২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সরকার আশ্রয়প্রার্থীদের হোটেল খাতে ব্যয় ৩০ শতাংশ কমিয়েছে। হোম অফিসের বার্ষিক হিসাব অনুযায়ী, এই সময়ে হোটেল খাতে ব্যয় হয়েছে £২.১ বিলিয়ন, যেখানে আগের বছর ব্যয় ছিল £৩ বিলিয়ন।
বিবিসি ভেরিফাইয়ের তথ্য বলছে, সরকারের খরচ কমানোর মূল কারণ হলো রুম ভাগাভাগির হার বৃদ্ধি ও সস্তা বিকল্প বাসস্থানে স্থানান্তর। গড়ে একজন আশ্রয়প্রার্থীর রাতপ্রতি খরচ কমে এসেছে £১৬২.১৬ থেকে £১১৮.৮৭-এ।
মার্চ ২০২৫ শেষে হোটেলে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৩২,৩৪৫ জন, যা আগের বছরের জুনের তুলনায় বেশি হলেও ডিসেম্বরে থাকা সংখ্যার তুলনায় কম। তবে এই সংখ্যা কমে এলেও বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, ছোট নৌকায় চ্যানেল পাড়ি দেওয়ার সংখ্যা বাড়ায় হোটেলের উপর নির্ভরতা আবারও বাড়তে পারে।
হোম অফিস জানিয়েছে, পরিবার ও শিশুদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হোটেল থেকে স্থানীয় আবাসনে সরানো হয়েছে। যারা হোটেল ত্যাগ করেছেন তাদের অনেকেই এখন হাউস ইন মাল্টিপল অকুপেশন (এইচএমও)-এ বাস করছেন, যেখানে তিন বা তার বেশি ব্যক্তি রান্নাঘর ও বাথরুম ভাগ করে ব্যবহার করেন।
সরকারের অন্যতম প্রধান সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সেরকো (Serco)-র সঙ্গে করা চুক্তির মাধ্যমে এসব বাড়ি সংগ্রহ করা হয়েছে। আগের সরকারের সময় স্বাক্ষরিত এসব চুক্তির কিছু শর্ত পুনরায় আলোচনার মাধ্যমে ব্যয় আরও হ্রাস করা হয়েছে।
রিপোর্টে বলা হয়, রুম শেয়ারিং বৃদ্ধির কারণে হোটেল সংখ্যা ৭১টি কমেছে। ২০২৪ সালের মার্চে ব্যবহৃত হোটেলের সংখ্যা ছিল ২৭৩টি।
লেবার সরকার ক্ষমতায় এসে কনজারভেটিভদের প্রস্তাবিত RAF স্ক্যাম্পটন সাইটে আশ্রয় প্রকল্প বাতিল করায় £৪৮.৫ মিলিয়ন লোকসান হয়েছে। হোম অফিস বলেছে, যদিও অর্থ হারানো হয়েছে, তবে এই সাইট ব্যবহারে খরচ আরও বেশি হতো।
এছাড়া, রুয়ান্ডা চুক্তির আওতায় দেশটির অর্থনৈতিক সহায়তায় প্রদান করা £২৭০ মিলিয়ন ফেরত আসেনি। যদিও প্রকল্পটি আইনি জটিলতায় থেমে যায় এবং চূড়ান্তভাবে বাতিল করে লেবার সরকার, তবে রুয়ান্ডা জানায় তারা অর্থ ফেরত দিতে বাধ্য নয়।
সরকার আশ্বাস দিয়েছে, বর্তমান সংসদ মেয়াদের মধ্যে হোটেল নির্ভরতা পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে বাস্তব চিত্রে এখনই সেই সম্ভাবনা খুব বেশি দেখা যাচ্ছে না বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সূত্রঃ বিবিসি
এম.কে
১৯ জুলাই ২০২৫