যুক্তরাজ্যে জীবনযাত্রার সংকট থেকে বেঁচে থাকার লড়াইয়ে টিকে থাকার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলি শিক্ষার্থীদের সুযোগ দেওয়ার কথা ভাবছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের খণ্ডকালীন কাজের সুবিধা করে দেয়ার জন্য সপ্তাহে দুই বা তিনদিন একটানা ক্লাসের ব্যবস্থা করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে।
সপ্তাহ জুড়ে ক্লাস থাকার চেয়ে কমপ্যাক্ট টিচিং সময়সূচীর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যেখানে বক্তৃতা এবং সেমিনার সপ্তাহ জুড়ে না করে এক নাগাড়ে দুই বা তিন দিনের মধ্যে সপ্তাহের ক্লাস সমাপ্ত করার পক্ষপাতী কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের ধারনা অনুযায়ী অর্ধেকেরও বেশি শিক্ষার্থী এখন তাদের অধ্যয়নের পাশাপাশি কাজ করে থাকে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২০২২ সালে ৪৫% এবং ২০২১ সালে ৩৪% পড়ালেখার সাথে সাথে খণ্ডকালীন চাকুরির সাথে যুক্ত।
শিক্ষার জন্য ঋণ, খাবারের খরচ সহ নানা সমস্যার কারণে বর্তমান সময়ে তরুণ শিক্ষার্থীরা অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হয়ে পড়েছে। নিজেদের ব্যয় নির্বাহের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন শিক্ষার্থীরা খণ্ডকালীন চাকুরীর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। অনেক শিক্ষার্থীরা নিজের ব্যয় নির্বাহের জন্য ক্রেডিট কার্ডের দ্বারস্থ হয়ে পড়েছে।
উচ্চশিক্ষানীতি ইনস্টিটিউট (এইচপিআই) দ্বারা পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের অভিজ্ঞতা জরিপে শীর্ষস্থানীয় উদ্বেগের বিষয় হিসাবে স্থান পেয়েছে জীবনযাত্রার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে যেভাবে রেন্ট বৃদ্ধি পাচ্ছে, খাদ্যের দামও আওতার বাইরে প্রায়।
জরিপে অংশগ্রহণকারী তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি শিক্ষার্থী বলেছেন, জীবন চালোনোর জন্য খরচ তাদের পড়াশোনাকে প্রভাবিত করছে এবং এটি প্রধান কারণ পড়াশোনা বাদ দেয়ার।
এইচপিআইয়ের পরিচালক নিক হিলম্যান বলেছেন,” শিক্ষার্থীরা বেশি ঘন্টা কাজ করতে চায় তাদের জীবনকে পড়ালেখার সাথে চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য।
বিশ্ববিদ্যালয় মন্ত্রী সম্প্রতি বলেছেন, ফি বৃদ্ধি একজন শিক্ষার্থীর পড়ালেখা স্তব্ধ করে দিতে পারে। কারণ ব্যয়ের চাপের মুখোমুখি হয়েছে প্রত্যেকটি নাগরিক। তবে জীবনযাত্রার ব্যয়ের ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মূল সমস্যা হল বাসা ভাড়া এবং সুপারমার্কেটের আকাশচুম্বী জিনিসপত্রের দাম।
লেবার নেতা কেয়ার স্ট্যামার বলেন,বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি পড়ালেখা করতে সক্ষম হয়ত হতাম না। আমাদের সময়ে মেইনটেন্যান্স ফান্ড ব্যবহার করে খাবার বিল,থাকার ভাড়া সহ পড়ালেখার খরচ চালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলাম।
উল্লেখ্য যে, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য মেইনটেন্যান্স ফান্ড কনজারভেটিভ পার্টি বাতিল করে দেয় ২০১৫ সালে। যদিও লেবার দল মনে করে এই ফান্ড ব্যবহার করাই ছিল দরিদ্র ছাত্রদের টিকে থাকার একমাত্র সম্বল।
এম.কে
২৮ আগস্ট ২০২৩