যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশর সাবেক হাইকমিশনার সাইদা মুনা হাইকমিশনের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি ও উন্নতির পরিকল্পনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছেন। তার এই অবহেলার কারণে বাংলাদেশ সরকার হারিয়েছে অনেক রাজস্ব।
লন্ডন বাংলাদেশ হাই কমিশনের পাসপোর্ট এবং কনস্যুলার বিভাগটি জরুরিভাবে কর্মীদের দিয়ে নতুনকরে সাজানো প্রয়োজন। বিভিন্ন সুবিধাদি বর্ধনও অত্যাবশকীয়।
বর্তমান হাই কমিশন যে অফিস ব্যবহার করছে সেখানে কিছু লোক দেখানো পরিবর্তন করেছিলেন সাবেক হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম। নিচতলায় প্রবেশদ্বারটিতে চিত্রাঙ্কন সাঁটানো এবং সাজসজ্জা সহ কিছু রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়েছিল। নীচতলা সভা এবং প্রেস কনফারেন্সের জন্য ব্যবহৃত হতো। মূল বিল্ডিংয়ের পাশে কর্নার বিল্ডিংটি পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হয়েছিল বাংলাদেশ হাইকমিশন। যেখানে ভিজিটর রেজিস্ট্রেশন ও অতিরিক্ত কনস্যুলার বিভাগ চালু করা হয়। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেছিলেন যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনের এই অতিরিক্ত সেবা ব্যবস্থা।
বিল্ডিং সম্প্রসারণ ও চাকচিক্য দেখা গেলেও হাইকমিশনে ঘাটতি ছিল সেবা ব্যবস্থায়। “উন্নত কনস্যুলার পরিষেবা”- মুখে ঘোষণা দিলেও প্রকৃতভাবে সেবা ব্যবস্থা সীমাবদ্ধ ছিল।
বাংলাদশের পাসপোর্ট কনস্যুলার বিভাগের বেসমেন্টে কিছু সেবা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। তবে আশ্চর্যের সাথে লক্ষ্য করা যায় সেখানে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন নিয়ম বা আইনকানুন মানা হয় না। সবচেয়ে দুঃখজনক হল বেসমেন্টে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য পর্যাপ্ত হুইলচেয়ার অ্যাক্সেসের সুবিধার অভাব রয়েছে। তাছাড়া ধারাবাহিকভাবে উপচে পড়া ভিড় নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। ফায়ার এক্সিটের সুবিধা নিয়েও প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে বারংবার যা বাংলাদেশ হাইকমিশনের কর্তাব্যক্তিরা এড়িয়ে গিয়েছেন।
উল্লেখ্য যে, বেসমেন্টটি একাধিক আইনী প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে, যেমন:
(1) অক্ষমতা বৈষম্য আইন ১৯৯৫,
(২) কর্ম আইনে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা,
(3) ফায়ার সেফটি অর্ডার ২০০৫, ফায়ার সেফটি অ্যাক্ট ২০২১,
(৪) ফায়ার সেফটি (ইংল্যান্ড) প্রবিধান ২০২২,
সবচেয়ে হতাশাব্যঞ্জক ব্যাপার হল সাইদা মুনা তাসনিম, ছয় বছর অফিসে থাকা সত্ত্বেও, পাসপোর্ট বিভাগের উন্নয়ন হয় নাই যদিও এই বিভাগটি হাই কমিশনের সর্বোচ্চ রাজস্ব উপার্জনকারী। এই বিভাগকে গুরুতরভাবে অবহেলিত রাখা হয়েছে।
একজন ভুক্তভোগী হতে জানা যায়, ২০২৪ সালের শুরুতে তিনি তার স্ত্রীর বাংলাদেশি পাসপোর্ট পুনর্নবীকরণে আবেদন করেন। চার মাসের মধ্যে কনস্যুলার বিভাগে তিনবার পরিদর্শন করতে হয়। ভুক্তভোগীর স্ত্রীর বাবার নামে একটি ত্রুটির কারণে অপ্রয়োজনীয় জটিলতার মুখোমুখি করা হয়। এই ত্রুটি নিবারণে কিছু অদক্ষ কর্মীদের নিকট হতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এবং অন্যায্য আচরণ ছাড়া কিছুই পান নাই ভুক্তভোগী। বাংলাদেশ থেকে দু’বার ভুক্তভোগীর স্ত্রীর জন্ম নিবন্ধন ও প্রশংসাপত্র আনতে বাধ্য করা হয় কিন্তু তাতে,কোনো লাভ হয় নাই।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী তার একজন সাংবাদিক বন্ধু নাম
এএসএম মাসুমের সাহায্যে এই সমস্যা মোকাবেলা করেন। সাংবাদিক মাসুম কনস্যুলার পাসপোর্ট বিভাগে সিনিয়র অফিসারের সাথে ভুক্তভোগীর পরিচয় করিয়ে দেন যা কাজটি সম্পাদনের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করছিল। কিন্তু এতে প্রশ্ন জাগে পরিচিত মানুষ নিয়ে আসলেই যদি সমস্যার সমাধান সম্ভব তাহলে আরো যারা সাধারণ আমজনতা রয়েছেন তারা কিভাবে নিজেদের সমস্যা মোকাবেলা করবেন। লন্ডন হাইকমিশনে বাংলাদেশিদের সাথে এইরকম স্বজনপ্রীতি ছিল খুব স্বাভাবিক ঘটনা যা অন্য কোনো দেশের হাইকমিশনে কল্পনা করাও সম্ভব নয়।
উল্লেখ্য যে, ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের দাবি তারা ভালো সেবা ব্যবস্থা নিয়ে চাপমুক্ত পরিবেশে বাংলাদেশ হাইকমিশনের কার্যক্রম দেখতে চান। এই বিষয়গুলির দিকে নতুন হাইকমিশনার যাতে নজর দেন সেটাই তাদের দাবি। আগের হাইকমিশনার যেভাবে অবহেলা করেছেন সেটা হতে মুক্তি চান সাধারণ মানুষ।
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে
২৭ অক্টোবর ২০২৪