7.3 C
London
January 31, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্যে টানা পঞ্চম মাস বাড়ল বাড়ির দাম, বাজার দুর্বল হওয়ার ইঙ্গিত

যুক্তরাজ্যে প্রপার্টি মার্কেট অস্থির অবস্থার মধ্যে রয়েছে। যুক্তরাজ্যের ব্যাংক ও বিল্ডিং সোসাইটি ন্যাশনওয়াইড জানায়, নভেম্বর মাসে প্রপার্টির বার্ষিক বৃদ্ধির হার ছিল ৪.১%, যা ডিসেম্বরে ছিল ৪.৭%।

যুক্তরাজ্যে জানুয়ারিতে টানা পঞ্চম মাস বাড়ির দাম বেড়েছে, তবে সামগ্রিক বাজার কিছুটা দুর্বল হওয়ার লক্ষণ দেখিয়েছে বলে জানিয়েছে ন্যাশনওয়াইড বিল্ডিং সোসাইটি।

ন্যাশনওয়াইড-এর মাসিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জানুয়ারিতে বাড়ির দাম আগের মাসের তুলনায় ০.১% বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে যুক্তরাজ্যে গড় বাড়ির দাম £২,৬৮,২১৩, যা ডিসেম্বরে ০.৭% এবং নভেম্বরে ১.২% বৃদ্ধির তুলনায় কম।

তবে বার্ষিক হারে, বাড়ির মূল্যবৃদ্ধির গতি ৪.১%-এ নেমে এসেছে, যেখানে ডিসেম্বরে এই হার ছিল ৪.৭%।

ন্যাশনওয়াইড বলছে, বছরের শুরুতে মূল্যবৃদ্ধির হার কিছুটা কমলেও অক্টোবর ২০২২-এর পর এটিই সবচেয়ে শক্তিশালী বার্ষিক বৃদ্ধি। ২০২২ সালের অক্টোবরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের ব্যর্থ বাজেট ঘোষণার পর ঋণের খরচ বেড়ে যাওয়ায় বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছিল।

ন্যাশনওয়াইড-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ রবার্ট গার্ডনার বলেন, “অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ থাকা সত্ত্বেও হাউজিং মার্কেট স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছে। গত এক বছরে কিছুটা উন্নতি হয়েছে, তবে ঐতিহাসিক মানদণ্ড অনুযায়ী আবাসন বাজার এখনও চাপে রয়েছে।”

এই সপ্তাহের শুরুতে লন্ডন এস্টেট এজেন্সি ফকস্টনস জানিয়েছে, লন্ডনে বাড়ি বিক্রি প্রায় এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে এবং ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে বাজার শক্তিশালী থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ন্যাশনওয়াইড আরও পূর্বাভাস দিয়েছে যে, ৩১ মার্চের মধ্যে ইংল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডে স্ট্যাম্প ডিউটি পরিবর্তন কার্যকর হওয়ার আগে বাড়ি কেনার ধুম দেখা যেতে পারে।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সরকার সাময়িকভাবে স্ট্যাম্প ডিউটির শূন্য হার বাড়িয়ে প্রথমবারের ক্রেতাদের জন্য £৩০০,০০০ থেকে £৪২৫,০০০ এবং অন্যান্য ক্রেতাদের জন্য £১২৫,০০০ থেকে £২৫০,০০০ করেছিল। কিন্তু ২০২৩ সালের অক্টোবর বাজেটে র‍্যাচেল রিভস ঘোষণা করেন যে, ৩১ মার্চের পর এই সুবিধা আর থাকবে না।

কুইল্টার-এর বন্ধক বিশেষজ্ঞ ক্যারেন নোয়ে বলেন, “অনেক প্রথমবারের ক্রেতা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে স্ট্যাম্প ডিউটি পরিবর্তনের আগে বাড়ি কেনার জন্য তাড়াহুড়ো করছে। এটি বাজারে সাময়িক মূল্যবৃদ্ধির কারণ হতে পারে।”

তবে, তিনি আরও বলেন, “বেশিরভাগ ক্রেতার জন্য সময় ইতোমধ্যে ফুরিয়ে এসেছে এবং নতুন নিয়ম কার্যকর হওয়ার আগে তারা বাড়ি কেনার প্রক্রিয়া শেষ করতে পারবেন না। এটি তাদের জন্য আরেকটি বড় ধাক্কা, যারা প্রথমবারের মতো বাড়ির মালিক হতে চায়।”

ন্যাশনওয়াইড-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, একজন সাধারণ প্রথমবারের ক্রেতা, যার গড় ইউকে আয় রয়েছে এবং ২০% ডিপোজিট দিয়ে বাড়ি কিনছেন, তার মাসিক বন্ধকী পরিশোধন গড় আয়-এর ৩৬%। যা ঐতিহাসিক গড় ৩০%-এর চেয়ে অনেক বেশি।

প্রথমবারের ক্রেতাদের জন্য বাড়ির দাম ও আয় অনুপাত ৫ গুণ, যেখানে দীর্ঘমেয়াদী গড় অনুপাত ছিল ৩.৯ গুণ। ফলে ডিপোজিট জমানো অনেকের জন্যই বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ফাইন অ্যান্ড কান্ট্রি এস্টেট এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাথন হ্যান্ডফোর্ড বলেন, “বাজারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে প্রথমবারের ক্রেতাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। যদি ফেব্রুয়ারিতে ব্যাংক অব ইংল্যান্ড সুদের হার কমায়, তাহলে বন্ধকী সুদের হারও কমতে পারে, যা বাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”

তিনি আরও বলেন, “জানুয়ারিতে মাত্র ০.১% মূল্যবৃদ্ধি বাজারের স্থিতিশীলতার ইঙ্গিত দেয়, তবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও ক্রয়ক্ষমতার সীমাবদ্ধতা বাড়ির মূল্যের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে।”

আগামী কয়েক মাসে বাজারের গতি নির্ধারণে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও সুদের হার পরিবর্তনের দিকে নজর রাখতে হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
৩১ জানুয়ারি ২০২৫

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে রাজ্যাভিষেকে যোগ দেওয়ায় পদ হারালেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

রাজা চার্লসের অভিষেক কুচকাওয়াজে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর ১০ সদস্য

লন্ডনের গ্যারেজের সমান দামে বিক্রি হচ্ছে স্কটিশ দ্বীপ!

নিউজ ডেস্ক