্যামেরন সরকার কালীন সময় হতেই ব্যয় কর্তনের উপর গুরুত্ব দেয়া হয়। যার ফলে অনেক পুলিশ স্টেশন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্রীয় সরকার।
সূত্রঃ দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট
এম.কে
২০ জুন ২০২৪