দেশী সংবাদপত্রকে অন্য রাষ্ট্রের মালিকানায় যাওয়া থেকে বিরত রাখতে নতুন একটি বিল আনছে যুক্তরাজ্য। এর মাধ্যমে আবুধাবি-সমর্থিত রেডবার্ড আইএমআইয়ের দ্য টেলিগ্রাফ পত্রিকা কেনার সিদ্ধান্ত বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ ব্রিটেনের সবচেয়ে পরিচিত সংবাদমাধ্যম গুলোর একটি। ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির সঙ্গে দ্য টেলিগ্রাফের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। ১৬৮ বছরের পুরনো এ সংবাদপত্রের মালিকানা বদলের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব নিয়ে সম্প্রতি বেশ আলোচনা হয়েছে।
ব্রিটেনের হাউজ অব লর্ডসে সংস্কৃতিমন্ত্রী স্টিফেন পারকিনসন জানিয়েছেন, বিদেশী রাষ্ট্রগুলোকে ব্রিটিশ সংবাদপত্রের মালিকানা পাওয়া থেকে বিরত রাখতে আইন সংশোধন করবে সরকার। তিনি বলেন, ‘অন্য রাষ্ট্রের মালিকানা, প্রভাব বা নিয়ন্ত্রণ জড়িত থাকে, তেমন ক্ষেত্রে সংবাদপত্র ও সাময়িকীর একীভূতকরণকে বাদ দিতে আইন সংশোধন করব।’
স্টিফেন পারকিনসন জানান, নতুন পদক্ষেপ সরকারের জন্য নতুন বাধ্যবাধকতা তৈরি করবে। এর অধীনে প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রে মিডিয়া একীকরণকে প্রতিযোগিতা ও বাজারবিষয়ক কর্তৃপক্ষ সিএমএর মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হবে।
সংশ্লিষ্ট একজন সরকারি কর্মকর্তা জানান, আইনের প্রস্তাবিত পরিবর্তন রেডবার্ডের দ্য টেলিগ্রাফ কিনে নেয়ার ক্ষমতা আটকে দিতে পারে।
রেডবার্ড আইএমআই পরিচালনা করেন সিএনএনের সাবেক প্রধান জেফ জুকার। এ সংস্থার বেশির ভাগ তহবিল দেয় আইএম আবুধাবি। নতুন খবরের প্রতিক্রিয়ায় জেফ জুকারের ভাষ্য, আইনের সংশোধনের প্রস্তাব হতাশাজনক এবং পরবর্তী পদক্ষেপ দেখে তারা পরিস্থিতির মূল্যায়ন করবেন।
দ্য টেলিগ্রাফ ও রেডবার্ডের চুক্তিটি এরই মধ্যে বিদ্যমান আইনে তদন্তের অধীনে। বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন পরিকল্পনাটি গণমাধ্যমে অন্য রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ রোধের লক্ষ্যকে আরো স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে।
দ্য টেলিগ্রাফকে ‘টোরিগ্রাফ’ নামেও ডাকা হয়। কারণ সংবাদপত্রটি দীর্ঘদিন ধরে কনজারভেটিভ বা টোরি পার্টিকে সমর্থন দিয়ে আসছে। উইনস্টল চার্চিল ও বরিস জনসনের মতো সাবেক রক্ষণশীল প্রধানমন্ত্রীরা এ সংবাদপত্রে লিখেছেন। ২০২৪ সালের নির্বাচন নিয়ে যখন প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক চাপের মধ্যে, তখন দ্য টেলিগ্রাফের মালিকানার প্রসঙ্গটি আলোচনায় এল।
সম্প্রতি হাউজ অব লর্ডসের সাবেক রক্ষণশীল নেতা টিনা স্টোয়েল ডিজিটাল মার্কেটস, কম্পিটিশন ও কনজিউমার বিলের একটি সংশোধনী প্রস্তাব করেছিলেন। এর পরই সরকারের ওপর আইন সংশোধনের চাপ তৈরি হচ্ছে। কারণ এ বিল পাস হলে বিদেশী রাষ্ট্রের ব্রিটিশ মিডিয়া সংস্থার অধিগ্রহণ করার বিষয়ে সংসদ ভেটো দেয়ার ক্ষমতা পাবে। এ সংশোধনীর প্রস্তাবে শতাধিক সদস্য সমর্থন করেছেন। এরপর অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকেই বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নেয়া হলো।
সংবাদপত্রে বিদেশী নিয়ন্ত্রণের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি শিগগিরই বিল আকারে উত্থাপিত হবে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে হাউজ অব লর্ডস ও হাউজ অব কমন্সে তোলা হবে এ বিল।
সূত্রঃ রয়টার্স
এম.কে
২০ মার্চ ২০২৪