যুক্তরাজ্যের অর্থমন্ত্রী পেনশন ব্যবস্থায় সম্ভাব্য কাটছাঁটের পরিকল্পনা করছেন। তবে যুক্তরাজ্যের পেনশন সচিব বলছেন, চাকুরী প্রত্যাশীদের জন্য আরও সহায়তা দেওয়াই মূল বিষয়।
কাজ ও পেনশন বিষয়ক সচিব লিজ কেন্ডাল বলেছেন, আরও বেশি মানুষকে চাকুরীর সুযোগ করে দেওয়াই এই বিলের মূল উদ্দেশ্যে। অর্থমন্ত্রী ২৬ মার্চ আগামী বছরে পেনশনের ব্যবস্থায় পরিবর্তনের আগে সঞ্চয়ের পথ খুঁজছেন।
তথ্যমতে জানা যায়, অর্থমন্ত্রী রেচেল রিভস পেনশন ব্যবস্থাকে ব্যয়ের কাটছাঁটের উৎস হিসেবে বিবেচনা করছেন এবং তার নিজস্ব আর্থিক নিয়ম মেনে চলার জন্য পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত হচ্ছেন। তবে কেন্ডাল বলেছেন, মানুষের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে পরিবর্তন আনা উচিত।
কেন্ডাল বলেছেন, “ আমি মনে করি, বিলকে আরও স্থিতিশীল করতে হলে মানুষকে কাজে ফিরিয়ে আনা জরুরি। আমরা এমন বড় ধরনের সংস্কার আনতে চলেছি, যা বাস্তবে মানুষকে কর্মসংস্থানের পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।”
কাজ ও পেনশন বিভাগ (DWP) আগামী কয়েক দিনের মধ্যে নিয়ে একটি নতুন নীতি প্রস্তাব প্রকাশ করতে চলেছে, যা রিভসের ঘোষণার আগে প্রকাশিত হবে।
স্বাধীন বাজেট দপ্তর (OBR) বৈশ্বিক অর্থনীতির অবনতির কারণে প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমানোর সম্ভাবনা দেখাচ্ছে। ফলে অর্থমন্ত্রী তার আর্থিক লক্ষ্যমাত্রা বজায় রাখতে ব্যয় কমানোর পরিকল্পনা করছেন।
কেন্ডাল নির্দিষ্ট নীতি পরিবর্তন সম্পর্কে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। “আমি স্পষ্ট করতে চাই যে আমাদের লক্ষ্য ব্যবস্থাকে সংস্কার করা এবং পরিবর্তন আনা, যাতে মানুষ প্রয়োজনীয় সহায়তা পায়—এটাই একমাত্র পথ।”
তবে তিনি বারবার এই খবর অস্বীকার করছেন যে, অর্থ মন্ত্রণালয় £৫ বিলিয়ন পর্যন্ত কাটছাঁটের পরিকল্পনা করছে।
একজন জ্যেষ্ঠ সরকারি সূত্র বলছেন, বর্তমান ব্যবস্থা “পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে, আপনাকে ও,বি,আর-এর রিপোর্টের অপেক্ষা করতে হবে।”
মন্ত্রীদের হিসাব কীভাবে মিলে তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে, কেন্ডাল বলেছেন, “আমরা কাগজে-কলমে হিসাব করি না। আমরা সর্বদা মানুষের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার দিক থেকেই চিন্তা করি।”
কিছু লেবার কৌশলবিদ মনে করছেন, বেনিফিট দাবিদারদের বিষয়ে কঠোর অবস্থান না নিলে ডানপন্থী ভোটারদের আকৃষ্ট করা সম্ভব হবে না। নতুবা ডানপন্থী ভোটাররা রিফর্ম পার্টির দিকে ঝুঁকতে পারেন।
তবে কেন্ডাল বলেছেন, লেবার পার্টির লক্ষ্য হচ্ছে বেনিফিটের প্রয়োজন রয়েছে এমন ব্যক্তিদের সাহায্য করা। টোরিরা আপনাকে বিশ্বাস করাতে চাইবে যে বেনিফিট গ্রহণকারী, অসুস্থ ও অক্ষম ব্যক্তিরা আসলে অলস ও সুযোগসন্ধানী। কিন্তু এটি সত্যি নয়।
পেনশন সচিব কেন্ডাল পূর্ব লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসে এক চাকুরীর কেন্দ্র পরিদর্শনের সময় এসব কথা বলেন। যেখানে তিনি বেনিফিট দাবিদারদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
কেন্ডাল বলেছেন, “যদি আমরা চাকুরী দেওয়া প্রতিষ্ঠানদের প্রশাসনিক কাজ থেকে মুক্ত করতে পারি—তাহলে আমরা বিদ্যমান সম্পদের মধ্যেই অনেক কিছু করতে পারি।”
কেন্ডাল ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের (TUC) মহাসচিব পল নোয়াক এবং পি,সি,এস-এর প্রেসিডেন্ট মার্টিন কাভানাঘের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন, যেখানে তারা জবসেন্টার প্লাস-এর কর্মীদের চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
নোয়াক সরকারকে হুঁশিয়ার করেছেন সরকারি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি না করলে তা কার্যকর নীতি বাস্তবায়নে সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। যদি সরকার সরকারি সেবাগুলো পুনর্গঠনে সত্যিই আন্তরিক হয়, তবে সরকারি কর্মীদের যথাযথভাবে সহায়তা দিতেও আন্তরিক হতে হবে।”
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
০৭ মার্চ ২০২৫