ইংল্যান্ডে রেসিডেন্ট ডাক্তাররা ২৫ জুলাই সকাল ৭টা থেকে শুরু করে টানা পাঁচ দিনের ধর্মঘটে যাচ্ছেন। ধর্মঘট চলবে ৩০ জুলাই সকাল ৭টা পর্যন্ত। ব্রিটিশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (BMA) জানিয়েছে, আলোচনার জন্য সরকারকে দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।
BMA-র রেসিডেন্ট ডাক্তারদের কমিটির যুগ্ম-সভাপতি ড. মেলিসা রায়ান ও ড. রস নিউউড জানিয়েছেন, তারা স্বাস্থ্য সচিব ওয়েস স্ট্রিটিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করলেও বেতন ইস্যুতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। সরকার মূলত বেতনের বাইরের বিষয়গুলোতে মনোযোগ দিচ্ছে।
তাদের বক্তব্য, “আমাদের ন্যায্য বেতন ফেরত পেতে কোনো বাস্তবসম্মত প্রস্তাব না থাকায় আমরা বাধ্য হয়েই ধর্মঘট ডাকছি। তবে আলোচনার দরজা এখনো খোলা। ওয়েস স্ট্রিটিং আন্তরিক হলে ভোগান্তি এড়ানো সম্ভব।”
BMA-এর সর্বশেষ ব্যালটে প্রায় ৯০ শতাংশ রেসিডেন্ট ডাক্তার ধর্মঘটের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, যেখানে উপস্থিতি ছিল ৫৫ শতাংশ। এই ভোটে তারা ২০২৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার বৈধতা পেয়েছেন।
ইউনিয়নের দাবি, ২০০৮/০৯ অর্থবছর থেকে ডাক্তারদের প্রকৃত বেতন ২৯.২ শতাংশ কমে গেছে। এই ক্ষয় পূরণে তারা সমপরিমাণ বেতনবৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন।
ডাউনিং স্ট্রিটের মুখপাত্র সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, বেতন নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করা হবে না। তার ভাষায়, “গত দুই বছর রেসিডেন্ট ডাক্তাররা সরকারি খাতের মধ্যে সর্বোচ্চ বেতনবৃদ্ধি পেয়েছেন। চলতি বছরে অতিরিক্ত কিছু দেওয়ার সুযোগ নেই।”
পূর্ববর্তী ধর্মঘটগুলোতে স্বাস্থ্যসেবায় বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটে। প্রায় ১৫ লাখ চিকিৎসা, অপারেশন এবং অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্থগিত হয়। ফলে স্বাস্থ্যখাতে রোগীদের ভোগান্তি ব্যাপক আকার ধারণ করে।
সরকার দাবি করছে, এপ্রিলের শেষে ইংল্যান্ডে চিকিৎসা অপেক্ষমাণ রোগীর সংখ্যা ৭.৩৯ মিলিয়নে নেমে এসেছে, যা গত দুই বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।
গত সেপ্টেম্বর, BMA সদস্যরা সরকারের প্রস্তাবিত দুই বছরের জন্য গড় ২২.৩ শতাংশ বেতনচুক্তি গ্রহণ করেছিলেন। তবে চলতি অর্থবছরে প্রস্তাবিত ৪ শতাংশ বেতনবৃদ্ধি ও অতিরিক্ত £৭৫০ অনেকের কাছেই অপ্রতুল বলে মনে হয়েছে।
BMA বলছে, তারা যে ২৯.২ শতাংশ বেতনবৃদ্ধির দাবি তুলেছে, তা রিটেইল প্রাইস ইনডেক্স (RPI) অনুযায়ী নির্ধারিত, যা জনসাধারণের দৈনন্দিন পণ্য ও সেবার গড় মূল্যবৃদ্ধির প্রতিফলন।
ডাক্তারদের এই ধর্মঘট শুধু বেতন ইস্যু নয়, বরং স্বাস্থ্যখাতের ভবিষ্যৎ ও কর্মপরিবেশ ঘিরে একটি বড় সংকেত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্রঃ দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট
এম.কে
০৯ জুলাই ২০২৫