কাগজের ফুল বিক্রি করে সুইডেনের শরণার্থী শিশু মুরফাহ হামিদ একটি দাতব্য সংস্থার জন্য রেকর্ড পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছে৷ এমন খবরে সকলের মন জয় করে নিয়েছে এই শিশুটি৷
বাৎসরিক মে ফ্লাওয়ার ক্যাম্পেইন উপলক্ষ্যে স্ক্যান্ডিনেভিয়ার দেশ সুইডেনে কাগজের ফুল বিক্রি করে থাকে স্কুলের শিশুরা৷ ফুল বিক্রির অর্থ দাতব্য সংস্থায় জমা করা হয়৷
প্রতি বছরের মতো এই উপলক্ষ্যে এবারও কাগজের ফুল বিক্রি করছিল শিশুরা৷ আর এবছর ফুল বিক্রি করে রেকর্ড পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ করেছে হামিদ৷ মজার বিষয় হলো দেশটির প্রধানমন্ত্রীর কাছেও ফুল বিক্রির সুযোগ পেয়েছে সে৷
হিসাব অনুযায়ী, প্রত্যেক শিশু এই সময়টিতে ফুল বিক্রি করে গড়ে একশ ২৬ ডলার করে সংগ্রহ করে থাকে৷ কিন্তু হামিদের অর্থ সংগ্রহের পরিমাণ ছিল দুই লাখ ৩৩ হাজার ডলার৷
নিয়মানুযায়ী, সংগৃহীত অর্থের শতকরা দশ ভাগ পেয়ে থাকে শিশুরা৷ তাছাড়া ক্রেতা কোনো উপহার বা বখশিস দিলে তা-ও শিশুকে দেওয়া হয়৷
হামিদের সংগৃহীত অর্থের পরিমাণের বিষয়ে দাতব্য সংস্থাটির প্রধান আসে হেনেল বলেোন, ‘‘প্রায় একশ বছর ধরে আমরা দাতব্য সংস্থা চালাচ্ছি৷ এমনটা কখনো দেখিনি৷’’
হামিদের জন্ম সুইডেনে৷ আফ্রিকার দেশ ইথিওপিয়া থেকে সুইডেনে পাড়ি জমিয়েছেন তার বাবা-মা৷
হামিদ জানায়, অর্থ সংগ্রহের প্রথম দিনে সে পাঁচ ঘণ্টায় অল্প কয়েকটি ফুল বিক্রি করেতে পেরেছিল৷ সেসময় কয়েকজন তাকে রাস্তা থেকে সরে যেতেও বলেছিল অর্থাৎ তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছিল৷
ব্যাপারটি সে তার পরিবারের এক বন্ধুকে জানালে, এ বিষয়ে তারা ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয়৷
এরপর থেকে ফেসবুকে হামিদের সমর্থনে পোস্টটি ভাইরাল হয়ে যায়৷ যদিও অনেকে আবার বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্যও করছিল৷
হামিদের সমর্থনে এগিয়ে আসেন দেশটির রাজনীতিবিদেরাও৷ এমনকি প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টেরসন সামাজিক মাধ্যমে হামিদকে সমর্থন করেন এবং তার কাছ ফুল কেনেন৷
অবশ্য লায়লা রহমান যিনি ফুসবুকে পোস্টটি দিয়েছিলেন তিনিও ভাবেননি বিষয়টি এভাবে সাড়া ফেলবে৷ তিনি বলেন, আমি আগে অনেক পোস্ট দিয়েছি কিন্তু কোনোটিই ভাইরাল হয়নি৷
তিনি বলেন, এটি আসলে এ বিষয়ে অর্থাৎ ১১ বছরের একটি শিশু যে এখানে জন্মগ্রহণ করেছে কিন্তু তার বাবা-মায়ের আশ্রয়ের আবেদন এখনো প্রক্রিয়াধীন সে বিষয়ে সচেতনা তৈরি করবে৷
সুইডেনের নিয়ম অনুযায়ী, বাবা-মায়ের রেসিডেন্সি স্ট্যাটাস না থাকলে সন্তানেরা শুধু জন্মসূত্র প্রয়োজ্য হবে না৷
বিষয়টি নিয়ে সম্ভবত ১১ বছরের হামিদও উদ্বিগ্ন৷ স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, হামিদ তার মাকে জিজ্ঞেস করছে- সুইডেনের স্থায়ীভাবে বসবাসের অনুমতি কেনা যায় কি না৷?