15.6 C
London
May 10, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের হোটেল খরচ কমাতে আপিলের রায়ে তড়িঘড়ির শঙ্কা

যুক্তরাজ্যে হোটেল কক্ষগুলোতে থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আপিল সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য ২৪ সপ্তাহের একটি আইনি সময়সীমা চালু করা হচ্ছে, যা একটি লেবার পার্টির ইশতেহারের প্রতিশ্রুতি পূরণের অংশ। এই ব্যয়বহুল ব্যবস্থাটি বন্ধ করার লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার। কারণ হিসাবে করদাতাদের প্রতি বছর বিলিয়ন পাউন্ড খরচকে সামনে নিয়ে এসেছে লেবার সরকার।

তবে যুক্তরাজ্য সরকার বলেছে, সরকার-অনুদানপ্রাপ্ত হোটেলগুলোতে থাকা আশ্রয়প্রার্থীদের আপিল দ্রুত নিষ্পত্তি করার পরিকল্পনা বৈষম্যের অভিযোগে একাধিক আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।

বর্তমানে ৩৮,০০০-এর বেশি আশ্রয়প্রার্থী ২২২টি হোটেলে বসবাস করছেন এবং আরও ৬৬,০০০ জন “বিতরণকৃত আবাসন”-এ রয়েছেন।

সরকার বলছে, ২০২৯ সালের মধ্যে তারা আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য হোটেল ব্যবহারের প্রথা বন্ধ করতে চায় এবং তার অংশ হিসেবে একাধিক নীতি গ্রহণ করা হচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে দ্রুত আপিল প্রক্রিয়া—বিশেষত যারা হোটেলে থাকছেন এবং যাদের প্রাথমিক আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।

তবে সরকার ‘বর্ডার সিকিউরিটি, অ্যাসাইলাম ও ইমিগ্রেশন বিল’-এর আইনি স্মারকলিপিতে স্বীকার করেছে যে, এই নতুন সময়সীমার বিরুদ্ধে ইউরোপীয় মানবাধিকার সনদের (ECHR) অধীনে আইনি চ্যালেঞ্জ আসতে পারে।

সরকারি কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেছেন, ECHR-এর ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ বৈষম্য নিষিদ্ধ করে এবং ঝুঁকি রয়েছে যে হোটেলে থাকা ব্যক্তিরা “তাদের মামলা উপস্থাপনের জন্য যথেষ্ট সময় পাবে না, যা ন্যায্যতা ও বিচারিক স্বার্থের পরিপন্থী হতে পারে”।

আরও বলা হয়েছে, যারা এই দ্রুত প্রক্রিয়ার আওতাভুক্ত নয়—তাদের আপিল “অযৌক্তিকভাবে বিলম্বিত” হতে পারে। স্মারকলিপির উপসংহারে বলা হয়েছে, “উভয় ক্ষেত্রেই ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বৈষম্যের ঝুঁকি রয়েছে”।

আইনি নোটে সরকার দাবি করেছে, এই আইনটি ECHR-এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকবে, কারণ যে ট্রাইবুনাল আপিল শুনবে তা “যেখানে বাস্তবসম্মত নয়, সেখানে সময়সীমা পূরণ না করলেও চলবে”—এমন নমনীয়তা রাখা হবে।”

সরকার আগামী সপ্তাহে একটি অভিবাসন হোয়াইট পেপার প্রকাশ করতে যাচ্ছে, যাতে ইংরেজি ভাষায় A-লেভেল মানের দক্ষতা প্রমাণ করার শর্তসহ কর্মী ভিসার জন্য কঠোরতা আরোপ করা হবে বলে অনেক ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। এছাড়া, পারিবারিক সম্পর্কের ভিত্তিতে যুক্তরাজ্যে থাকার সুযোগ সীমিত করার পরিকল্পনাও এতে থাকতে পারে।

এই সপ্তাহে ন্যাশনাল অডিট অফিস জানিয়েছে, ২০১৯ সালে তিনটি বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে স্বাক্ষরিত ১০ বছরের চুক্তির ব্যয় প্রায় £১৫.৩ বিলিয়ন হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

আশ্রয়প্রার্থী আবাসন খাতে ব্যয় হওয়া অর্থের তিন-চতুর্থাংশ হোটেলেই ব্যয় হচ্ছে, যদিও সেখানে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ মানুষই থাকছেন। প্রতি রাত শেয়ার করা বাড়িতে এক ব্যক্তির জন্য ব্যয় যেখানে £১৪.৪১, সেখানে হোটেলে একজনের জন্য তা £১৪৫।

সরকার জানিয়েছে, আদালত রক্ষণাবেক্ষণ ও অবকাঠামো খাতে অর্থায়ন ২০২৪ সালে £১২০ মিলিয়ন থেকে বাড়িয়ে ২০২৫ সালে £১৪৮.৫ মিলিয়ন করা হবে। এতে অভিবাসন ও আশ্রয় ট্রাইবুনালগুলো প্রায় সর্বোচ্চ দিনে বসতে পারবে এবং দ্রুত আপিল নিষ্পত্তি হবে।

সরকারের এক মুখপাত্র বলেন: “আমরা একটি ব্যতিক্রমী চাপে থাকা আশ্রয় ব্যবস্থা পেয়েছিলাম এবং দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছি: সিদ্ধান্ত গ্রহণের হার ৫২% বাড়ানো হয়েছে এবং গত আট বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ২৪,০০০ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে, যাদের যুক্তরাজ্যে থাকার কোনো অধিকার নেই।

এটা একেবারেই সঠিক যে, আশ্রয়আবাসনে থাকা ব্যক্তিদের আপিল দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আমরা আইনগতভাবে একটি সময়সীমা নির্ধারণ করছি, যাতে তারা সিস্টেমের মধ্য দিয়ে দ্রুত অগ্রসর হতে পারে, হোটেল থেকে সরে যেতে পারে এবং করদাতাদের ওপর বোঝা কমে।

এই প্রক্রিয়া সহায়তার জন্য অভিবাসন ও আশ্রয় ট্রাইবুনালের জন্য অতিরিক্ত তহবিল প্রদান করা হচ্ছে, যাতে সেগুলো প্রায় পূর্ণ ক্ষমতায় বসতে পারে।”

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
১০ মে ২০২৫

আরো পড়ুন

সাত দিনে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর বিমান ব্যয় ৬ কোটি টাকা

নিউজ ডেস্ক

রাশিয়ান হ্যাকারদের হামলার শিকার যুক্তরাজ্যের নামী প্রতিষ্ঠান

চাকরি হারাতে পারেন রাজসিংহাসনের শতাধিক কর্মী

অনলাইন ডেস্ক