17.1 C
London
July 27, 2025
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

শয়ে শয়ে মুসলমানকে বেআইনিভাবে বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে ভারতঃ হিউমান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন

আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউমান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) অভিযোগ করেছে, ভারতের কর্তৃপক্ষ কোনো আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই শয়ে শয়ে বাংলাভাষী মুসলমানকে বাংলাদেশে জোরপূর্বক বিতাড়িত করছে। সংগঠনটির দাবি, মে মাসের ৭ তারিখ থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত ভারত দেড় হাজারেরও বেশি মুসলমান নারী, পুরুষ ও শিশুকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। এই সংখ্যা তারা সংগ্রহ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) প্রদত্ত তথ্য থেকে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বিতাড়িতদের মধ্যে বহুজন ভারতের সীমান্তবর্তী রাজ্যের নাগরিক, পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে আসা প্রায় একশ রোহিঙ্গা শরণার্থীও রয়েছেন। ভারত সরকার এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক তথ্য প্রকাশ করেনি।

হিউমান রাইটস ওয়াচের এশিয়া বিভাগের পরিচালক ইলেইন পিয়ারসন বলেছেন, “ভারতীয় নাগরিকসহ বাঙালি মুসলমানদের নির্বিচারে বিতাড়ন করে বিজেপি সরকার বৈষম্য সৃষ্টি করছে।” প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, আটক ব্যক্তিদের মারধর, নাগরিকত্ব যাচাই ছাড়া সীমান্ত পার করানো এবং ব্যক্তিগত সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করার মতো ঘটনাও ঘটেছে।

জুন মাসে সংগঠনটি ১৮ জন ভুক্তভোগী এবং নয়জন ভুক্তভোগীর পরিবারের সাক্ষাৎকার নিয়েছে। এতে উঠে এসেছে, অনেক ভারতীয় নাগরিককেও বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। আবার কেউ কেউ ভারতে ফিরে এসে পুনরায় আটক হওয়ার পর নিখোঁজ হয়ে গেছেন।

হিউমান রাইটস ওয়াচ জানায়, আসাম, উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, ওড়িশা এবং রাজস্থানের বিজেপি শাসিত সরকার মুসলমানদের টার্গেট করে আটক করছে, যাদের অধিকাংশই গরিব পরিযায়ী শ্রমিক। কিছু ক্ষেত্রে ভুলবশত ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়ার পর তাদের ফিরিয়ে আনা হয়েছে।

 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কাশ্মীরের পহেলগামে হিন্দু পর্যটকদের ওপর হামলার পর থেকেই মুসলমানদের হেনস্তা বাড়ে। নাগরিকত্বের প্রমাণ অগ্রাহ্য করে আটক, ফোন বাজেয়াপ্ত ও পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করার মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগও এসেছে।

বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, ‘পুশ-ইন’ গ্রহণযোগ্য নয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতের কাছে জানিয়েছে, শুধুমাত্র যাচাই করা বাংলাদেশি নাগরিকদেরই সঠিক প্রক্রিয়ায় প্রত্যর্পণ করা হবে। এ ছাড়া, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জোরপূর্বক সমুদ্রে নামিয়ে দেওয়ার ঘটনা ‘মানবিক শালীনতার অবমাননা’ এবং আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন বলে জাতিসংঘের বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুস মন্তব্য করেছেন।

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট এই অভিযোগকে ‘সাজানো গল্প’ বলে প্রত্যাখ্যান করলেও কেন্দ্রীয় সরকার ঘটনাগুলো অস্বীকার করেনি। মানবাধিকার সংগঠনটি মনে করিয়ে দিয়েছে, আন্তর্জাতিক কনভেনশন অনুযায়ী জাতিগত বৈষম্য রোধে ভারত বাধ্য, কিন্তু বাস্তবে বাংলাভাষী মুসলমানদের অধিকার রক্ষায় ব্যর্থ হয়েছে।

বিএসএফ আনুষ্ঠানিকভাবে ‘পুশ-ব্যাক’ অস্বীকার করলেও অনানুষ্ঠানিকভাবে কর্মকর্তারা স্বীকার করেছেন, বিপুল সংখ্যক অনুপ্রবেশকারী আটক করে কারাগারে রাখার জায়গা না থাকায় তারা এই পদ্ধতি গ্রহণ করছে। তবে এই প্রক্রিয়ায় অনেক নিরীহ নাগরিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার হচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে
২৬ জুলাই ২০২৫

আরো পড়ুন

অঢেল সম্পদ বরখাস্ত লে. জেনারেল মজিবুরের

সিরাজগঞ্জে সাংবাদিক ও ৫ আওয়ামী লীগ নেতা নিহত

কথা রাখছেন প্রবাসীরা, সেপ্টেম্বরেও পাঠালেন ২৪০.৫ কোটি ডলার