২০২৬ সালের এপ্রিল থেকে যুক্তরাজ্যে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যাচাইয়ের নতুন আইন কার্যকর হচ্ছে। ডিপার্টমেন্ট ফর ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশনস (ডিডব্লিউপি) এটিকে বলছে “এক প্রজন্মের মধ্যে সবচেয়ে বড় জালিয়াতি দমন অভিযান”।
পাবলিক অথরিটিজ (ফ্রড, এরর অ্যান্ড রিকভারি) বিল-এর আওতায় ব্যাংকগুলোকে লাখো অ্যাকাউন্ট পর্যালোচনা করে সন্দেহজনক তথ্য কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। বিশেষ করে ইউনিভার্সাল ক্রেডিটে ভাতার ক্ষেত্রে ১৬ হাজার পাউন্ডের বেশি সঞ্চয় থাকলে তা শনাক্ত করে সতর্কবার্তা পাঠানো হবে। যদিও কর্মকর্তারা ব্যক্তিগত লেনদেন সরাসরি দেখতে পারবেন না, তবুও সম্ভাব্য জালিয়াতি শনাক্তে ব্যাংকগুলোর উপর দায়িত্ব বাড়ছে।
ডিডব্লিউপি দাবি করছে, এ উদ্যোগে আগামী পাঁচ বছরে করদাতাদের ১.৫ বিলিয়ন পাউন্ড সাশ্রয় হবে। কারণ শুধুমাত্র গত বছরই ভাতা জালিয়াতি ও ত্রুটিজনিত ক্ষতির পরিমাণ রেকর্ড ৭.৪ বিলিয়ন পাউন্ডে পৌঁছেছিল। মন্ত্রীদের প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়েছে, কারও অপরাধী হওয়ার ধারণা না দিয়েই কেবল যোগ্যতা যাচাইয়ের ভিত্তিতে এই তথ্য ব্যবহার করা হবে।
নতুন আইনে প্রতারকদের কাছ থেকে অর্থ পুনরুদ্ধারে সরকারের ক্ষমতাও আরও কঠোর হয়েছে। প্রয়োজনে সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ কেটে নেওয়া যাবে এবং যারা নিয়মিত অর্থ ফেরত দিতে অস্বীকার করবে তাদের দুই বছরের জন্য ড্রাইভিং নিষিদ্ধ করা যাবে।
লেবার পার্টির ওয়ার্ক অ্যান্ড পেনশনস সেক্রেটারি লিজ কেনডাল এ প্রসঙ্গে বলেন, “কনজারভেটিভদের রেখে যাওয়া সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ব্যর্থ হচ্ছে। কর্মক্ষম বয়সীদের মধ্যে প্রতি ১০ জনে একজন অসুস্থতা বা অক্ষমতার ভাতা দাবি করছেন এবং প্রায় ১০ লাখ তরুণ শিক্ষা, চাকরি বা প্রশিক্ষণ থেকে বাইরে আছে। এই পরিস্থিতি দেশকে পিছিয়ে দিচ্ছে।”
তবে মানবাধিকার কর্মী ও সমালোচকরা এই ব্যবস্থাকে “ব্যাপক আর্থিক নজরদারি” হিসেবে দেখছেন। তাদের আশঙ্কা, দুর্বল পরিবার ও ভাতা নির্ভর মানুষরা ভুলভাবে শাস্তির মুখে পড়তে পারেন।
বিগ ব্রাদার ওয়াচের পরিচালক সিলকি কার্লো বলেন, “এটি আর্থিক গোপনীয়তার জন্য ভয়াবহ এবং নিরপরাধ হিসেবে বিবেচিত হওয়ার অধিকারকে ক্ষুণ্ন করছে। এটি পুরো জনগোষ্ঠীর ওপর নজিরবিহীন আর্থিক নজরদারি ব্যবস্থা।”
সূত্রঃ দ্য মিরর
এম.কে
২৩ আগস্ট ২০২৫