যুক্তরাজ্যে গাড়ি চুরি আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত বছর ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের ১০০ টিরও বেশি অঞ্চলে গাড়ি চুরির ঘটনার রিপোর্ট হয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে গাড়ি চোর চক্রকে ধরতে পুলিশ ব্যর্থ হয়েছে।
পুলিশের একটি উন্মুক্ত তথ্যভাণ্ডার ডেটা পুলিশ ইউকে, যেখানে নানা ধরনের অপরাধের তথ্য ও পরিসংখ্যান লিপিবদ্ধ থাকে। সেই তথ্যভাণ্ডারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী গড়ে ৫৫৮ টি পাড়াতে কমপক্ষে একটি গাড়ি চুরির অপরাধ সংঘটিত হয়। যার মধ্যে মাত্র ২% অপরাধী বা সন্দেহ ভাজনকে গ্রেফতার করা কিংবা চার্জ গঠন করা হয়।
সর্বমোট ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে চুরি ও ডাকাতির মতো ঘটনা ঘটেছে ৩,৩৬,০০০ যানবাহনে। যার মধ্যে প্রায় ৮৫% ঘটনায় অপরাধীকে বা সন্দেহভাজনকে চিহ্নিত না করেই কেইস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিছু ক্ষেত্রে, পুলিশ ২৪ ঘন্টার মধ্যেই গাড়ি চুরির তদন্ত বন্ধ করে দিয়েছে।
পর্যবেক্ষক তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানান, এক দশকেরও বেশি আগে সতর্ক করা হয়েছিল যে চাবি ছাড়া ইগনিশনযুক্ত যানবাহনগুলি চুরি করা সহজ। যার কারণে এইসব যানবাহন বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।
ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অফ অটো থেফটের ইউকে পার্টের চেয়ারম্যান মাইক ব্রিগস বলেন,” চুরির বর্তমান স্তরটি তদন্ত ও সনাক্ত করার সক্ষমতা পুলিশের নেই। চোরেরা এখন অনেক আধুনিক প্রযুক্তি ভাঙ্গার ক্ষমতা রাখে সেইসব ক্ষেত্রে পুলিশ বহু পিছিয়ে রয়েছে।”
তিনি আরো বলেন, এটি উদ্বেগজনক যে কোনো গাড়ির সফ্টওয়্যার সিস্টেমগুলি ইইউ আইনের অধীনে “সহজেই অ্যাক্সেসযোগ্য”। যার অর্থ অনেকটা এইরকম একটি দুর্গ তৈরি করা হল কিন্তু সামনের দরজার চাবিটি সবার জন্য উন্মুক্ত। গাড়ি অপরাধে ব্যবহৃত উন্নত প্রযুক্তি সনাক্ত করতে পুলিশের আরও ভাল প্রশিক্ষণের প্রয়োজন।
যুক্তরাজ্যে যানবাহন সংক্রান্ত অপরাধ বৃদ্ধি পাবার ফলে গাড়ির ইন্সুরেন্স রেকর্ড পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ওয়েবসাইট কনফিউজড ডটকমের তথ্যানুসারে, গত বছরের চূড়ান্ত প্রান্তিকে গড় যুক্তরাজ্যের ইন্সুরেন্স প্রিমিয়ামের রেকর্ড ছিল ৯৯৫ পাউন্ড।
লন্ডনের কেনসিংটন এবং চেলসির কোর্টফিল্ড অঞ্চল এক হাজার বাসিন্দাদের মধ্যে ২৬ টি গাড়ি অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। নটিংহামশায়ার প্রতি এক হাজার বাসিন্দাদের মধ্যে ২৩ টি গাড়ি সংক্রান্ত অপরাধ সংগঠিত হয়েছে।
এএ বীমা কোম্পানি জানায়, সুরক্ষা ব্যবস্থা শক্ত করা উচিত পুলিশ প্রশাসনের। পুলিশের হাই-টেক পদ্ধতি ব্যবহার করে গাড়ি চুরির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আরও প্রচেষ্টার প্রয়োজন।
চিফ এক্সিকিউটিভ গাস পার্ক পুলিশ প্রধান এবং অপরাধ কমিশনারদের একটি কর্ম পরিকল্পনা বিকাশের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সতর্ক করে বলেন, যানবাহন চুরির পরিসংখ্যান নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।
হোম অফিসের এক মুখপাত্র বলেছেন, “আমরা আশা করি অপরাধীদের ধরতে এবং বিচারের আওতায় আনতে পুলিশ প্রশাসন আরো গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিবে। গত বছরের আগস্টে সমস্ত যুক্তিসঙ্গত লাইন অনুসরণ করার যে প্রতিশ্রুতি পুলিশ বিভাগ দিয়েছিল তাকে আমরা স্বাগত জানাই। ”
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
৩১ মার্চ ২০২৪