ইংল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ ঠেকাতে আর blanket বা সামগ্রিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা যাবে না। শিক্ষাঙ্গনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় নতুন কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে শিক্ষাবিষয়ক নিয়ন্ত্রক সংস্থা অফিস ফর স্টুডেন্টস (OfS)।
নতুন এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শুধু অবৈধ বক্তব্য বা হয়রানির জন্যই শিক্ষার্থী ও কর্মীদের শাস্তি দিতে পারবে। আইনসঙ্গত মতামতের জন্য কেউ যেন প্রতিবন্ধকতার শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে চলমান প্রতিবাদ শিবির বন্ধে দীর্ঘমেয়াদি নিষেধাজ্ঞা আরোপ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে যদি কোনো প্রতিবাদ ভয়ভীতি বা হয়রানির সৃষ্টি করে, বিশেষ করে ইহুদি শিক্ষার্থীদের জন্য, তাহলে তা বন্ধ করতে বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় একাডেমিকদের নির্দিষ্ট মতাদর্শ সমর্থনে বাধ্য না করার কথা বলা হয়েছে। কেউ যদি আইনসঙ্গত মতামত পোষণ করেন, তবে তা নিয়ে অভিযোগ জানাতে শিক্ষার্থী বা কর্মীদের উৎসাহিত করা যাবে না। অতিথি বক্তাদেরও মতপ্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।
উচ্চশিক্ষা (মতপ্রকাশ স্বাধীনতা) আইন অনুযায়ী এই নির্দেশনা আগামী আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এতে বলা হয়েছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নিজেদের নিয়মনীতি তৈরি করে মতপ্রকাশের ঝুঁকি ও পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।
এছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কর্মী ও শিক্ষার্থীরা আইনসঙ্গতভাবে মত প্রকাশ করতে পারবেন, তা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত করলেও। তবে যদি কেউ পাঠদান বা শিক্ষা কার্যক্রমে বাধা দেন, তাহলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
এ বছরের শুরুতে ইউনিভার্সিটি অব সাসেক্সকে অধ্যাপক ক্যাথলিন স্টকের মতপ্রকাশের অধিকার রক্ষা না করায় পাঁচ লাখ ৮৫ হাজার পাউন্ড জরিমানা করা হয়। তার লিঙ্গ পরিচয় নিয়ে মতামতকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে পড়েছিলেন তিনি।
এক জরিপে দেখা গেছে, ২১ শতাংশ একাডেমিক শিক্ষকেরা মনে করেন তারা শ্রেণিকক্ষে বিতর্কিত বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে স্বাধীন নন। ডানপন্থী শিক্ষকদের মধ্যে এ হার ৩২ শতাংশ এবং বামপন্থীদের মধ্যে ১৯ শতাংশ।
OfS-এর স্বাধীন মতপ্রকাশ বিষয়ক পরিচালক আরিফ আহমেদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রয়োজনে বক্তব্য সীমিত করতে পারবে। যেমন, পরীক্ষা চলাকালে চিৎকার বা পাঠদানে রাজনৈতিক মত চাপিয়ে দেওয়া গ্রহণযোগ্য নয়।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হয়রানিমূলক বক্তব্য, বিশেষ করে ধর্মীয় বিদ্বেষমূলক আচরণ বরদাস্ত করা যাবে না। একই সঙ্গে বিদেশি সরকার-নির্ভর অর্থায়নে আসা শিক্ষার্থীদের ভর্তিতে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ইউনিভার্সিটিজ ইউকে জানিয়েছে, তারা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষায় একমত। তবে বিষয়টি জটিল হওয়ায় তারা OfS ও সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ চালিয়ে যাবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নির্দেশনা পালনে সহায়তা করবে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১৯ জুন ২০২৫