2.5 C
London
November 21, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে জটিলতা বাড়ছে

মূল্যস্ফীতি মোকাবেলার পথে জটিলতা বাড়ছে ব্রিটেনের অর্থনীতিতে। মূল্যবৃদ্ধির কারণে কোম্পানিগুলো সমালোচনার স্বীকার হচ্ছে একদিকে, বিপরীতে কাজ করছে কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির চাপ। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা পণ্যের বাজারেও, যা আগামী দিনগুলোয় মূল্যস্ফীতি মোকাবেলার সমীকরণকে জটিল করে রাখতে পারে। এমনটাই উঠে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে।

খুচরা পরিষেবা প্রতিষ্ঠান এও ওয়ার্ল্ডের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী জন রবার্টস দাবি করেছেন, এটা একটা আকাশকুসুম কল্পনা হবে, যদি ভাবা হয় খুচরা ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম কমিয়ে দুই বছর আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে পারবে। এও ওয়ার্ল্ডে কর্মী সংখ্যা ৩ হাজার ৬০০ জন। তাদের প্রত্যেকের বেতনই আগের তুলনায় বাড়ানো হয়েছে।

বর্তমান খুচরা ব্যবসায়ীরা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে চালের দাম বাড়ার কারণে। নীতিনির্ধারকদের পক্ষ থেকে সুপার মার্কেটগুলোকে অত্যধিক মুনাফার অভিযোগ করা হচ্ছিল। যদিও ব্যবসায়ীরা বিষয়টি অস্বীকার করেছে। মূল্যস্ফীতির কবলে পড়েছে সামগ্রিক অর্থনীতিই। অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিকসের (ওএনএস) জরিপে দেখা যায়, গত বছরের মে মাসের তুলনায় চলতি বছরের মে মাসে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ। খুচরা পণ্যের দাম বেড়েছে ১৮ দশমিক ৩ শতাংশ।

রবার্টস দাবি করেছেন, এক ধরনের কাল্পনিক অর্থনীতির দিকে ঝুঁকছে ব্রিটেন। যেখানে কেউ পরিশ্রম স্বীকার করতে চায় না। তার পরও প্রত্যেকেই বেশি মুনাফা করতে চায়। সরকার মহামারীর সময় বড় অংকের অর্থ ব্যয় করেছে, যা মূল্যস্ফীতির পেছনে অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছে। ত্বরান্বিত করেছে মন্দাবস্থা। যখন খুচরা ব্যবসায়ীদের ক্রয় খরচ বেড়ে যায়। তখন হয় তাকে সে বোঝা নিজেকে সামাল দিতে হয়, নাহলে পাশ কাটিয়ে দিতে হয় ভোক্তাদের দিকে।

ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি মূল্যস্ফীতির পেছনে বেশি মজুরিকেই অন্যতম অনুঘটক হিসেবে দায়ী করেছিলেন। সম্প্রতি প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ব্রিটেনে পরিষেবা খাতে মন্দা বাড়ছে। ফলে আরো এক দফা মূল্য বাড়ার আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবালের জরিপে উঠে এসেছে দেশটির পিএমআই তথ্য। দেখা যায়, উচ্চ পারিশ্রমিক কোম্পানিগুলোর খরচ বাড়িয়ে দিয়েছে এবং এখনো বাড়িয়ে চলছে।

ব্রিটিশ চেম্বার অব কমার্সের জরিপে দেখা যায়, ৪৫ শতাংশ ব্যবসাতেই মূল্য বাড়ানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে জুনের আগের তিন মাসের মধ্যে। দুই-তৃতীয়াংশ ফার্মই দাবি করেছে, কর্মীদের বেতন তাদের প্রতিষ্ঠানের জন্য বড় চাপ হিসেবে কাজ করে। বিসিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেভন হ্যাভিল্যান্ড বলেছেন, মূল্যস্ফীতির চাপ কিছুটা দুর্বল হচ্ছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত বেতনসংক্রান্ত খরচ অনেক বেশি। আমাদের গবেষণা ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়ার আগে ভাবাবে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরের পর থেকে ব্যাংক বেইজ রেট দশমিক ১ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে উন্নীত করেছে।

ক্রয় খরচ বড় ভূমিকা রাখছে অর্থনীতিতে। ঋণগ্রহীতারা পড়েছেন দীর্ঘ প্রতিবন্ধকতায়। উচ্চ খরচ দিয়ে বাজার পরিস্থিতির মোকাবেলা করা কঠিন। এও ওয়ার্ল্ড গত বছরে ১ কোটি ৫ পাউন্ড ঘাটতি গুনেছিল। যদিও চলতি বছরে ট্যাক্সপূর্ব মুনাফা হয়েছে ৭৬ লাখ পাউন্ড। অথচ একই সময়ে বিক্রয় কমেছে ১৭ শতাংশ। ফলে কোম্পানির লাভের সমীকরণ প্রস্তুত করেছে কর্মী ছাঁটাই ও খরচ কমিয়ে আনার মাধ্যমে।

গৃহস্থালি ব্যয়ও তুলনামূলক বেড়েছে, ফলে মানুষ ব্যয় সংকুচিত করার দিকে মনোযোগ দিয়েছে। বিশেষ করে বিদ্যুতের দাম বাড়ার পর তারা খরচ কমানোর দিকে মনোযোগ দিয়েছেন। খাদ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি হয়তো তুলনামূলক কম। কিন্তু উচ্চ মজুরি পরবর্তী সময়ে মূল্য কমার পথে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াতে পারে। ভোক্তা ব্যয়ের চালচিত্রও মূল্য সূচককে আগের অবস্থানে ফেরানোর আশাব্যঞ্জক বার্তা দিচ্ছে না।

এম.কে
০৭ জুলাই ২০২৩

আরো পড়ুন

ভারতে ৩০% ট্যাক্সের মাধ্যমে বৈধ হচ্ছে ক্রিপ্টোকারেন্সি

যুক্তরাজ্যে গত বছরে গড়ে প্রতিদিন বন্ধ হয়েছে ১৪ চেইন স্টোর

ওমিক্রনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের জন্য ১ বিলিয়ন পাউন্ড গ্রান্ট

অনলাইন ডেস্ক