লন্ডন পরিবহন (TfL)-এর বিদেশি কর্মীদের একটি বড় অংশকে যুক্তরাজ্য থেকে বহিষ্কারের ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে নতুন ভিসা নিয়মের কারণে। দক্ষ কর্মী ভিসায় আসা অন্তত ৬০ জন কর্মী চাকরি হারিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হতে পারেন, কারণ সরকারের নির্ধারিত ন্যূনতম বেতনসীমা বেড়েছে এবং কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন খাতের চাকরি যোগ্যতার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
TfL জানিয়েছে, তারা প্রভাবিত কর্মীদের জন্য সম্ভাব্য বিকল্প পথ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে এবং যেখানে সম্ভব সহায়তা করছে। কিন্তু পরিস্থিতি নিয়ে লন্ডন অ্যাসেম্বলির সদস্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। লিবারেল ডেমোক্র্যাট নেতা হিনা বোখারি এই পদক্ষেপকে “অন্যায় ও স্বল্পদৃষ্টিসম্পন্ন” বলে উল্লেখ করেছেন। গ্রীন পার্টির ক্যারোলিন রাসেলও সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন, এই নিয়ম প্রত্যাহার করতে, কারণ এটি অনেকের জীবন ধ্বংস করবে এবং লন্ডনের পরিবহন ব্যবস্থা বিপর্যস্ত করবে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, নতুন নিয়মের উদ্দেশ্য হলো অভিবাসন প্রক্রিয়ায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং ব্রিটিশ কর্মীদের প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া। তাদের দাবি, প্রতিটি সেক্টরকে এখন স্থানীয় কর্মী গড়ে তোলার উদ্যোগ নিতে হবে, নতুবা বিদেশি কর্মীদের নিয়োগে সীমাবদ্ধতা মেনে নিতে হবে।
বর্তমানে TfL গ্র্যাজুয়েট কর্মীদের জন্য £৩১,০০০ শুরুর বেতন নির্ধারণ করেছে। তবে ট্রেইনি স্টেশন কর্মীদের বেতন £৩৫,৩০০ থেকে সর্বোচ্চ £৪১,৮০০ হলেও, নতুন নিয়ম অনুযায়ী ন্যূনতম সীমা £৪১,৭০০—যা মাত্র £১০০ বেশি। এতে স্পষ্ট যে বহু কর্মী এই শর্ত পূরণ করতে পারছেন না। আরএমটি ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এডি ডেম্পসি বলেন, “আমাদের সদস্যরা ভালো বিশ্বাসে এই চাকরি নিয়েছিলেন, এখন সরকারের নিয়ম তাদের জীবন ও ভবিষ্যৎ ধ্বংসের হুমকি তৈরি করছে।”
ঝুঁকিতে থাকা এক কর্মী বলেন, তিনি ও তার সহকর্মীরা শুধু কাজের ন্যায়সঙ্গত সুযোগ চান। “আমরা ভুল কী করেছি? আমার সহকর্মীরা এমনকি আত্মহত্যার চেষ্টা করা যাত্রীদেরও জীবন বাঁচিয়েছেন। অথচ হঠাৎ করে নিয়ম বদলে আমাদের দেশ ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। এটি আমাদের জীবনে এক পারমাণবিক বিস্ফোরণের মতো আঘাত করেছে।”
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
১৭ আগস্ট ২০২৫