প্রশাসন ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের অবহেলার কারণে সুন্দরবনের মধু ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্যের (জিআই) মর্যাদা হারিয়েছে। ভবিষ্যতে আরও পণ্যের জিআই হারানোর আশঙ্কা আছে বলে ধারণা করছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সিপিডি মনে করে, মেধাস্বত্বকে ধরে না রাখলে অন্যরা সুযোগ নেবে।
গত বুধবার সিপিডির ধানমন্ডি কার্যালয়ে সুন্দরবনের মধু এখন ভারতের ভৌগোলিক নির্দেশক পণ্য (জিআই) শীর্ষক সংলাপে সংস্থাটির ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য এ কথা বলেন।
দেবপ্রিয় আরও বলেন, ‘সুন্দরবনের মধুকে জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃত দেওয়ার জন্য ২০১৭ সালের ৭ আগস্ট বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক রেজিস্ট্রেশনের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিলেন। দীর্ঘ সাত বছরেও সেটির রেজিস্ট্রেশন হয়নি। অথচ ভারত আমাদের চার বছর পর ২০২১ সালে আবেদন করে জিআই স্বত্ব পেয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের পণ্যের ক্ষেত্রে কেন এমন হচ্ছে? এই অবহেলার দায়িত্ব কে নেবে? জামালপুরের নকশিকাঁথা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ক্ষীরশাপাতি (আম), রাজশাহীর ফজলি আম, টাঙ্গাইলের শাড়ি ভারতের জিআই বলে দাবি করা হচ্ছে।
অর্থনীতির জন্য মেধাস্বত্ব অধিকার (আইপিআর) সুরক্ষা ও এ–সংক্রান্ত আইনের প্রয়োগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করে দেবপ্রিয় বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে এবং রপ্তানি সম্প্রসারণে ইতিবাচক পরিবেশ তৈরিতে এটি ভূমিকা রাখে। বিশ্বের বড় প্রতিষ্ঠানগুলো বিনিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাস্বত্ব আইনকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।
এই গবেষক জানান, গত ১৩–১৭ মে সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায় এক কর্মশালায় সুন্দরবনের মধুকে ভারতের জিআই পণ্য হিসেবে তুলে ধরে টুইট করা হয়। এরপর বিষয়টি সিপিডির নজরে আসে। অথচ ভারতের চেয়ে বেশি পরিমাণ মধু বাংলাদেশে তৈরি হয়।
দেবপ্রিয় সতর্ক করে বলেন, মধুর বাজারে আগামীতে প্রতিযোগিতা কঠিন হবে। জিআই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরেও বাজারে প্রতিযোগিতা করতে কষ্ট হবে। ভারতের বাজার অনেক বড়। তাদের উৎপাদন খরচও অনেক কম হয়। সার্ভে করে দেশের যেগুলো পণ্য আছে, তা জিআইয়ের অধীনে আনার জন্য অতিসত্বর কার্যক্রম হাতে নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সূত্রঃ দ্য ফাইন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেস
এম.কে
২৮ জুন ২০২৪