যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান NHS-এ সেবার মান ও রোগীর অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে অর্থায়ন নির্ধারণের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। আগামী সপ্তাহে প্রকাশিত হতে যাওয়া “১০ বছরের স্বাস্থ্য পরিকল্পনা”-তে এই প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
নতুন পরিকল্পনার আওতায়, রোগীদের জিজ্ঞাসা করা হবে তারা যে সেবা পেয়েছেন তা ভালো ছিল কি না এবং সেই সেবাটি অতিরিক্ত অর্থ পেতে উপযুক্ত কি না। এই স্কিম শুরু হবে সেসব স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে যেগুলো অতীতে দুর্বল পারফর্ম করেছে এবং যেখানে রোগীদের অভিযোগ আছে যে তাদের মতামত গুরুত্ব পায়নি।
এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো, সেবাদাতাদের জন্য একটি শক্তিশালী প্রণোদনা তৈরি করা যাতে তারা রোগীদের মতামত শোনে এবং অভিজ্ঞতা উন্নত করে। তবে এটি ভালো পারফর্ম করা কর্মীদের জন্য কোনো বোনাস বা অতিরিক্ত বেতন দেবে না।
একইসঙ্গে, ‘Year of Care Payments’ নামের একটি নতুন অর্থপ্রদান পদ্ধতি চালু করা হবে, যেখানে সেইসব সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কৃত করা হবে যারা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন কমিয়ে এনেছে।
এই পরিকল্পনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন NHS Confederation-এর প্রধান নির্বাহী ম্যাথিউ টেইলর। তিনি বলেন, “রোগীর অভিজ্ঞতা শুধু চিকিৎসকের সাথে সাক্ষাতে নির্ভর করে না। অনেক সময় সেবাদাতাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরের সমস্যা – যেমন স্টাফ সংকট বা ভবন ব্যবস্থাপনা – এর পেছনে দায়ী থাকে।”
স্বাস্থ্য সচিব ওয়েস স্ট্রিটিং বলেন, “চমৎকার রোগী সেবাকে আমরা পুরস্কৃত করব। ভালো অভিজ্ঞতা ও চিকিৎসাগত উৎকর্ষের ভিত্তিতে অতিরিক্ত অর্থায়ন হবে।”
এই স্বাস্থ্য পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, সরকার NHS পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ২০১টি সরকারি সংস্থা বা কোয়াংগো (Quasi-Autonomous Non-Governmental Organisations – Quangos) বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোয়াংগো হলো এমন সংগঠন যেগুলো সরকার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হলেও স্বাধীনভাবে পরিচালিত হয় এবং সরকারের কাজ বাস্তবায়নে সহায়তা করে।
বিলুপ্ত হতে যাওয়া সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে Healthwatch England (রোগীদের পক্ষে কথা বলার জন্য গঠিত), National Guardian’s Office (হুইসেলব্লোয়ারদের সহায়তাকারী) এবং Health Services Safety Investigations Body (চিকিৎসাসেবা সংক্রান্ত নিরাপত্তা তদন্তের দায়িত্বে থাকা সংস্থা)।
এই সিদ্ধান্তকে “রোগীদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ” বলে আখ্যা দিয়েছেন Royal College of Nursing-এর প্রধান প্রফেসর নিকোলা রেঞ্জার। তিনি বলেন, “বর্তমানে এক একজন নার্সকে ১৫ জন বা তার বেশি রোগীর দায়িত্ব নিতে হয়। এটি একেবারেই নিরাপদ নয় এবং শুধুমাত্র কাঠামোগত পরিবর্তন দিয়ে সমস্যার সমাধান হবে না।”
নতুন NHS প্রধান স্যার জিম ম্যাকি বলেন, NHS-অনেক সিস্টেমকে এত কঠিন করে ফেলেছে যে নিজেরাই তার ভুক্তভোগী।”
সূত্রঃ স্কাই নিউজ
এম.কে
২৯ জুন ২০২৫