14.8 C
London
November 7, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

‘সবচেয়ে খারাপ’ হলেও ঘুরে দেখার মতো—লন্ডনের নিচের দশ কাউন্সিলের অজানা সৌন্দর্য

লন্ডনের ৩২টি কাউন্সিলের ওপর টেলিগ্রাফ ট্রাভেল পরিচালিত এক সমীক্ষায় প্রকাশ পেয়েছে রাজধানীর সেরা ও সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা এলাকার চিত্র। রিচমন্ড-আপন-থেমস শীর্ষে থাকলেও তালিকার নিচের দশ কাউন্সিলও কম আকর্ষণীয় নয়—এখানেও আছে প্রকৃতি, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ক্রীড়ার নানা উপাদান।

২৩তম স্থানে থাকা Sutton কাউন্সিল প্রান্তিক অবস্থানের কারণে পর্যটন আকর্ষণে দুর্বল হলেও অপরাধের হার সবচেয়ে কম। এখানে আছে ন্যাশনাল লিগের দল Sutton United, তিনটি ‘Great Tree’, লন্ডনের চতুর্থ উচ্চতম স্থান Big Wood Peak এবং দুইটি প্রকৃতি সংরক্ষণ এলাকা।

Hillingdon কাউন্সিল (২৪তম) তালিকায় পিছিয়ে পড়েছে মোটরওয়ে ও Heathrow বিমানবন্দরের কারণে, তবে ১১টি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এলাকা ও ৬টি ‘Special Scientific Interest’ সাইট এটিকে প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে বিশেষ করে তুলেছে। ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান Harmondsworth Barn, যা Sir John Betjeman একে বলেছিলেন “Cathedral of Middlesex”।

Ealing কাউন্সিল (২৫তম) বড় ফুটবল দল বা খ্যাতনামা দোকান না থাকলেও প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এলাকা প্রকৃতি সংরক্ষিত অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত। এখানে আছে Osterley Park, জাপানি রেস্টুরেন্ট, রাগবি দল Ealing Trailfinders ও একটি গলফ কোর্স।

Hammersmith and Fulham কাউন্সিল (২৬তম) একমাত্র অভ্যন্তরীণ বরো, যা নিচের দশে পড়েছে। অপরাধের হার বেশি হলেও এখানে রয়েছে O2 Eventim Apollo, থেমস নদীর মনোরম হাঁটার পথ এবং তিনটি পেশাদার ফুটবল ক্লাব—Chelsea, Fulham ও QPR। পাশাপাশি তিনটি মিশেলিন-তারকাপ্রাপ্ত রেস্টুরেন্ট ও নয়টি সিনেমা হলও রয়েছে।

Harrow কাউন্সিল (২৭তম) সবচেয়ে কম উন্মুক্ত জায়গা থাকা সত্ত্বেও লন্ডনের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন অপরাধপ্রবণ অঞ্চল। Barnet FC-এর মাঠ The Hive এখানেই অবস্থিত। দর্শনীয় স্থানের মধ্যে রয়েছে Headstone Manor Museum এবং যুক্তরাজ্যের প্রথম শ্রীলঙ্কান হিন্দু মন্দির Sri Ayyappan Temple।

Kingston upon Thames কাউন্সিল (২৮তম) বন্যপ্রাণী ও খোলা জায়গায় পিছিয়ে থাকলেও এখানে আছে ইংলিশ হেরিটেজ সাইট Coombe Conduit, দুটি স্থানীয় ব্রিউয়ারি ও জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র Chessington World of Adventures।

Redbridge কাউন্সিল (২৯তম) সাংস্কৃতিক দিক থেকে দুর্বল হলেও সবুজে ঘেরা। বরোর প্রায় ২৮ শতাংশ এলাকা প্রকৃতি সংরক্ষিত এবং এখানে রয়েছে Wanstead Park ও Hainault Forest, সঙ্গে লন্ডনের চারটি ‘Great Tree’।

Barking and Dagenham কাউন্সিল (৩০তম) লন্ডনের সবচেয়ে কম সুখী জনগোষ্ঠীর নিবাস হলেও Eastbrookend Country Park ও Eastbury Manor House এলাকাটিকে আলাদা মর্যাদা দিয়েছে। বরোটি ন্যাশনাল লটারি হেরিটেজ ফান্ড থেকে ২০০ মিলিয়ন পাউন্ড পাচ্ছে, যা নতুন প্রাণ আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Newham কাউন্সিল (৩১তম) উচ্চ অপরাধহার ও জনসংখ্যার ঘনত্বের কারণে তালিকার নিচে থাকলেও এখানে রয়েছে Queen Elizabeth Olympic Park, যা এলাকাটির চেহারা বদলে দিয়েছে। এখানেই ওয়েস্ট হ্যামের ঘরের মাঠ ও লন্ডন সিটি বিমানবন্দর।

তালিকার শেষ স্থানে রয়েছে Brent কাউন্সিল (৩২তম)। মাত্র ১০ শতাংশ প্রাকৃতিক সংরক্ষণ এলাকা থাকলেও এখানে রয়েছে যুক্তরাজ্যের সবচেয়ে বিখ্যাত ওয়েম্বলি স্টেডিয়াম ও এরিনা। নীসডেন মন্দির, স্থানীয় খাবারের বাজার এবং Timeout স্বীকৃত Retrouvius Architectural Design শপ এলাকাটির বৈচিত্র্যময় রূপ তুলে ধরে।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, লন্ডনের সবচেয়ে নিচের দিকের এই কাউন্সিলগুলো হয়তো বসবাসের জন্য আদর্শ নয়, তবে এগুলোর প্রতিটি এলাকাতেই আছে ভিন্ন স্বাদ—ইতিহাস, প্রকৃতি ও বহুসাংস্কৃতিক জীবনের এক জীবন্ত মিশ্রণ, যা লন্ডন শহরের সামগ্রিক বৈচিত্র্যকেই তুলে ধরে।

সূত্রঃ দ্য টেলিগ্রাফ

এম.কে

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে অ্যাঞ্জেলা রেইনারের পদত্যাগে টালমাটাল কেয়ার স্টারমারের মন্ত্রিসভা

ক্রিসমাসের সময় ব্রিটেনের ‘টিয়ার-৪’ এলাকায় যা যা মানতে হবে

যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্যসেবায় যুক্ত হতে যাচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থা