ইংল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলে ১৮ মাস পর প্রথমবারের মতো বাড়ির দাম কমেছে। লেবার সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই প্রথম বার্ষিক দামের পতন রেকর্ড করেছে বাজার-তথ্যভিত্তিক সংস্থা জুপলা (Zoopla)। নভেম্বর মাসে লন্ডন, সাউথ ইস্ট এবং সাউথ ওয়েস্ট—এই তিন এলাকায় দামের সামান্য হলেও উল্লেখযোগ্য হ্রাস দেখা গেছে।
বাড়ির বাজারে এই পতনের মূল কারণ হিসেবে বাজেট ঘোষণা ঘিরে কর সংক্রান্ত গুঞ্জনকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা। কয়েক সপ্তাহ ধরে £৫ লাখের বেশি মূল্যের বাড়িতে নতুন কর আরোপ হতে পারে—এমন আশঙ্কায় ক্রেতারা বাজার থেকে সরে যেতে শুরু করেন। যদিও শেষ পর্যন্ত অর্থমন্ত্রী রেচেল রিভস শুধুমাত্র £২০ লাখ বা তার বেশি মূল্যের বাড়ির ওপর সীমিত কর আরোপের সিদ্ধান্ত নেন, তবুও আগাম জল্পনাই বাজারে বড় ধরনের প্রভাব ফেলে।
তথ্য অনুযায়ী, ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত চার সপ্তাহে লন্ডন ও সাউথ ইস্টে বাড়ির দাম ০.১% এবং সাউথ ওয়েস্টে ০.২% কমেছে। একই সময়ে ব্রিটেনজুড়ে ক্রেতাদের আগ্রহ ১২% কমে গেছে। গৃহক্রয়ের চুক্তিও গত বছরের তুলনায় ৪% হ্রাস পেয়েছে।
জুপলার নির্বাহী পরিচালক রিচার্ড ডোনেল বলেন, “দেরি গ্রীষ্ম থেকে চলমান অনিশ্চয়তা বাজারকে স্থবির করে রেখেছিল। এখন বাজেট ঘোষণার পর পরিস্থিতি পরিষ্কার হওয়ায় আগামী বছরে বাজারে সক্রিয়তা ফেরার সম্ভাবনা রয়েছে।”
তিনি আরও জানান, £৫ লাখের বেশি মূল্যের প্রায় ২১০,০০০ বাড়ির ওপর সম্ভাব্য অতিরিক্ত কর আরোপের হুমকি দূর হওয়া দক্ষিণাঞ্চলের মূল্যবান আবাসিক এলাকায় লেনদেনে নতুন গতি আনতে সহায়তা করবে।
এদিকে ইংল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চল ছাড়া দেশের অন্যান্য অংশে বাড়ির দাম মোটামুটি স্থিতিশীল ছিল। যুক্তরাজ্যের গড় বাড়ির দাম বছরে ১.৩% বেড়ে £২৭০,২০০-এ দাঁড়িয়েছে।
২০২৮ সালের এপ্রিল থেকে £২০ লাখের বেশি মূল্যের বাড়ির ওপর যে নতুন বাৎসরিক সারচার্জ আরোপ হতে যাচ্ছে তার সবচেয়ে বড় প্রভাব পড়বে দক্ষিণাঞ্চলে। চারটি ধাপে আরোপিত এই ট্যাক্স বছরে সর্বনিম্ন £২,৫০০ থেকে সর্বোচ্চ £৭,৫০০ পর্যন্ত হতে পারে। এই কর আনুমানিক ১,৪০,০০০ বাড়িকে প্রভাবিত করবে, যার ৮২% লন্ডন ও সাউথ ইস্ট অঞ্চলে অবস্থিত।
এন্ড্রুজ এস্টেট এজেন্সির প্রধান নির্বাহী ডেভিড পাওয়েল বলেন, “£২০ লাখের বেশি মূল্যের বাড়িতে নতুন ম্যানশন ট্যাক্স দক্ষিণাঞ্চলের বাজারকে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করবে।”
তবে নাইট ফ্র্যাঙ্কের আবাসন গবেষণা প্রধান টম বিল মনে করছেন, ম্যানশন ট্যাক্স কার্যকর হওয়ার আগে পর্যন্ত বাজারে অনিশ্চয়তা আরও বাড়বে, যা মূল্যায়নসহ নানা প্রশ্নকে সামনে আনবে।
সূত্রঃ দ্য টেলিগ্রাফ
এম.কে

